বন্যার্তদের পাশে নেই সরকার - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০১৫

বন্যার্তদের পাশে নেই সরকার

দিনকাল রিপোর্ট : টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের দিন কাটছে চরম দুর্ভোগে। ত্রাণ ও ওষুধের জন্য প্রতিদিন হাহাকার করছেন লাখ লাখ মানুষ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও স্থানীয় পর্যায়ের সহায়তাই তাদের সম্বল। এখনও পর্যন্ত সরকারি সহায়তা লক্ষ্য করা যায়নি। সরকার পাশে না থাকায় বন্যাদুর্গত মানুষের হাহাকার কাটছে না। মিলছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ ও ওষুধ। অথচ প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। : আমাদের কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অবিরাম বৃষ্টি, কপোতাক্ষ ও হরিহর নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌর শহরসহ উপজেলার প্রায় ৮০টি গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে অসংখ্য রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভেসে গেছে সহস্রাধিক মৎস্য ঘের, হুমকির মুখে রয়েছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। পানিবন্দী  মানুষেরা তাদের পরিবার পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত  বন্যাকবলিত এলাকায় কোনো আশ্রয় কেন্দ্র ও সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়নি। : কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি, কপোতাক্ষ ও হরিহর নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌরসভার শাহাপাড়া, হাবাসপোল, মধ্যকুলসহ উপজেলার ফতেপুর, আওলগাতী, শুড়িঘাটা, বগা, চাদড়া, সরসকাটি, ত্রিমোহিনী, মির্জাপুর, কোমরপোল, গোবিন্দপুর, শেখপুরা, চিংড়া, নেহালপুর, রেজাকাটি, সাগরদাড়ী,  ত্রিমোহিনী, পাজিয়া, আড়–য়া, নারানপুর, ডহুরী, কালীচরনপুর, কাটাখালী, ভরতভায়না, আগরহাটি ও বরনডালীসহ প্রায় ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে শুড়িঘাটা ও ত্রিমোহিনী বাজার। অতিবর্ষণে ইতিমধ্যে বগা, নেহালপুর, রেজাকাটি, চাদড়া, সরসকাটি, বরণডালী, ত্রিমোহিনী ও মধ্যকুল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাহাপাড়া খ্রিস্টান মিশনারী স্কুলসহ ১০টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মধ্যকুল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে মেঝে ধসে পড়েছে। এছাড়া, কপোতাক্ষ  নদের পানি ২/৩ ফুট বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে স্থানীয় পাউবো অফিস সূত্রে জানা গেছে। কপোতাক্ষ  নদের উজানের পানিতে পাজাখোলা থেকে শুড়িঘাটা  গ্রামরক্ষা বাঁধের প্রায় ৪০ কিঃ মিঃ বাঁধে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধ উপচে পানি আশ-পাশের গ্রাম অঞ্চলে ঢুকে যাচ্ছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে এলাকার ১ হাজার ২২৮টি মৎস্য ঘের ও পুকুরের মাছ। : কেশবপুরের বিশিষ্ট ঘের ব্যবসায়ী আসাদ বলেন, কেশবপুর উপজেলায় প্রায় ৪ সহস্র্রাধিক মাছের ঘের রয়েছে। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির ফলে দেড় হাজারের মত ঘের পানিতে তলিয়ে গেলেও বাকি ঘেরের মাছ ঠেকানোর জন্য নেট (জাল) দিয়ে রক্ষা করা হয়েছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ঘেরের মাছ ধরে রাখা সম্ভব হবে না। মধ্যকুল গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৫/২০ দিন পানিবন্দী হয়েও শত কষ্ট সহ্য করে বাপ-দাদার ভিটে আঁকড়ে পড়ে আছি। আমরা কেমন আছি কেউ কোনো খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। ঐ গ্রামের গৃহবধূ নাহার বেগম বলেন, সবকিছুইতো শেষ, কি করবো, ভেবে পাচ্ছি না। কেশবপুর উপজেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড. আবুবক্কর সিদ্দিকী জানান, নদী খনন না করা এবং পাউবোর অপরিকল্পিত ভাবে বাঁধ নির্মাণের ফলে কেশবপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। : এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যে ১ হাজার ২২৮টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিপুল কুমার মালাকার জানান, অতি বর্ষণে উপজেলা সদরসহ ৬২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। : বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি : আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বন্যার্তরা। তবে অধিকাংশ এলাকা এখনো পানির নিচে থাকায় প্লাবিত এলাকার অনেকেই এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। বেশিরভাগ টিউবওয়েলগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। অব্যাহত বর্ষণে বান্দরবান-কেরানীহাট চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের বরদুয়ারা এলাকায় সড়কে ৪-৫ ফুট বন্যার পানি জমে, এছাড়া বান্দরবানের সুয়ালকে সেতু দেবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিকল্প বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করায় ও পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় সকাল থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। তবে বান্দরবানের বসন্ত পাড়ায় ২০০ মিটার সড়ক ধসে যাওয়ায় এখনো বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলা ছাড়াও চিম্বুক নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, বগালেক, কেওক্রাডং, নাফাকুম, বড় পাথরসহ কয়েকটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ আছে। এইসব এলাকায় বসবাসকারীরা বিকল্প হিসেবে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীপথে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।  ৩ বারের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলা সদরসহ লামা ও আলিকদমে এই পর্যন্ত ৯জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। : উপকূল জুড়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবন, আতঙ্কে মানুষ :  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার পুরো উপকূল অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে প্লাবিত হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাপটায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো ফের রাতের জোয়ারের আতঙ্কে রয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার জোয়ারের পানির উচ্চতা অনেক বেশি। মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে এক ধরনের জলোচ্ছ্বাস আতঙ্ক। এর সাথে চলছে মুষলধারে বৃষ্টি। : সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের বাইরের হাজারো বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাদি জমি সব ডুবে যায়। ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ। শনিবার থেকে টানা অস্বাভিক চার ঘন্টার জলোচ্ছ্বাসে মানুষের অর্বর্ণনীয় দুর্ভোগের পাশাপাশি হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে কলাপাড়া উপজেলার লালুয়ার ইউনিয়নের চারিপাড়াসহ ১৩টি গ্রাম এবং মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুরসহ পাঁচটি গ্রাম। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় প্রবলবেগে জোয়ারের পানিতে মুহূর্তে সেখানকার মানুষের বাড়িঘর পর্যন্ত ডুবে যায়। লালুয়ার ইউনিয়নের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা জলোচ্ছ্বাসে ডুবে যায়। একই অবস্থা মহিপুর ইউনিয়নের। এসব গ্রামের কোনো মানুষের চাল-চুলা পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা থেকে রক্ষা পায়নি। : প্লাবিত গ্রামের জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু মিঠাগঞ্জ, বালিয়াতলী, ধুলাসার ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রামের পানি নামতে পারছে না। গাববাড়িয়া ক্লোজার করায় এসব গ্রাম থেকে পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে বন্ধ রয়েছে ১৯টি সøুইসের পানি নামার পথ। ফলে এসব গ্রামের মানুষ স্থায়ীভাবে পানিবন্দী হয়ে আছে। প্লাবিত এসব জনপদের মানুষের এ বছর আমন আবাদ পড়েছে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। অস্বাভাবিক জোয়ারে কুয়াকাটার সাথে সড়ক যোগাযোগ প্রায় পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকে। ফেরির ঘাটগুলো ডুবে থাকায় এমন দশা হয়েছে। কুয়াকাটা সৈকতে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রবল ঝাপটায় ভেঙ্গে গেছে শত শত গাছপালা। : মির্জাগঞ্জে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত : মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, গতকাল রবিবার পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে উপজেলার পায়রা নদীর ৪১/৭ নং পোল্ডারের মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের সুন্দ্রা কলাগাছিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য হাবিব সিকদারের বাড়ির দক্ষিণ পাশ দিয়ে পায়রা নদীর ২৫০ ফুট, পিঁপড়াখালী গ্রামের উত্তর ইসলামাবাদ দাখিল মাদ্রসাার সামনে থেকে প্রায় ৭০০ ফুটসহ মোট ৯৫০ ফুট পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে স্রোতের তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। ফলে পিঁপড়াখালী, সুন্দ্রা, কলাগাছিয়া ও কালিকাপুর গ্রামটি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কয়েকহাজার আউশ ও আমনের বীজতলা ডুবে গেছে। অনেক পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। জোয়ারের সময় নিম্নাঞ্চল ও বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসকারী মানুষের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ে। পিঁপড়াখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের বাইরে আশ্রয় নেয়া শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার শ্রীমন্ত নদীর দক্ষিণ ও উত্তর পাড়ের প্রায় দুই সহাস্রাধিক বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। একই পোল্ডারের ঝুঁকির্পূর্ণ বাঁধ থাকায় দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের মেন্দিয়াবাদ গ্রামের মানুষ রয়েছে ঝুঁকিতে। পায়রা নদী তীরবর্তী হওয়ার কারণে পিঁপড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দ্রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মির্জাগঞ্জ দরগাহ শরীফ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। এদিকে উপজেলার মির্জাগঞ্জ থানার পিছনে শ্রীমন্ত নদীর ভাঙ্গা ব্লক দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। : কলারোয়ায় টানা বর্ষণ, পানিতে নিমজ্জিত স্কুল-মাদরাসা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : কলারোয়া (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা জানান, একটানা বর্ষণে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে স্কুল-মাদরাসা-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাড়িঘরসহ কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি। বর্ষা মৌসুম আসলেই যেন কলারোয়ার জনপদ হুমকিতে পড়ে পানিবন্দী হয়ে পড়ার ভয়ে। শুধু ভয়-ই নয়, রীতিমত প্রতিবছরের এ সময়ে উপজেলার অনেক এলাকার স্কুল-মাদরাসাসহ বহু ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়ে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই কমবেশি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে স্কুলসহ ফসলি জমি কিংবা বসতবাড়ি। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে উপজেলার সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাজনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৌরসদরের বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দেয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ জিয়া দাখিল মাদরাসা, সরসকাটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। : গতকাল শনিবার সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে জানা গেছে, সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠসহ বিদ্যালয়ের নিচতলার বারান্দা কপোতাক্ষের উপচে পড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পানি ভেঙ্গে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে অতি কষ্টে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছে। এমনিভাবে পানির মধ্যে আসা-যাওয়া করতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইবাদুল হক। এদিকে, কলারোয়া পৌরসদরের বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতি বছরের মতো এবারও টানা বর্ষণে বিদ্যালয়ের মাঠসহ যাওয়া আসার রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। পানিতে রাস্তাটি ডুবে যাওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত ভিজতে হচ্ছে। আর এজন্য অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাছাড়া, বিদ্যালয় মাঠ পানিবন্দী থাকায় বছরের প্রায় ৬ মাস ছাত্র সমাবেশ কিংবা খেলাধুলাসহ অন্যান্য কাজ কর্মে দারুণ অসুবিধা হয়। : এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল স্থানীয় সংসদ সদস্য, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। : চকরিয়া ও পেকুয়ায় উপকূলের ৭ ইউনিয়ন এখনো নিমজ্জিত : চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেনর প্রভাব ও তার ওপর টানা ভারী বর্ষণে পাহাড়ি বন্যায় চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। গতকাল রবিবার ভোররাত থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দু উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। : জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, তবে বদরখালী, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, পশ্চিমবড়ভেওলা, পূর্ববড়ভেওলা ও চিরিঙ্গা  ইউনিয়নে ৯০ ভাগ ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নে বেঢ়িবাঁধের ভাঙ্গন দিয়ে জোয়ার-ভাটা চলছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ইউনিয়নগুলোতে অনেকটা মানবিক বিপর্যয় ঘটছে। নাওয়া-খাওয়া নেই লক্ষাধিক মানুষের মুখে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হলেও তা অপ্রতুল বলে জানান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। : পাইকগাছায় কপিলমুনি বাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত : পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, খুলনার পাইকগাছায় নিম্নচাপের প্রভাবে কপোতাক্ষ-শিবসাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর উপচে পড়া পানিতে কপিলমুনি বাজার ও পাইকগাছার পৌর বাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম ও ব্যবসায়ী লেনদেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনের সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেন দুর্বল হয়ে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে ভরা পূর্ণিমায় শুক্রবার থেকে কপোতাক্ষ-শিবসাসহ এলাকার নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পায়। ফলে শনিবার সকালে কপোতাক্ষ-শিবসার জোয়ারের উপচে পড়া পানিতে কপিলমুনি বাজার, কাশিমনগর বাজার, আগড়ঘাটা বাজার ও পৌর বাজারের কাঁচা বাজার, কাপড় পট্টি, কাঁকড়া মার্কেট, চিংড়ি বিপণন মার্কেটসহ বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় সকল ব্যবসায়ী কার্যক্রম বলে জানান ব্যবসায়ী বাপ্পী হালদার। : মনপুরায় পূর্ণিমার জোয়ারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত :  ভোলা প্রতিনিধি জানান, মনপুরায় পুর্ণিমার জো’তে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়ি বাঁধের বাইরের ঘর-বাড়িসহ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। মনপুরা ফিসারিজের বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ভিতরে প্রবেশ করায় কয়েক লাখ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। : জানা গেছে, বাতাসের গতি বেড়ে যাওয়ায় মেঘনায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজ্ঞান, চরযতিন, দাসের হাট ও চর মরিয়ম গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ বসতঘর ডুবে গেছে। মানুষের পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। ভিটে ডুবে যাওয়ায় রান্নাবান্না করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বেড়িবাঁধের বাইরে চরজ্ঞান গ্রামে বসবাসরত আংকুরা, জয়নব বেগম বলেন, জোয়ার আসলে আমাদের ঘর ডুবে যায়। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। চরযতিন গ্রামের বাসিন্দা এবং মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, জোয়ার আসলে আতঙ্কে থাকি। এ সময় বাড়ি যেতে এবং বাড়ি থেকে বের হতে গলা সমান পানি ভেদ করতে হয়। এটা যে কতটা কষ্টের অভিজ্ঞতা তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানেন। : একইভাবে মনপুরা ইউনিয়নে অবস্থিত রামনেওয়াজ বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ জানান, জোয়ার আসলে বাজারের মধ্যে দেড়-দুই ফুট পানি থাকে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জোয়ারের পানি অহরহ প্রবেশ করে বাজারসহ পার্শ¦বর্তী গ্রামের বেশ কিছু ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কলাতলী এবং চরনিজামের হাজারো মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বেড়িবাঁধ না থাকায় মানুষের সকল ঘর-বাড়ি পানির নিচে। জোয়ার আসলে চরের এসব অবহেলিত মানুষ ঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়। ভাটার টানে পানি সরে গেলে মানুষ আবার ঘর-বাড়িতে ফিরে আসে। জোয়ার-ভাটার এই লুকোচুরি খেলায় রান্নাবান্না করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তাদের। বেশির ভাগ সময় ঘর ভেজা থাকায় আবাসস্থলই এখন থাকার অনুপযোগী। একই অবস্থা চরনিজামের মানুষেরও। তাদের দুর্ভোগ যেন নিত্যসঙ্গী। গত ৩ দিন ধরে এহেন বিভীষিকাময় অবস্থা বিরাজ করছে। বর্তমানে মনপুরার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজ্ঞান, চরযতিন, দাসের হাট, চর মরিয়ম এবং রামনেওয়াজের আন্দির পাড়, মাছুয়াখালী গ্রামগুলো জোয়ারের পানিতে থৈ থৈ করছে। উল্লেখিত এলাকাগুলোসহ বিচ্ছিন্ন কলাতলীর চর এবং চরনিজামের প্রায় ৫ সহস্রাধিক মানুষ বর্তমানে প্রতিদিনই দুইবার করে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে। জোয়ারের পানির তোড়ে বেশ কয়েকটি ঘর পড়ে গেছে বলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ছালাউদ্দিন জানান। : এদিকে গত ১ আগস্ট শনিবার বিকেলের জোয়ারে মনপুরার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান মনপুরা ফিসারীজ লিঃ এর মধ্যের বাঁধ ভেঙে জোয়ার প্রবেশ করে বেশ কয়েকটি পুকুর ডুবে গেছে। এতে করে ঘেরের মাছ জোয়ারের পানিতে চলে যাওয়ায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মনপুরা ফিসারিজ লিঃ এর স্বত্বাধিকারী আলহাজ শামস উদ্দিন বাচ্চু চৌধুরী জানান। : মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় মানুষের এই দুর্ভোগ। বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা বিভিন্ন দফতরে তদবির করে যাচ্ছি। বেড়িবাঁধ নির্মিত হলে এই সমস্যা থাকবে না। : উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন খাঁন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য এখনো কোনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ আসলে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান। : উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মিসেস সেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, কলাতলীর চর এবং চরনিজামে প্রয়োজন অনুযায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগী মানুষের এহেন দুর্ভোগ অচিরেই লাঘব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। : ডুমুরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টপকে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত : ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনার ডুমুরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভদ্রা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ গত ২৪ ঘন্টায় ভেঙ্গেছে আরও ৫০ ফুট। শনিবার যেখানে বাঁধ ভাঙ্গা ছিল ২০০ ফুট সেখানে গতকাল রবিবার বিকাল পর্যন্ত আরও ৫০ ফুট বেড়ি বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ৪০/৫০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। সে সব গ্রামের শত শত পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচুরাস্তা, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। এ ছাড়া আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদী ভাঙ্গন অথবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে গতকাল রবিবার বেশি ক্ষতি হয়েছে উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নে। এখানে ভদ্রা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে চুকনগর-খুলনা মহাসড়কের ১ থেকে ২ ফুট উঁচু হয়ে পানি ঢুকেছে প্লাবিত হয়েছে চাকুন্দিয়া গোবিন্দকাঠী, মঠবাড়িসহ ৮/১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। হু হু করে পানি ঢুকে ভেসে গেছে হাজার হাজার হেক্টর মৎস্য ঘের। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। রোস্তমপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী ভদ্রানদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০ ফুট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া জোয়ারের সময় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩/৪ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে সয়লাব হয়ে গেছে রোস্তমপুর, নরনিয়া, মালতিয়া, আটলিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের পুকুর, ফসলের ক্ষেত, মৎস্য ঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানেও বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে সেসব পরিবার। মানুষের উঠানে পানি প্রবেশ করেছে। মানবেতর জীবন যাপন করছে এ সব গ্রামের লোকজন। ভদ্রা নদীর পার্শ্ববর্তী খর্নিয়া- শোলগাতিয়া সড়কের অবস্থাও আশংকাজনক। রাস্তার মূল অংশ আগেই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, এখন যেকোন মুহূর্তে রাস্তা ভেঙ্গে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন খর্নিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন দিদার। গতকাল রবিবার বিকালে রোস্তমপুরের নদী ভাঙ্গন ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান আলী মুনসুর। এ সময় তার সাথে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান শিরিনা দৌলত এবং আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ বদরুজ্জামান তসলিম। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। তবে নদীর পানি কম না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। : বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়েছে সাড়ে সাতশত বিঘা সবজি ক্ষেত : বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, জলাবদ্ধতার শিকার ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটে ২ হাজার ১শ বিঘার বীজতলা ও সাড়ে ৭শ বিঘা সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনতো দূরের কথা সব হারিয়ে  মানবেতর জীবন-যাপন করছে জেলার হাজার হাজার প্রান্তিক চাষী। বাগেরহাট জেলার প্রায় ১৫ লাখ বিঘা জমিতে আমন চাষ ব্যাহত হবে বলে আশংকা চাষিদের। এছাড়া প্রায় সাড়ে সাত শ বিঘা জমির সবজি চাষ বৃষ্টির পানি, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে নষ্ট হওয়ার কারণে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক লোন  করে সবজির চাষ করা এসব চাষীও এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। আর সবজি ক্ষেত করা অনেক চাষী এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছেন। আর এ পরিমাণ জমির  বীজ তলা ও সবজি নষ্ট হওয়ার কারণে জেলার চাষীদের প্রায় দেড় কোটি  টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রশারন অধিদফতর (খামারবাড়ী) কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। : বাগেরহাট সদরের বারুইপাড়া এলাকার সবজি চাষি আবুল কালাম  বলেন, গত বছর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে করলা, লাউ, শসা, কুমড়া, বরবটি, কাকরোল, বেগুনসহ বিভিন্ন  প্রকার সবজির চাষ করেছিলাম। তাতে ভালোই লাভ হয়েছিল। এবার টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ক্ষেতের সবজি এখন পানির নিচে থাকায় লাভ তো দূরের কথা এনজিওর ঋণও পরিশোধ করতে পারবো না। : অপরদিকে চলতি বছরের আমন মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে জেলার  ২ হাজার ১শ বিঘা জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ও সবজিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রশারন অধিদফতর (খামারবাড়ী) সূত্রে জানা গেছে। আর এ পরিমাণ ক্ষতির শিকার হয়ে বাগেরহাট সদরসহ উপজেলার ধান চাষিরা এখন সর্বস্বান্ত। এ অবস্থায় জেলার অনেক চাষি এখন পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। আর কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি সত্ত্বেও সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের ত্রাণ বা সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলাবদ্ধতার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত অনেক চাষী। : বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (খামারবাড়ী) উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মলিক বলেন, টানা বর্ষণ, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে জেলার সাড়ে সাতশ বিঘা জমির সবজি ক্ষেত ও ২ হাজার ১শ বিঘার  বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারণে জেলার  হাজার হাজার প্রান্তিক চাষি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে হিসাব করলে জেলার সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। :

দিনকাল রিপোর্ট : টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের দিন কাটছে চরম দুর্ভোগে। ত্রাণ ও ওষুধের জন্য প্রতিদিন হাহাকার করছেন লাখ লাখ মানুষ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও স্থানীয় পর্যায়ের সহায়তাই তাদের সম্বল। এখনও পর্যন্ত সরকারি সহায়তা লক্ষ্য করা যায়নি। সরকার পাশে না থাকায় বন্যাদুর্গত মানুষের হাহাকার কাটছে না। মিলছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ ও ওষুধ। অথচ প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। : আমাদের কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অবিরাম বৃষ্টি, কপোতাক্ষ ও হরিহর নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌর শহরসহ উপজেলার প্রায় ৮০টি গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে অসংখ্য রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভেসে গেছে সহস্রাধিক মৎস্য ঘের, হুমকির মুখে রয়েছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। পানিবন্দী  মানুষেরা তাদের পরিবার পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত  বন্যাকবলিত এলাকায় কোনো আশ্রয় কেন্দ্র ও সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়নি। : কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি, কপোতাক্ষ ও হরিহর নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌরসভার শাহাপাড়া, হাবাসপোল, মধ্যকুলসহ উপজেলার ফতেপুর, আওলগাতী, শুড়িঘাটা, বগা, চাদড়া, সরসকাটি, ত্রিমোহিনী, মির্জাপুর, কোমরপোল, গোবিন্দপুর, শেখপুরা, চিংড়া, নেহালপুর, রেজাকাটি, সাগরদাড়ী,  ত্রিমোহিনী, পাজিয়া, আড়–য়া, নারানপুর, ডহুরী, কালীচরনপুর, কাটাখালী, ভরতভায়না, আগরহাটি ও বরনডালীসহ প্রায় ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে শুড়িঘাটা ও ত্রিমোহিনী বাজার। অতিবর্ষণে ইতিমধ্যে বগা, নেহালপুর, রেজাকাটি, চাদড়া, সরসকাটি, বরণডালী, ত্রিমোহিনী ও মধ্যকুল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাহাপাড়া খ্রিস্টান মিশনারী স্কুলসহ ১০টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মধ্যকুল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে মেঝে ধসে পড়েছে। এছাড়া, কপোতাক্ষ  নদের পানি ২/৩ ফুট বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে স্থানীয় পাউবো অফিস সূত্রে জানা গেছে। কপোতাক্ষ  নদের উজানের পানিতে পাজাখোলা থেকে শুড়িঘাটা  গ্রামরক্ষা বাঁধের প্রায় ৪০ কিঃ মিঃ বাঁধে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধ উপচে পানি আশ-পাশের গ্রাম অঞ্চলে ঢুকে যাচ্ছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে এলাকার ১ হাজার ২২৮টি মৎস্য ঘের ও পুকুরের মাছ। : কেশবপুরের বিশিষ্ট ঘের ব্যবসায়ী আসাদ বলেন, কেশবপুর উপজেলায় প্রায় ৪ সহস্র্রাধিক মাছের ঘের রয়েছে। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির ফলে দেড় হাজারের মত ঘের পানিতে তলিয়ে গেলেও বাকি ঘেরের মাছ ঠেকানোর জন্য নেট (জাল) দিয়ে রক্ষা করা হয়েছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ঘেরের মাছ ধরে রাখা সম্ভব হবে না। মধ্যকুল গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৫/২০ দিন পানিবন্দী হয়েও শত কষ্ট সহ্য করে বাপ-দাদার ভিটে আঁকড়ে পড়ে আছি। আমরা কেমন আছি কেউ কোনো খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। ঐ গ্রামের গৃহবধূ নাহার বেগম বলেন, সবকিছুইতো শেষ, কি করবো, ভেবে পাচ্ছি না। কেশবপুর উপজেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড. আবুবক্কর সিদ্দিকী জানান, নদী খনন না করা এবং পাউবোর অপরিকল্পিত ভাবে বাঁধ নির্মাণের ফলে কেশবপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। : এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যে ১ হাজার ২২৮টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিপুল কুমার মালাকার জানান, অতি বর্ষণে উপজেলা সদরসহ ৬২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। : বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি : আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বন্যার্তরা। তবে অধিকাংশ এলাকা এখনো পানির নিচে থাকায় প্লাবিত এলাকার অনেকেই এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। বেশিরভাগ টিউবওয়েলগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। অব্যাহত বর্ষণে বান্দরবান-কেরানীহাট চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের বরদুয়ারা এলাকায় সড়কে ৪-৫ ফুট বন্যার পানি জমে, এছাড়া বান্দরবানের সুয়ালকে সেতু দেবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিকল্প বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করায় ও পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় সকাল থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। তবে বান্দরবানের বসন্ত পাড়ায় ২০০ মিটার সড়ক ধসে যাওয়ায় এখনো বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলা ছাড়াও চিম্বুক নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, বগালেক, কেওক্রাডং, নাফাকুম, বড় পাথরসহ কয়েকটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ আছে। এইসব এলাকায় বসবাসকারীরা বিকল্প হিসেবে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীপথে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।  ৩ বারের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলা সদরসহ লামা ও আলিকদমে এই পর্যন্ত ৯জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। : উপকূল জুড়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবন, আতঙ্কে মানুষ :  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার পুরো উপকূল অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে প্লাবিত হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাপটায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো ফের রাতের জোয়ারের আতঙ্কে রয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার জোয়ারের পানির উচ্চতা অনেক বেশি। মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে এক ধরনের জলোচ্ছ্বাস আতঙ্ক। এর সাথে চলছে মুষলধারে বৃষ্টি। : সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের বাইরের হাজারো বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাদি জমি সব ডুবে যায়। ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ। শনিবার থেকে টানা অস্বাভিক চার ঘন্টার জলোচ্ছ্বাসে মানুষের অবর্র্ণনীয় দুর্ভোগের পাশাপাশি হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে কলাপাড়া উপজেলার লালুয়ার ইউনিয়নের চারিপাড়াসহ ১৩টি গ্রাম এবং মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুরসহ পাঁচটি গ্রাম। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় প্রবলবেগে জোয়ারের পানিতে মুহূর্তে সেখানকার মানুষের বাড়িঘর পর্যন্ত ডুবে যায়। লালুয়ার ইউনিয়নের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা জলোচ্ছ্বাসে ডুবে যায়। একই অবস্থা মহিপুর ইউনিয়নের। এসব গ্রামের কোনো মানুষের চাল-চুলা পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা থেকে রক্ষা পায়নি। : প্লাবিত গ্রামের জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু মিঠাগঞ্জ, বালিয়াতলী, ধুলাসার ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রামের পানি নামতে পারছে না। গাববাড়িয়া ক্লোজার করায় এসব গ্রাম থেকে পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে বন্ধ রয়েছে ১৯টি সøুইসের পানি নামার পথ। ফলে এসব গ্রামের মানুষ স্থায়ীভাবে পানিবন্দী হয়ে আছে। প্লাবিত এসব জনপদের মানুষের এ বছর আমন আবাদ পড়েছে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। অস্বাভাবিক জোয়ারে কুয়াকাটার সাথে সড়ক যোগাযোগ প্রায় পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকে। ফেরির ঘাটগুলো ডুবে থাকায় এমন দশা হয়েছে। কুয়াকাটা সৈকতে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রবল ঝাপটায় ভেঙ্গে গেছে শত শত গাছপালা। : মির্জাগঞ্জে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত : মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, গতকাল রবিবার পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে উপজেলার পায়রা নদীর ৪১/৭ নং পোল্ডারের মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের সুন্দ্রা কলাগাছিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য হাবিব সিকদারের বাড়ির দক্ষিণ পাশ দিয়ে পায়রা নদীর ২৫০ ফুট, পিঁপড়াখালী গ্রামের উত্তর ইসলামাবাদ দাখিল মাদ্রসাার সামনে থেকে প্রায় ৭০০ ফুটসহ মোট ৯৫০ ফুট পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে স্রোতের তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। ফলে পিঁপড়াখালী, সুন্দ্রা, কলাগাছিয়া ও কালিকাপুর গ্রামটি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কয়েকহাজার আউশ ও আমনের বীজতলা ডুবে গেছে। অনেক পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। জোয়ারের সময় নিম্নাঞ্চল ও বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসকারী মানুষের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ে। পিঁপড়াখালী গ্রামের বেড়িবাঁধের বাইরে আশ্রয় নেয়া শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার শ্রীমন্ত নদীর দক্ষিণ ও উত্তর পাড়ের প্রায় দুই সহাস্রাধিক বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। একই পোল্ডারের ঝুঁকিপূর্র্ণ বাঁধ থাকায় দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের মেন্দিয়াবাদ গ্রামের মানুষ রয়েছে ঝুঁকিতে। পায়রা নদী তীরবর্তী হওয়ার কারণে পিঁপড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দ্রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মির্জাগঞ্জ দরগাহ শরীফ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। এদিকে উপজেলার মির্জাগঞ্জ থানার পিছনে শ্রীমন্ত নদীর ভাঙ্গা ব্লক দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। : কলারোয়ায় টানা বর্ষণ, পানিতে নিমজ্জিত স্কুল-মাদরাসা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : কলারোয়া (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা জানান, একটানা বর্ষণে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে স্কুল-মাদরাসা-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাড়িঘরসহ কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি। বর্ষা মৌসুম আসলেই যেন কলারোয়ার জনপদ হুমকিতে পড়ে পানিবন্দী হয়ে পড়ার ভয়ে। শুধু ভয়-ই নয়, রীতিমত প্রতিবছরের এ সময়ে উপজেলার অনেক এলাকার স্কুল-মাদরাসাসহ বহু ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়ে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই কমবেশি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে স্কুলসহ ফসলি জমি কিংবা বসতবাড়ি। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে উপজেলার সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাজনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৌরসদরের বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দেয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ জিয়া দাখিল মাদরাসা, সরসকাটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। : গতকাল শনিবার সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে জানা গেছে, সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠসহ বিদ্যালয়ের নিচতলার বারান্দা কপোতাক্ষের উপচে পড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পানি ভেঙ্গে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে অতি কষ্টে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছে। এমনিভাবে পানির মধ্যে আসা-যাওয়া করতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইবাদুল হক। এদিকে, কলারোয়া পৌরসদরের বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতি বছরের মতো এবারও টানা বর্ষণে বিদ্যালয়ের মাঠসহ যাওয়া আসার রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। পানিতে রাস্তাটি ডুবে যাওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত ভিজতে হচ্ছে। আর এজন্য অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাছাড়া, বিদ্যালয় মাঠ পানিবন্দী থাকায় বছরের প্রায় ৬ মাস ছাত্র সমাবেশ কিংবা খেলাধুলাসহ অন্যান্য কাজ কর্মে দারুণ অসুবিধা হয়। : এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল স্থানীয় সংসদ সদস্য, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। : চকরিয়া ও পেকুয়ায় উপকূলের ৭ ইউনিয়ন এখনো নিমজ্জিত : চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেনর প্রভাব ও তার ওপর টানা ভারী বর্ষণে পাহাড়ি বন্যায় চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। গতকাল রবিবার ভোররাত থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দু উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। : জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, তবে বদরখালী, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, পশ্চিমবড়ভেওলা, পূর্ববড়ভেওলা ও চিরিঙ্গা  ইউনিয়নে ৯০ ভাগ ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নে বেঢ়িবাঁধের ভাঙ্গন দিয়ে জোয়ার-ভাটা চলছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ইউনিয়নগুলোতে অনেকটা মানবিক বিপর্যয় ঘটছে। নাওয়া-খাওয়া নেই লক্ষাধিক মানুষের মুখে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হলেও তা অপ্রতুল বলে জানান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। : পাইকগাছায় কপিলমুনি বাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত : পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, খুলনার পাইকগাছায় নিম্নচাপের প্রভাবে কপোতাক্ষ-শিবসাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর উপচে পড়া পানিতে কপিলমুনি বাজার ও পাইকগাছার পৌর বাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম ও ব্যবসায়ী লেনদেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনের সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেন দুর্বল হয়ে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে ভরা পূর্ণিমায় শুক্রবার থেকে কপোতাক্ষ-শিবসাসহ এলাকার নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পায়। ফলে শনিবার সকালে কপোতাক্ষ-শিবসার জোয়ারের উপচে পড়া পানিতে কপিলমুনি বাজার, কাশিমনগর বাজার, আগড়ঘাটা বাজার ও পৌর বাজারের কাঁচা বাজার, কাপড় পট্টি, কাঁকড়া মার্কেট, চিংড়ি বিপণন মার্কেটসহ বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় সকল ব্যবসায়ী কার্যক্রম বলে জানান ব্যবসায়ী বাপ্পী হালদার। : মনপুরায় পূর্ণিমার জোয়ারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত :  ভোলা প্রতিনিধি জানান, মনপুরায় পুর্ণিমার জো’তে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়ি বাঁধের বাইরের ঘর-বাড়িসহ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। মনপুরা ফিসারিজের বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ভিতরে প্রবেশ করায় কয়েক লাখ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। : জানা গেছে, বাতাসের গতি বেড়ে যাওয়ায় মেঘনায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজ্ঞান, চরযতিন, দাসের হাট ও চর মরিয়ম গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ বসতঘর ডুবে গেছে। মানুষের পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। ভিটে ডুবে যাওয়ায় রান্নাবান্না করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বেড়িবাঁধের বাইরে চরজ্ঞান গ্রামে বসবাসরত আংকুরা, জয়নব বেগম বলেন, জোয়ার আসলে আমাদের ঘর ডুবে যায়। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। চরযতিন গ্রামের বাসিন্দা এবং মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, জোয়ার আসলে আতঙ্কে থাকি। এ সময় বাড়ি যেতে এবং বাড়ি থেকে বের হতে গলা সমান পানি ভেদ করতে হয়। এটা যে কতটা কষ্টের অভিজ্ঞতা তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানেন। : একইভাবে মনপুরা ইউনিয়নে অবস্থিত রামনেওয়াজ বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ জানান, জোয়ার আসলে বাজারের মধ্যে দেড়-দুই ফুট পানি থাকে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জোয়ারের পানি অহরহ প্রবেশ করে বাজারসহ পার্শ¦বর্তী গ্রামের বেশ কিছু ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কলাতলী এবং চরনিজামের হাজারো মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বেড়িবাঁধ না থাকায় মানুষের সকল ঘর-বাড়ি পানির নিচে। জোয়ার আসলে চরের এসব অবহেলিত মানুষ ঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়। ভাটার টানে পানি সরে গেলে মানুষ আবার ঘর-বাড়িতে ফিরে আসে। জোয়ার-ভাটার এই লুকোচুরি খেলায় রান্নাবান্না করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তাদের। বেশির ভাগ সময় ঘর ভেজা থাকায় আবাসস্থলই এখন থাকার অনুপযোগী। একই অবস্থা চরনিজামের মানুষেরও। তাদের দুর্ভোগ যেন নিত্যসঙ্গী। গত ৩ দিন ধরে এহেন বিভীষিকাময় অবস্থা বিরাজ করছে। বর্তমানে মনপুরার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজ্ঞান, চরযতিন, দাসের হাট, চর মরিয়ম এবং রামনেওয়াজের আন্দির পাড়, মাছুয়াখালী গ্রামগুলো জোয়ারের পানিতে থৈ থৈ করছে। উল্লেখিত এলাকাগুলোসহ বিচ্ছিন্ন কলাতলীর চর এবং চরনিজামের প্রায় ৫ সহস্রাধিক মানুষ বর্তমানে প্রতিদিনই দুইবার করে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে। জোয়ারের পানির তোড়ে বেশ কয়েকটি ঘর পড়ে গেছে বলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ছালাউদ্দিন জানান। : এদিকে গত ১ আগস্ট শনিবার বিকেলের জোয়ারে মনপুরার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান মনপুরা ফিসারীজ লিঃ এর মধ্যের বাঁধ ভেঙে জোয়ার প্রবেশ করে বেশ কয়েকটি পুকুর ডুবে গেছে। এতে করে ঘেরের মাছ জোয়ারের পানিতে চলে যাওয়ায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মনপুরা ফিসারিজ লিঃ এর স্বত্বাধিকারী আলহাজ শামস উদ্দিন বাচ্চু চৌধুরী জানান। : মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় মানুষের এই দুর্ভোগ। বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা বিভিন্ন দফতরে তদবির করে যাচ্ছি। বেড়িবাঁধ নির্মিত হলে এই সমস্যা থাকবে না। : উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন খাঁন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য এখনো কোনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ আসলে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান। : উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মিসেস সেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, কলাতলীর চর এবং চরনিজামে প্রয়োজন অনুযায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগী মানুষের এহেন দুর্ভোগ অচিরেই লাঘব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। : ডুমুরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টপকে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত : ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনার ডুমুরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভদ্রা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ গত ২৪ ঘন্টায় ভেঙ্গেছে আরও ৫০ ফুট। শনিবার যেখানে বাঁধ ভাঙ্গা ছিল ২০০ ফুট সেখানে গতকাল রবিবার বিকাল পর্যন্ত আরও ৫০ ফুট বেড়ি বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ৪০/৫০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। সে সব গ্রামের শত শত পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচুরাস্তা, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। এ ছাড়া আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদী ভাঙ্গন অথবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে গতকাল রবিবার বেশি ক্ষতি হয়েছে উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নে। এখানে ভদ্রা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে চুকনগর-খুলনা মহাসড়কের ১ থেকে ২ ফুট উঁচু হয়ে পানি ঢুকেছে প্লাবিত হয়েছে চাকুন্দিয়া গোবিন্দকাঠী, মঠবাড়িসহ ৮/১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। হু হু করে পানি ঢুকে ভেসে গেছে হাজার হাজার হেক্টর মৎস্য ঘের। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। রোস্তমপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী ভদ্রানদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০ ফুট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া জোয়ারের সময় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩/৪ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে সয়লাব হয়ে গেছে রোস্তমপুর, নরনিয়া, মালতিয়া, আটলিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের পুকুর, ফসলের ক্ষেত, মৎস্য ঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানেও বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে সেসব পরিবার। মানুষের উঠানে পানি প্রবেশ করেছে। মানবেতর জীবন যাপন করছে এ সব গ্রামের লোকজন। ভদ্রা নদীর পার্শ্ববর্তী খর্নিয়া- শোলগাতিয়া সড়কের অবস্থাও আশংকাজনক। রাস্তার মূল অংশ আগেই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, এখন যেকোন মুহূর্তে রাস্তা ভেঙ্গে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন খর্নিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন দিদার। গতকাল রবিবার বিকালে রোস্তমপুরের নদী ভাঙ্গন ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান আলী মুনসুর। এ সময় তার সাথে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান শিরিনা দৌলত এবং আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ বদরুজ্জামান তসলিম। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। তবে নদীর পানি কম না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। : বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়েছে সাড়ে সাতশত বিঘা সবজি ক্ষেত : বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, জলাবদ্ধতার শিকার ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটে ২ হাজার ১শ বিঘার বীজতলা ও সাড়ে ৭শ বিঘা সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনতো দূরের কথা সব হারিয়ে  মানবেতর জীবন-যাপন করছে জেলার হাজার হাজার প্রান্তিক চাষী। বাগেরহাট জেলার প্রায় ১৫ লাখ বিঘা জমিতে আমন চাষ ব্যাহত হবে বলে আশংকা চাষিদের। এছাড়া প্রায় সাড়ে সাত শ বিঘা জমির সবজি চাষ বৃষ্টির পানি, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে নষ্ট হওয়ার কারণে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক লোন  করে সবজির চাষ করা এসব চাষীও এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। আর সবজি ক্ষেত করা অনেক চাষী এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছেন। আর এ পরিমাণ জমির  বীজ তলা ও সবজি নষ্ট হওয়ার কারণে জেলার চাষীদের প্রায় দেড় কোটি  টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রশারন অধিদফতর (খামারবাড়ী) কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। : বাগেরহাট সদরের বারুইপাড়া এলাকার সবজি চাষি আবুল কালাম  বলেন, গত বছর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে করলা, লাউ, শসা, কুমড়া, বরবটি, কাকরোল, বেগুনসহ বিভিন্ন  প্রকার সবজির চাষ করেছিলাম। তাতে ভালোই লাভ হয়েছিল। এবার টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ক্ষেতের সবজি এখন পানির নিচে থাকায় লাভ তো দূরের কথা এনজিওর ঋণও পরিশোধ করতে পারবো না। : অপরদিকে চলতি বছরের আমন মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে জেলার  ২ হাজার ১শ বিঘা জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ও সবজিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রশারন অধিদফতর (খামারবাড়ী) সূত্রে জানা গেছে। আর এ পরিমাণ ক্ষতির শিকার হয়ে বাগেরহাট সদরসহ উপজেলার ধান চাষিরা এখন সর্বস্বান্ত। এ অবস্থায় জেলার অনেক চাষি এখন পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। আর কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি সত্ত্বেও সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের ত্রাণ বা সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলাবদ্ধতার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত অনেক চাষী। : বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (খামারবাড়ী) উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মলিক বলেন, টানা বর্ষণ, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে জেলার সাড়ে সাতশ বিঘা জমির সবজি ক্ষেত ও ২ হাজার ১শ বিঘার  বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারণে জেলার  হাজার হাজার প্রান্তিক চাষি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে হিসাব করলে জেলার সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। :
- See more at: http://www.dailydinkal.net/2015/08/03/18352.php#sthash.QQm6M1K1.dpuf
বন্যার্তদের পাশে নেই সরকার
Published : Monday, 3 August, 2015 at 12:00 AM, Update: 02.08.2015 11:22:51 PM
- See more at: http://www.dailydinkal.net/2015/08/03/18352.php#sthash.QQm6M1K1.dpuf
বন্যার্তদের পাশে নেই সরকার
Published : Monday, 3 August, 2015 at 12:00 AM, Update: 02.08.2015 11:22:51 PM
- See more at: http://www.dailydinkal.net/2015/08/03/18352.php#sthash.QQm6M1K1.dpuf
বন্যার্তদের পাশে নেই সরকার
Published : Monday, 3 August, 2015 at 12:00 AM, Update: 02.08.2015 11:22:51 PM
- See more at: http://www.dailydinkal.net/2015/08/03/18352.php#sthash.QQm6M1K1.dpuf

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here