হাজার বছরে কেবল একবারই ঘটে এমন মহাবিপ্লব! - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

হাজার বছরে কেবল একবারই ঘটে এমন মহাবিপ্লব!

হাজার বছরে কেবল একবারই ঘটে এমন মহাবিপ্লব!

হাজার বছরে কেবল একবারই ঘটে এমন মহাবিপ্লব!
(রেডিও তেহরান)
 আজ ইরানের ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের ৩৭ তম বিজয়-বার্ষিকী। এ উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছি সালাম ও অসংখ্য সংগ্রামী শুভেচ্ছা। এ বিপ্লবের মহানায়ক এবং শহীদদের শানে পেশ করছি অশেষ সালাম আর দরুদ। কারণ, হাজার বছরে বড়জোর একবারই ঘটে এমন মহা-বিপ্লব। 

ইরানের ইসলামী বিপ্লব হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বিপ্লব। এ বিপ্লব কেবল ইরানি জাতির জন্যই নয় বরং গোটা মুসলিম উম্মাহ ও মানব জাতির জন্যেও গৌরবের মাধ্যম। কারণ, এ বিপ্লব বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিসহ জালিম শক্তিগুলোর মধ্যে মহা- আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ইরানের ইসলামী বিপ্লব কী করে এতটা শক্তি ও প্রভাবের অধিকারী হল তা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আসলে এ বিপ্লবের স্থপতি ইমাম খোমেনী (র)’ র আহ্বান ছিল হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত এমন এক আহ্বানের প্রতিধ্বনি যা উচ্চারিত হয়েছিল ইসলামের মহানায়কদের কণ্ঠে। এ বিপ্লব কাবিলের সঙ্গে হাবিলের, নমরুদের সঙ্গে হযরত ইব্রাহিমের, ফেরাউনের সঙ্গে হযরত মুসার, আবু জাহিল ও আবু লাহাবের মত কাফির-মুশরিকদের সঙ্গে বিশ্বনবীর (সা)’র সংগ্রাম এবং ইয়াজিদসহ মুসলিম নামধারী স্বৈরশাসকদের সঙ্গে মহান ইমামদের দ্বন্দ্ব ও তাঁদের আন্দোলনেরই ধারাবাহিকতার ফসল। ইসলামের এই অতুলনীয় শক্তির বলেই মুসলিম বিশ্বে মার্কিন সরকারের সবচেয়ে বড় মিত্র শাহের সরকারকে উৎখাত করেছিলেন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা ইমাম খোমেনী (র)। সেনা ও সামরিক শক্তির দিক থেকে শাহের সশস্ত্র বাহিনী ছিল বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ শক্তি।


দক্ষ কর্মী-বাহিনী ও অনুসারী গড়ে তোলা ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি। ১৯৬২ সনে ইমাম খোমেনী যখন প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু করেন তখন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার কর্মী বাহিনী কোথায়? তিনি বলেছিলেন, তারা এখনও মায়ের কোলে রয়েছে।

ইরানে ইমাম খোমেনী (র)’র নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লব বিজয়ী হওয়ার পরপরই পশ্চিমা শাসক-চক্র ও তাদের নিয়ন্ত্রিত প্রচার মাধ্যমে বলা হত: এ বিপ্লব বড় জোর কয়েক মাস টিকবে! ইরানি মোল্লারা রাষ্ট্র পরিচালনার কি বোঝে? তারা কমিউনিস্টদের খপ্পরে পড়বে ও অচিরেই ক্ষমতা হারাবে!-ইত্যাদি।

কিন্তু তাদের সেইসব প্রচারণা ব্যর্থ হয়েছে। ইসলামী ইরান কেবল টিকেই থাকেনি, বরং বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বস্তুগত ও আধ্যাত্মিক নানা দিকে ইসলামী ইরান আজ বিশ্বের বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে। বিপ্লবী এই দেশের ওপর নানা ক্ষেত্রে যতই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বাধা, নিষেধাজ্ঞা ও সংঘাত ততই দেশটি স্বনির্ভর বা উন্নত হয়েছে সেইসব ক্ষেত্রে।

সামরিক শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা, বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা ক্ষেত্রেও ইসলামী ইরান আজ আলোচনার অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। সামরিক শক্তিতে ইরান আজ এত উন্নত যে শত্রুরা সাদ্দামকে দিয়ে ইরানে হামলা চালানোর যুগের পর কখনও ইরানে প্রকাশ্যে কোনো অভিযান চালানোর কথা চিন্তাও করতে পারেনি। ইরান নিজের তৈরি একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে মহাকাশে।

ইরান আজ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রের শহরগুলোতে একজন যুবতীও গভীর রাতে চলাফেরা করতে পারেন নিরাপদে। ইরানের আশপাশের নানা রাষ্ট্রে বিদেশী মদদে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস এবং জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক সংঘাত নিয়মিত বিষয় হয়ে থাকলেও ইসলামী এই রাষ্ট্রে এসবের লেশমাত্রও নেই।
ব্যবসায়ী, পুঁজি-বিনিয়োগকারী, বিদেশী পর্যটক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকসহ সব শ্রেণীর জনগণের জন্য নিরাপত্তার দ্বীপ হল ইরান।

বিশ্বের সবচেয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতির অধিকারী হল ইরান। দেশটি আজ পরিপূর্ণ অর্থেই স্বাধীন। ইসলামী এই দেশটির ক্ষমতার কাঠামো, রাজনীতি ও সংস্কৃতি বাইরের শক্তিগুলোর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত ও প্রভাবিত নয়। বিশ্বের অন্যতম প্রধান ক্ষমতাধর দেশের শক্তিশালী নেতা হওয়া সত্ত্বেও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা, প্রেসিডেন্ট এবং শীর্ষস্থানীয় নেতারা সবচেয়ে বিনয়ী ও জন-দরদি। ইরানের সংসদ ও সরকারের রয়েছে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র প্রকাশ্যেই প্রেসিডেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে তার নানা কার্যক্রমের সমালোচনা করতে পারেন।

সামাজিক নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার দিক থেকেও ইরান আজ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ। দেশটির নেতৃবৃন্দের খোদা-ভীতি ও সততাও শীর্ষ পর্যায়ের। 

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের স্থপতি ইমাম খোমেনী যদি চাইতেন তাহলে তার সন্তানদেরকে বড় ধরনের রাষ্ট্রীয় পদে নিয়োগ দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, বরং রাষ্ট্রীয় বড় কোনো পদ গ্রহণ না করতে সন্তানদেরকে উপদেশ দিয়ে গেছেন।

ইরানই বিশ্বের একমাত্র ইসলামী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেখানে প্রতি বছর কোনো না কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ইরানের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ বা ইসলাম বিরোধী কোনো দল গঠন নিষিদ্ধ। ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয়ী হওয়া সত্ত্বেও এর স্থপতি মরহুম ইমাম খোমেনী দেশটির শাসন ব্যবস্থা ইসলামী প্রজাতন্ত্র-ভিত্তিক হবে কিনা এবং নতুন সংবিধানের প্রতি জনগণের সমর্থন আছে কিনা তা গণভোটের মাধ্যমে যাচাইয় করে নিয়েছিলেন। ইরানের ভোটারদের ৯৮ শতাংশই ইসলামী রাষ্ট্র-ব্যবস্থা ও সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে প্রকৃত ইসলামী ব্যবস্থা বা ইসলামী শাসনও জোর করে চাপিয়ে দেয়া যায় না জনগণের ওপর।

ইসলামী ইরানের জনগণের প্রতি ইসলামী সরকারের অশেষ শ্রদ্ধাবোধের কারণে জনগণও এই বিপ্লবকে টিকিয়ে রাখার জন্য সব ধরনের ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করেছে। এই দেশটিতে নানা রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও ধারা বা উপধারা থাকলেও সব ধারার অনুসারী জনগণ ইসলামী শাসন-ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার সমর্থক। আর তারই প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতি বছর ইসলামী বিপ্লবের বিজয়-বার্ষিকীতে গণ-শোভাযাত্রায় সারা দেশের সব শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণ থেকে। এমনকি ইরানের অমুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরাও এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে থাকেন।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান স্থপতি ইমাম খোমেনীর (র) মত তার উত্তরসূরি ইরানের বর্তমান সর্বোচ্চ নেতাও এ বিপ্লবকে রক্ষার ক্ষেত্রে নানা দূরদর্শিতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। ইসলামী বিপ্লবের অসমাপ্ত লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য তিনি সচেষ্ট। যে কোনো বিপ্লব ধ্বংস হতে পারে কতগুলো প্রধান কারণে। যেমন, বিজাতীয় ধ্যান-ধারণার অনুপ্রবেশ, ধর্মের নামে চরমপন্থা বা বাড়াবাড়ি, বিপ্লবী কর্মসূচি অসম্পূর্ণ রাখা, সুবিধাবাদীদের উত্থান, ভবিষ্যতের অস্পষ্ট পরিকল্পনা, আদর্শ ও উদ্দেশ্যের বিচ্যুতি। এ ধরনের নানা সমস্যা মোকাবেলার ব্যাপারে ইরানের বিপ্লবী নেতৃবৃন্দ ছিলেন প্রথম থেকেই সচেতন। বিপ্লব টিকে থাকার রহস্য লুকিয়ে আছে এখানেই। 

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা ও সংগঠকরা বিপ্লবী তৎপরতা শুরু করার আগেই নিজেদেরকে দুনিয়ার লোভ-লালসা থেকে মুক্ত রাখার অনুশীলন করেছিলেন ব্যাপক মাত্রায়। দেশটিতে নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে সেই ধারার প্রভাব এখনও রয়েছে।

ইরানের ইসলামী বিপ্লব এটা প্রমাণ করেছে যে একটি জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ও ন্যায়-নীতিতে অবিচল থাকলে জালিম শাসক ও তার সহযোগীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তার পতন অনিবার্য এবং পরাশক্তিগুলো এমন জাতির কোনো ক্ষতিই করতে সক্ষম হবে না। ইমাম খোমেনী (র) এ কারণেই বলতেন, আমেরিকা আমাদের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না। বিশ্বের মুক্তিকামী ও ইসলামী ভাবাপন্ন দলগুলোর জন্য ইরানের ইসলামী বিপ্লবে রয়েছে বহু শিক্ষণীয় দিক। বিশ্বের মুক্তিকামী শক্তিগুলো যদি আত্মশুদ্ধির প্রশিক্ষণ নেয় এবং তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জালিম পরাশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে বিশ্বকে আরও বেশি নিরাপদ করা ও বিশ্ব-ইসলামী বিপ্লবের পরিবেশ সৃষ্টি করা সহজ হয়ে উঠবে।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রভাবেই গড়ে উঠেছে ফিলিস্তিনের ইন্তিফাদা আন্দোলন এবং হামাস ও ইসলামী জিহাদের মত সংগ্রামী দল। লেবাননের হিজবুল্লাহর ইসরাইল-বিরোধী কিংবদন্তীতুল্য সাফল্যের মূলেও রয়েছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী চেতনার সেই জনপ্রিয় ঐতিহাসিক শ্লোগান: প্রতিটি দিনই আশুরা ও প্রতিটি ময়দানই কারবালা। 

আজকের এই আলোচনা শেষ করব ইরানের ইসলামী বিপ্লবের স্থপতি মরহুম ইমাম খোমেনীর প্রতি নিবেদিত ‘রুহুল্লাহ! দেখ তোমার জন্য আমি কি করেছি!’ শীর্ষক একটি কবিতার কিছু অংশের ভাবার্থ শুনিয়ে:

তুমি চেয়েছিলে ‘ফানাফিল্লাহ’, ব্যাকুল ছিলে হতে বিলীন আমার মাঝে
আমি তোমাকে দিয়েছি ‘বাকাবিল্লাহ’- পেলে স্থায়িত্ব আমার সঙ্গে
মানুষের মধ্যে তোমার পদচারণ ছিল সত্যকে নিয়ে
আমি সত্যকে করলাম প্রকাশিত মানুষের মাঝে তোমাকে দিয়ে
তুমি সবকিছু ছেড়েছ আমার জন্যে
তোমায় দিলাম সবই যা চেয়েছিলে মোর কাছে ...
তুমি নিজেকে ভুলেছ আমার তরে
আমি তোমার জাতিকে আত্মভোলা করেছি তোমার জন্যে
তুমি ছিলে মম আশিক আমি মাশুক
তাই তোমার জাতিকে করলাম তোমার আশিক ....
তুমি বলেছিলে: তারা এখনও তাদের মায়ের কোলে আছে
আমি করলাম তাদের আমার সেনা, হিজবুল্লাহ তোমার জন্যে
তুমি কেঁদেছিলে আমার জন্যে
তাই আমি তোমার ভক্তদের কাঁদালাম তোমার বিরহে
আমি যা চেয়েছি তুমিও তাই চাইতে
ফলে জাতিকে দিয়েও তাই চাওয়ালাম যা যা চাইতে তুমি
তুমি ক্রুদ্ধ হয়েছিলে আমার জন্যে
তাই জনগণকে বিক্ষুব্ধ করলাম তোমার প্রেমে
তুমি ভুলে গিয়েছিলে তোমার ব্যথা আমার তরে
তাই আমি মানুষকে ভুলিয়ে দিলাম তাদের ব্যথা তোমার জন্য
তুমি ছিলে একনিষ্ঠ আমার আনুগত্যে
তাই জনগণকে করেছি তোমার অনুগত
তুমি আমার জন্য কথা বলতে
তাই জনগণকে তোমার জন্য কথা বলালাম
তুমি আমার শত্রুকে শত্রু ভাবতে আমার বন্ধুকে তোমার বন্ধু করতে
আমি তাই তোমাকে ও তোমার সেনাকে করেছি সফল ...
তুমি আস্থাশীল ছিলে আমাতে
তাই আমি মরুর ধূলিকেও করলাম আমার সেনা তোমার জন্য
তুমি ভয় করতে আমাকে তাই শত্রুর হৃদয়ে জাগালাম তোমার ভয়...
তুমি গভীর রাতে আসতে আমার কাছে
আমি জনতাকে পাঠালাম তোমার কাছে দিনের আলোয় ...
তোমার চোখে অশ্রু বইত আমার জন্য
তাই জনগণের চোখে অশ্রু বইয়ে দিলাম তোমার জন্য
... তুমি এ দুনিয়া হতে চাওনি কিছুই
আমি তাই তোমাকে দিলাম ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। #

রেডিও তেহরান/এএইচ/১১

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here