বাংলাদেশে কাকের এক অভয়ারণ্যে ‘খাদ্যে বিষক্রিয়া’য় পাখিদের মৃত্যুর খবর
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এলাকাটি এমনভাবে গাছ গাছালি দিয়ে ঘেরা, দূর থেকে মনে হয় যেন ঘন জঙ্গল।
জেলা পশুসম্পদ বিভাগ জানাচ্ছে, সকালবেলায় এখানকার কাকেরা দূরদূরান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। আর সন্ধেবেলায় ফিরে আসে।
এভাবে বছরের পর বছর ধরে এলাকাটি কাকের একটি অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
এই অভয়ারণ্যে গত কয়েকদিনে গাছ থেকে টুপটাপ করে কাক পড়ে যাচ্ছে এবং ঘণ্টা কয়েক ছটফটিয়ে মরে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদদাতারা বলছেন, প্রথম ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার। এদিন সকালে গাছ থেকে হঠাৎ করে তিনটে কাক মাটিতে পড়ে যায়। তারপর ঘণ্টা তিনেক ধরে মাটিতে ছটফট করতে থাকে তারা। এরপর একপর্যায়ে নির্জীব হয়ে যায়।
কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এভাবে গত চারদিনে অন্তত: আঠারোটি কাকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃতদেহগুলোকে কবর দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গণহারে কাক মারা যাবার ঘটনায় এলাকায় অনেকেই অজানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার আতংকে আছেন।
এরই মধ্যে স্থানীয় পশুসম্পদ অধিদপ্তর মৃত কাকগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য জয়পুরহাটের গবেষণাগারে পাঠিয়েছে।
রাজশাহীর জেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিজামুদ্দীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমরা খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার কাকগুলোর মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। আশা করছি রবিবার নাগাদ পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে যাব”।
“তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে এবং কাকগুলোর মৃতদেহ দেখে প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি খাদ্যে বিষক্রিয়া জনিত কারণে ওগুলো মারা যাচ্ছে”।
মি. নিজামুদ্দীন আরো বলেন, আজও (শনিবার) রাজশাহী মেডিকেলে তাদের কর্মকর্তারা গিয়েছিলেন, তবে আজ কোনও কাকের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
জানা যাচ্ছে, ঢাকার আন্তর্জাতিক উদারময় গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআর'বি থেকেও একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহীতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে পরীক্ষার জন্য।
স্থানীয় পত্রপত্রিকার খবরে বলা হচ্ছে রাজশাহীর অন্যান্য এলাকায়ও কাক মারা যাবার ঘটনা ঘটছে।
কর্মকর্তারা আঠারোটি মৃতদেহ উদ্ধারের খবর স্বীকার করলেও খবরে বলা হচ্ছে মৃত কাকের সংখ্যা শত শত হতে পারে।
এর আগেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ওই কাকের অভয়ারণ্যে একবার কাকের এরকম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।
সেবার বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে কাকগুলো মারা গিয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে।
তবে মি. নিজামুদ্দীন বলছেন, সেবার বার্ডফ্লুতে কাক মারা গেলেও এবারের চাইতে কম কাকের মৃত্যু হয়েছিল।
আর এবার বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়বার কোনও আশঙ্কাও উড়িয়ে দেন মোহাম্মদ নিজামুদ্দীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন