আজারবাইজানে ধর্মের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র; মসজিদে থাকবে ক্যামেরা
(রেডিও তেহরান):
আজারবাইজানের মসজিদগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারির লক্ষ্যে সেখানে ক্লোজড
সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
বিষয়ক সরকারি কমিটির বরাত দিয়ে দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা 'অযারতাজ' এ
তথ্য জানিয়েছে।
ধর্মীয়
প্রতিষ্ঠান বিষয়ক কমিটির কর্মকর্তা সাইয়োদ সালোহি বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতেই
মসজিদে ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হবে। তিনি আরও বলেছেন, আজারবাইজানের
মসজিদগুলোতে ক্যামেরা বসানোর প্রধান লক্ষ্য হলো এসব স্থানে অনাকাংখিত ও
অবৈধ তৎপরতা বন্ধ করে মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
রাজনৈতিক
বিশ্লেষকরা আজারবাইজানের মসজিদগুলোতে ক্যামেরা বসানোকে ধার্মিক মুসলমানদের
ওপর দমন-পীড়নের সরকারি নীতির অংশ হিসেবে গণ্য করছেন। গত এক দশকের বেশি
সময়ে প্রেসিডেন্ট এলহাম আলিয়েফের সরকার মুসলমানদেরকে মসজিদছাড়া করতে নানা
ষড়যন্ত্র করেছে।
এরইমধ্যে মসজিদ থেকে মাইকে আজান দেয়া বন্ধ ও মসজিদ ধ্বংসের মতো ইসলামবিরোধী তৎপরতাও চালিয়েছে দেশটির সরকার।
আজারবাইজান
প্রজাতন্ত্রের উচ্চ বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হিজাব বা শালীন পোশাক
নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে এ পর্যন্ত বহু মুসলমানকে আটক
করা হয়েছে। আটক মুসলমানদের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান, সরকার উচ্ছেদের
ষড়যন্ত্র ও ইরানের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাবৃত্তির মতো নানা ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা
হচ্ছে। এছাড়া দেশটির প্রখ্যাত সাংবাদিক নেজাত আলিয়েফের মতো কোনো কোনো
ব্যক্তিত্বকে নির্যাতনের জন্য ইসরাইলি দূতাবাসের কাছেও তুলে দেয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে
সরকারি অফিস-আদালতে কর্মরত ধার্মিক ব্যক্তিদেরকে নামাজসহ বিভিন্ন এবাদত
থেকে বিরত রাখার চেষ্টা চলছে। প্রকৃত ধর্ম ইসলামের মোকাবেলায় শয়তানপুজারিসহ
বিভিন্ন বিপথগামী গোষ্ঠীকে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
সরকার
বলছে, সব সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে এ কাজ করা হচ্ছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আজারবাইজানের ৯৮ শতাংশই হচ্ছে মুসলমান এবং এর
মধ্যে শিয়া মুসলমানের সংখ্যাই বেশি।
এলহাম
আলিয়েফ সরকার মুসলমানদেরকে অজ্ঞ হিসেবে মনে করছে এবং তাদের মতে অজ্ঞতা ও
অশিক্ষার কারণে মানুষ ধর্মের প্রতি ঝুকে পড়েছে। এ কারণে মসজিদগুলোতে
ইসলামবিরোধী বই রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ধর্মবিষয়ক সংগঠনগুলোর সরকারি
কমিটি এ বিষয়ে বলেছে, মসজিদগুলোতে শুধু আধ্যাত্মিক বই রাখা হয়। এখন থেকে
বৈষয়িক স্বার্থ সংক্রান্ত বইও সেখানে রাখা হবে যাতে মুসল্লিরা সচেতন হতে
পারে।
বিশ্লেষকরা
বলছেন, আজারবাইজানের সমাজ-সংস্কৃতি থেকে ইসলাম ধর্মের প্রভাব পুরোপুরি
মুছে ফেলার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে যা কোনোভাবেই
গ্রহণযোগ্য নয়।#
তেহরান রেডিও/এসএ/৯
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন