সেক্স এডুকেশান: মেয়েদের রক্তপাত ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি // কনিজ ফাতেমা ছন্দা:redtimesbd24
তখন আমি ছোট, স্কুলে পড়ি। আমার এক আত্মীয়া আমার কাছে অনুযোগ করছিলো, তার পিরিয়ড হয়েছে বলে একদিন নামাজ পড়তে যাচ্ছিলো না অথচ সে প্রতিদিন নামাজ পড়ে। তার মামা তাকে নামাজ পড়তে বলে, সে তখনই পড়তে যায় নি দেখে তাকে জোর করে ওজু করিয়ে জায়নামাজে দাঁড় করিয়ে দিয়ে আসে। বেচারা বারবার বলছিলো, তার নামাজ নেই। সে ভেবেছিলো, তার ডাক্তার মামা এইটুকু ইঙ্গিতেই বুঝে যাবে। আফসোস সেটা হয় নি!
আমি
যখন কেবল সেভেন কী এইটে পড়ি তখনকার ঘটনা, ভার্সিটি পড়ুয়া আমার আরেক
আত্মীয়ার মুখে শোনা। তারই এক বান্ধবী ছোটবেলায় জানতো না পিরিয়ড কী। একদিন
স্কুলে যাবার পথে তার প্রথম রক্তক্ষরণ শুরু হয়, ভয় পেয়ে সে কাঁদছিলো। তার
নিয়মিত রিকশাচালক ঘটনার সুযোগ নেয় এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। মেয়েটা
অনেকদিন পরে বুঝতে পারে তার সাথে কী হয়েছিলো!
ফার্মাসিউটিকালস কোম্পানিতে যখন চাকরি করতাম, বিকেলে নামাজ পড়ে একসাথে নাস্তা করার প্রচলন ছিলো, সবাই সবার কাজের অংশ গুছিয়ে একসাথে ক্যান্টিনে যেতো। এরমাঝে মেয়েরা সবচেয়ে কমন যে প্রশ্ন ফেইস করতো, তা হলো, ‘নামাজ পড়েছো?’
প্রশ্নটা ছেলেরা করলে পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় আমার উত্তর ছিলো, ‘হু’ (মিথ্যা)। আর অন্যরা যারা বলতো, ‘পড়ি নি’, তাদের অবস্থা আরো শোচনীয়। নামাজ পড়া যে উচিত এই নিয়ে উপদেশ আর পড়ে নি বলে কিছুটা ব্যঙ্গ কথাও শুনতেই হতো। দুটোই হয়তো ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে বলা, কিন্তু ঐ যে, যে শুনছে কেবল সে জানে ঐসময় এসব শুনতে কেমন লাগে!
আমার বরকে একদিন বললাম এই কথা। তার উত্তর শুনে আমি কিঞ্চিৎ অবাক। আমাকে বললো, ‘মিথ্যে বলার কী দরকার? বলবে পিরিয়ড চলে, নামাজ পড়া সম্ভব না’। আমি বললাম, ‘জনে জনে বলে বেড়াতে ভালো লাগে না বলেই বলি না, পুরো অফিস জানবে আমার কখন পিরিয়ড চলে, ব্যাপারটা অস্বস্তিকর’। সে বললো, ‘সবাইকে বলবে কেন, যে জানতে চাইবে তাকে বলবে। এরা ফার্মাতে কাজ করা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। একদিন দুইদিন বললে তিনদিনের দিন আর প্রশ্ন করবে না’।
গত রোজায় এক আপু ইনবক্স করলো, ‘আপু ছেলেরা জানে মেয়েরা সব রোজা রাখতে পারে না, তারপরেও কেন এগুলো নিয়ে টিটকারি দেয়? বাসায় দিনের বেলা বাবা-ভাইয়ের থেকে লুকিয়ে পানি খেতে হয়, সেহরিতে খেতে উঠতে হয়, রোজা না থেকেও রক্তক্ষরণের সময় সারাদিন আর কিছু খেতে পারি না কেউ দেখে ফেলার ভয়ে। অথচ ওরা তো জানে পিরিয়ড কী। একইসাথে পড়া ছেলেগুলো রোজা না রাখলে খোঁটা দেয়, জানতে চায় নামাজ পড়েছি কিনা, কোরআন পড়েছি কিনা। না বললে উপদেশ দিতে শুরু করে। আর যদি বলেও দেই, তাহলেও কেমন করে হাসতে থাকে, যখনই দেখে তখনই হাসে!’
আমি যখন সেক্স এডুকেশানের কথা বলি, অনেকে তখন বিরোধিতা করে বলে, এসব শিক্ষা দিয়ে কি পশ্চিমা দেশে ধর্ষণ বন্ধ হয়েছে? না হয় নি, কিন্তু পারিবারিকভাবে লুকোচুরির কারণে আমাদের সন্তানদের মনমানসিকতাও উদার হয় নি। অশিক্ষিত রিকশাচালক হোক কী শিক্ষিত স্কুলপড়ুয়া ছেলে, কী ডাক্তার, কী জীববিজ্ঞান অনুষদের সার্টিফিকেটধারী মেয়েদের শারীরবৃত্তীয় চক্রকে মাথায় রেখে তাদের সাথে আচরণ করার কথা ভুলে যায়।
আমি মানছি, এমন পরিবার এই দেশে আছে যেখানে লুকোচুরির ভেতরেও পরিবারের মেয়ে সন্তানকে কোন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় নি। কিন্তু সেই লুকোচুরির কারণেই ঐ একই পরিবারের ছেলের দ্বারা যে তার কোন অফিস সহকর্মী বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে নি তা কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যায় না!
প্রচণ্ড রক্তপাতের ভেতরেও রোজার আশ্রয় নিয়ে আমাদের অনেক মেয়েরা না খেয়ে একাধারে কাজ করে ক্যান্টিন বয়দের বাঁকা চাউনি আর ফিসফাস থেকে বেঁচে যাবে বলে যে সময়টায় প্রতিটা মেয়ের শরীরে পুষ্টিকর খাবার দেয়া দরকার, সেই সময়টায় অনেকেই তলপেটে অমানুষিক ব্যথা চেপে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ল্যাব করে, ক্লাসের ছেলে বন্ধুরা তাদের গোপন কষ্টের কথা জেনে কোন মেয়ের কখন সাইকেল চলে সেটা নিয়ে হলে আড্ডায় নিজেরা হাসাহাসি করবে এই ভয়ে!
অন্য মেয়েদের কথা বাদই দিলাম যে আমি নিজেই আমার বাবা, ভাই, পরিবারের সাথে এসব শারীরবৃত্তীয় চক্র সম্পর্কে এতোটা ফ্রি, সেই আমিই অফিসের মত ফরমাল জায়গায় বলতে পারি নি আমার পিরিয়ড চলার কথা। সেই আমিই একদিন ভার্সিটিতে ছেলেমেয়ে ভর্তি ক্লাসে দাঁড়িয়ে জরুরি ভিত্তিতে ওয়াশরুমে যাবার পারমিশানের কারণ হিসেবে শিক্ষককে বলেছিলাম অন্য কথা!
আমি মানছি, কিছু কিছু জায়গায় আমি সাহস করে সত্যি কথা বললে হয়তো আজ অন্য অনেক মেয়েকে এইসব জায়গায় একই ঘটনার শিকার হতে হতো না। গতকাল যা আমি বলতে পারি নি, হয়তো আগামীকাল আমি তা বলতে পারবো বলেই এই লেখাটা লেখার সাহস পেয়েছি। কিন্তু তা বলেই শুধু একপাক্ষিকভাবে সবকিছুর সমাধান হয়ে যায় না!
এমন অনেক মানুষ আছে, ডাক্তার দেখিয়ে আসার পর যে চায় না বাইরের কোন এমআর তার প্রেসক্রিপশানে উঁকি মারুক, তার রোগ কিংবা তার সমাধান একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। তেমনি কোন মেয়ে যদি না চায় বাইরের মানুষকে তার পিরিয়ডের কথা বলবে না, তবে তাকেও আমি পুরোপুরি দোষ দিতে পারি না। সেইদিক থেকে ছেলেদের পিরিয়ড সম্পর্কে জানার এবং মেয়েদের সাথে ভালো ব্যবহার করার দায়িত্ব বেশি!
যে ছেলে আমার মতই বায়োকেমিস্ট কিংবা আমার বন্ধুর মত ডাক্তার অথবা আমার ভাগ্নের মত স্কুলপড়ুয়া, সেই ছেলেটা হয়তো জানেই না তার মাকে, তার বোনকে পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ শারীরিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। আর জানে না বলেই হয়তো সে ভাবতেও পারে না, পিরিয়ডের সময় তার সহকর্মী কিংবা বন্ধুকে তারই সাহায্য করা উচিত সবচেয়ে বেশি!
বিপরীত লিঙ্গের গোপন অঙ্গ নিয়ে আমাদের ভেতর যে অস্বচ্ছতা, যে কৌতূহল, আগ্রহ কাজ করে, সেই আগ্রহ আর কৌতূহল যেন আমাদের উদার করে। সেই আগ্রহ যেন রোজার দিনে রক্তপাত হতে থাকা মেয়েটিকে না খেয়ে মুখ বুঁজে কাজ করতে বাধ্য না করে। বরং কোন মেয়ের এমন শারীরিক অবস্থায় তাকে যেন খাওয়া নিয়ে, কাজ করা নিয়ে কোন লজ্জায় পড়তে না হয়, সেইদিকে খেয়াল রাখতে শেখায়।
সেক্স এডুকেশনের এটাও একটা পার্ট, পরিবার থেকেই যার চর্চা হওয়া উচিত। মেয়েদের শেখানো উচিত, তার শারীরিক চক্র কোন লজ্জার ব্যাপার নয় এবং ছেলেদের শেখানো উচিত, নামাজ রোজা নিয়ে উপদেশ দেবার আগে কোন মেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে কিনা সেটা ভাবার অভ্যাস তার থাকতে হবে। পিরিয়ড চলাকালীন মেয়েদের প্রতি সহমর্মিতা আর সম্মানের জায়গা অন্য সময়ের মতই বজায় রাখতে হবে!
যে ছেলে একজন মায়ের শরীর থেকে পৃথিবীতে আসে, সেই ছেলেটি অন্য কোন ভবিতব্য মায়ের শারীরিক চক্রকে কেন বাঁকা চোখে দেখবে? কেন অন্যের স্বাভাবিক চক্র নিয়ে সে সুযোগ খুঁজবে সস্তা বিনোদনের?
লেখক: তরুণ উদ্যোক্তা
ফার্মাসিউটিকালস কোম্পানিতে যখন চাকরি করতাম, বিকেলে নামাজ পড়ে একসাথে নাস্তা করার প্রচলন ছিলো, সবাই সবার কাজের অংশ গুছিয়ে একসাথে ক্যান্টিনে যেতো। এরমাঝে মেয়েরা সবচেয়ে কমন যে প্রশ্ন ফেইস করতো, তা হলো, ‘নামাজ পড়েছো?’
প্রশ্নটা ছেলেরা করলে পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় আমার উত্তর ছিলো, ‘হু’ (মিথ্যা)। আর অন্যরা যারা বলতো, ‘পড়ি নি’, তাদের অবস্থা আরো শোচনীয়। নামাজ পড়া যে উচিত এই নিয়ে উপদেশ আর পড়ে নি বলে কিছুটা ব্যঙ্গ কথাও শুনতেই হতো। দুটোই হয়তো ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে বলা, কিন্তু ঐ যে, যে শুনছে কেবল সে জানে ঐসময় এসব শুনতে কেমন লাগে!
আমার বরকে একদিন বললাম এই কথা। তার উত্তর শুনে আমি কিঞ্চিৎ অবাক। আমাকে বললো, ‘মিথ্যে বলার কী দরকার? বলবে পিরিয়ড চলে, নামাজ পড়া সম্ভব না’। আমি বললাম, ‘জনে জনে বলে বেড়াতে ভালো লাগে না বলেই বলি না, পুরো অফিস জানবে আমার কখন পিরিয়ড চলে, ব্যাপারটা অস্বস্তিকর’। সে বললো, ‘সবাইকে বলবে কেন, যে জানতে চাইবে তাকে বলবে। এরা ফার্মাতে কাজ করা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। একদিন দুইদিন বললে তিনদিনের দিন আর প্রশ্ন করবে না’।
গত রোজায় এক আপু ইনবক্স করলো, ‘আপু ছেলেরা জানে মেয়েরা সব রোজা রাখতে পারে না, তারপরেও কেন এগুলো নিয়ে টিটকারি দেয়? বাসায় দিনের বেলা বাবা-ভাইয়ের থেকে লুকিয়ে পানি খেতে হয়, সেহরিতে খেতে উঠতে হয়, রোজা না থেকেও রক্তক্ষরণের সময় সারাদিন আর কিছু খেতে পারি না কেউ দেখে ফেলার ভয়ে। অথচ ওরা তো জানে পিরিয়ড কী। একইসাথে পড়া ছেলেগুলো রোজা না রাখলে খোঁটা দেয়, জানতে চায় নামাজ পড়েছি কিনা, কোরআন পড়েছি কিনা। না বললে উপদেশ দিতে শুরু করে। আর যদি বলেও দেই, তাহলেও কেমন করে হাসতে থাকে, যখনই দেখে তখনই হাসে!’
আমি যখন সেক্স এডুকেশানের কথা বলি, অনেকে তখন বিরোধিতা করে বলে, এসব শিক্ষা দিয়ে কি পশ্চিমা দেশে ধর্ষণ বন্ধ হয়েছে? না হয় নি, কিন্তু পারিবারিকভাবে লুকোচুরির কারণে আমাদের সন্তানদের মনমানসিকতাও উদার হয় নি। অশিক্ষিত রিকশাচালক হোক কী শিক্ষিত স্কুলপড়ুয়া ছেলে, কী ডাক্তার, কী জীববিজ্ঞান অনুষদের সার্টিফিকেটধারী মেয়েদের শারীরবৃত্তীয় চক্রকে মাথায় রেখে তাদের সাথে আচরণ করার কথা ভুলে যায়।
আমি মানছি, এমন পরিবার এই দেশে আছে যেখানে লুকোচুরির ভেতরেও পরিবারের মেয়ে সন্তানকে কোন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় নি। কিন্তু সেই লুকোচুরির কারণেই ঐ একই পরিবারের ছেলের দ্বারা যে তার কোন অফিস সহকর্মী বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে নি তা কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যায় না!
প্রচণ্ড রক্তপাতের ভেতরেও রোজার আশ্রয় নিয়ে আমাদের অনেক মেয়েরা না খেয়ে একাধারে কাজ করে ক্যান্টিন বয়দের বাঁকা চাউনি আর ফিসফাস থেকে বেঁচে যাবে বলে যে সময়টায় প্রতিটা মেয়ের শরীরে পুষ্টিকর খাবার দেয়া দরকার, সেই সময়টায় অনেকেই তলপেটে অমানুষিক ব্যথা চেপে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ল্যাব করে, ক্লাসের ছেলে বন্ধুরা তাদের গোপন কষ্টের কথা জেনে কোন মেয়ের কখন সাইকেল চলে সেটা নিয়ে হলে আড্ডায় নিজেরা হাসাহাসি করবে এই ভয়ে!
অন্য মেয়েদের কথা বাদই দিলাম যে আমি নিজেই আমার বাবা, ভাই, পরিবারের সাথে এসব শারীরবৃত্তীয় চক্র সম্পর্কে এতোটা ফ্রি, সেই আমিই অফিসের মত ফরমাল জায়গায় বলতে পারি নি আমার পিরিয়ড চলার কথা। সেই আমিই একদিন ভার্সিটিতে ছেলেমেয়ে ভর্তি ক্লাসে দাঁড়িয়ে জরুরি ভিত্তিতে ওয়াশরুমে যাবার পারমিশানের কারণ হিসেবে শিক্ষককে বলেছিলাম অন্য কথা!
আমি মানছি, কিছু কিছু জায়গায় আমি সাহস করে সত্যি কথা বললে হয়তো আজ অন্য অনেক মেয়েকে এইসব জায়গায় একই ঘটনার শিকার হতে হতো না। গতকাল যা আমি বলতে পারি নি, হয়তো আগামীকাল আমি তা বলতে পারবো বলেই এই লেখাটা লেখার সাহস পেয়েছি। কিন্তু তা বলেই শুধু একপাক্ষিকভাবে সবকিছুর সমাধান হয়ে যায় না!
এমন অনেক মানুষ আছে, ডাক্তার দেখিয়ে আসার পর যে চায় না বাইরের কোন এমআর তার প্রেসক্রিপশানে উঁকি মারুক, তার রোগ কিংবা তার সমাধান একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। তেমনি কোন মেয়ে যদি না চায় বাইরের মানুষকে তার পিরিয়ডের কথা বলবে না, তবে তাকেও আমি পুরোপুরি দোষ দিতে পারি না। সেইদিক থেকে ছেলেদের পিরিয়ড সম্পর্কে জানার এবং মেয়েদের সাথে ভালো ব্যবহার করার দায়িত্ব বেশি!
যে ছেলে আমার মতই বায়োকেমিস্ট কিংবা আমার বন্ধুর মত ডাক্তার অথবা আমার ভাগ্নের মত স্কুলপড়ুয়া, সেই ছেলেটা হয়তো জানেই না তার মাকে, তার বোনকে পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ শারীরিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। আর জানে না বলেই হয়তো সে ভাবতেও পারে না, পিরিয়ডের সময় তার সহকর্মী কিংবা বন্ধুকে তারই সাহায্য করা উচিত সবচেয়ে বেশি!
বিপরীত লিঙ্গের গোপন অঙ্গ নিয়ে আমাদের ভেতর যে অস্বচ্ছতা, যে কৌতূহল, আগ্রহ কাজ করে, সেই আগ্রহ আর কৌতূহল যেন আমাদের উদার করে। সেই আগ্রহ যেন রোজার দিনে রক্তপাত হতে থাকা মেয়েটিকে না খেয়ে মুখ বুঁজে কাজ করতে বাধ্য না করে। বরং কোন মেয়ের এমন শারীরিক অবস্থায় তাকে যেন খাওয়া নিয়ে, কাজ করা নিয়ে কোন লজ্জায় পড়তে না হয়, সেইদিকে খেয়াল রাখতে শেখায়।
সেক্স এডুকেশনের এটাও একটা পার্ট, পরিবার থেকেই যার চর্চা হওয়া উচিত। মেয়েদের শেখানো উচিত, তার শারীরিক চক্র কোন লজ্জার ব্যাপার নয় এবং ছেলেদের শেখানো উচিত, নামাজ রোজা নিয়ে উপদেশ দেবার আগে কোন মেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে কিনা সেটা ভাবার অভ্যাস তার থাকতে হবে। পিরিয়ড চলাকালীন মেয়েদের প্রতি সহমর্মিতা আর সম্মানের জায়গা অন্য সময়ের মতই বজায় রাখতে হবে!
যে ছেলে একজন মায়ের শরীর থেকে পৃথিবীতে আসে, সেই ছেলেটি অন্য কোন ভবিতব্য মায়ের শারীরিক চক্রকে কেন বাঁকা চোখে দেখবে? কেন অন্যের স্বাভাবিক চক্র নিয়ে সে সুযোগ খুঁজবে সস্তা বিনোদনের?
লেখক: তরুণ উদ্যোক্তা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন