রংপুরের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি
মোঃ গোলাম আযম সরকার
বৃহত্তর রংপুরে গত ৫৪ ঘন্টার অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তা অববাহিকার ১৫২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চরাঞ্চল ছাড়াও নদী তীরবর্তী গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার হেক্টর আমন, পাটসহ ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। শত শত পুকুর তলিয়ে কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে বাইরে। শুধু রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন।ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়ায় ব্যারেজ পয়েন্টের সব কটি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। এ দিকে গত তিন দিনে তিস্তা অববাহিকায় ৪৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমিনুর ইসলাম জানান, এই অস্বাভাবিক পানিতে আমার ইউনিয়নের ৯টির মধ্যে ৬টি ওয়ার্ডের প্রায় ৭ হাজার পারিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা পার্শ্ববর্তি ডানতীর রক্ষা বাঁধ, প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন বিষয়টি আমি ইউএনও এবং ডিসিকে জানিয়েছি। অবিলম্বে এখানে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ বাসস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি। এই ইউপি চেয়ারম্যান জানান, তিস্তাকে এতো উত্তাল আর কখনই দেখা যায় নি। অবিলম্বে চিলাখাল এবং গোডাউনের বাজার এলাকায় স্পার বাঁধ প্রটেকশন দেয়া না গেলে তা ভেঙে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ পাশের ডানতীর রক্ষা বাঁধ ভেঙে যাবে। এতে রংপুর মহানগরীসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হবে।
এছাড়াও উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের চর নোহালী, চর বাগডহরা, আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান হাজীপাড়া, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর চিলাখাল, খলাইর চর, চর বিনবিনা, চর মটুকপুর, জেলেপাড়া, ঢাকের চর, কুড়িবিশ্বা, উত্তর কোলকোন্দ মিয়াজিপাড়া, শিংগিমারী বাঁধেরপাড়, গঙ্গাচড়া ইউনয়নের চর ধামুর, মাঝাপাড়া, গান্নারপাড়, লহ্মিটারী ইউনিয়নের চর শংকরদহ, পশ্চিম ইচলী, পূর্ব ইচলী, কলাগাছি, মধ্য ইচলী, জয়রামওঝা, গজঘন্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাক, চর রাজবল্লভ, গাওছিয়া বাজার, মর্নেয়া ইউনিয়নের নিলারপাড়, চর মর্নেয়া, আলাল চর, রমাকান্ত, রামদেব, কামদেব ও ভাঙ্গাগড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আফসার আলী বলেন,এতে নানা ধরনের ফসল ও শস্য ক্ষেতসহ বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। শস্য বীজতলাসহ শত শত একর জমি পানিতে থৈ থৈ করছে। পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানি চরাঞ্চলে পাশ্ব দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী তিস্তা উপর দিয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করছে । তিনি আরো বলে, পীরগাছা, কৈকুড়ী, কান্দি.ছাওলা, তাম্বুলপুর, ইটাকুমারী, পারুল, কল্যানী, ইউনিয়নের সবকয়টি গ্রাম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শুধুমাত্র অন্নদানগর ইউনিয়নে আংশি ক্ষতি হয়েছে।
শুধু তাই নয় শত শত ছোট ছোট পুকুর তলিয়ে যাওয়ার কারনে এসব পুকুরের মাছ পুকুর থেকে বাহিরে চলেগেছে এর ফলে ব্যাপক ভাবে ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে মৎস্য চাষিরা। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ্য মানুষদের পাশে এগিয়ে আসার জন্য সমাজের বৃত্তশালীদেও প্রতি আহবান জানান।
এদিকে ৯ নং কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাদের মন্ডল সুজা বলেন , ব্যাপক ভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শুধু মাত্র মেইন রাস্তা ছাড়া সব রাস্তা তলিয়েগেছে, বলাযায় সম্পুন্ন ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। তিনিও দেশের বৃত্তশালীদেও কাছথেকে সাহাযোয্য কামনা করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন