খুলনায় পায়ুপথে মেশিন দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে শিশু হত্যা, আটক ৩
(রেডিও তেহরান): খুলনায়
পায়ুপথে কমপ্রেসার মেশিনের পাইপের মাধ্যমে হাওয়া ঢুকিয়ে এক শিশুকে হত্যা
করেছে মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গ্যারেজ মালিকসহ
তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনগণ।
সোমবার রাত ১০টার দিকে নগরীর টুটপাড়া
সেন্ট্রাল রোড়ে এই ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের শিকার রাকিব টুটপাড়া সেন্ট্রাল
রোডের দিনমজুর আলম হাওলাদারের ছেলে। সিলেটের রাজন হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে
তোলপাড়ের মধ্যেই এই বর্বরোচিত ঘটনা ঘটল।
খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকুমার
বিশ্বাস জানান, রাকিব নামে ১৪ বছরের এক কিশোর টুটপাড়াস্থ শরীফ মোটরসাইকেল
গ্যারেজ কাজ করত। হঠাৎ সে কাজ ছেড়ে অন্য গ্যারেজে কাজ নেয়। সোমবার রাত
১০টার দিকে রাকিব তার পুরনো কর্মস্থলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় গ্যারেজ
মালিক শরীফ ও তার ভাই মিন্টু ‘চাকরি ছেড়ে দেয়ার অপরাধে’ রাকিবকে আটক করে।
এরপর তারা তাকে বিবস্ত্র করে মোটর টায়ারে পাম্প দেয়া মেশিনের পাইপ পায়ুপথে
ঢুকিয়ে হাওয়া দেয়। শরীরে অস্বাভাবিক পরিমাণ বাতাস প্রবেশ করানোর কারণে তার
পেটের নাড়িভুড়ি ছিড়ে যায়, ফুসফুস ফেটে যায়। এছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন
অর্গান অকেজো হয়ে যাওয়ার কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে রাকিব। অবস্থা গুরুতর
দেখে নির্যাতনকারীরা রাকিবের শরীরের বিভিন্ন অংশে চাপ প্রয়োগ করে বাতাস
বের করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। উপায়ন্তর না দেখে রাকিবকে একটি প্রাইভেট
ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায়
পাঠানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ঢাকায় নেয়ার পথে রাত ২টার দিকে সে মারা
যায়।
রাকিবের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার তার ময়নাতদন্ত করা হবে।
পুলিশ নিহত রাকিবের বয়স ১৪ বছর বলেছে, তবে পরিবার থেকে রাকিবের বয়স ১২ বছর বলে জানানো হয়।
এই সময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আশপাশের
মানুষ গ্যারেজ মালিক মিন্টু তার ভাই শরীফকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিন্টুর মা বিউটি বেগমকেও পুলিশ আটক করে থানায়
নিয়ে যায়।
নির্যাতনের সময় বিউটি বেগম উপস্থিত থাকলেও তিনি শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে যাননি বলে জানান খুলনা সদর থানার ওসি।
বর্তমানে গ্যারেজ মালিক শরীফ ও তার ভাই মিন্টুকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।#
রেডিও তেহরান/এআর/৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন