যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের ঘোষণা মন্ত্রীর, মিশ্র প্রতিক্রিয়া
(রেডিও তেহরান):
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের পাশাপাশি তাদের পরিবারের
সদস্যদের সরকারি চাকরি এবং ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সমাবেশে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষকারীদের বিচারে শিগগিরই জাতীয় সংসদে আইন পাস করা হবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিকারী ও স্বাধীনতা
যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারীদের বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে
এই সমাবেশ ও মানববন্ধন আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
সমাবেশে মন্ত্রী বলেন, “আমি জাতির সামনে
স্পষ্টভাবে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে যুদ্ধাপরাধীদের জমিজমাসহ সকল সম্পত্তি
বাজেয়াপ্ত করা হবে। তাদের পরিবারে যারা আছে, তারা এদেশে কোনো সরকারি চাকরি
পাবে না।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ব্যাখ্যা করে
বলেন, “এ সকল যুদ্ধাপরাধীর পরিবারের সদস্যরা শুধুমাত্র এদেশে নাগরিক হিসেবে
বসবাস করতে পারবে। কিন্তু তাদের কোনো ভোটাধিকার থাকবে না।”
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী
মুক্ত দিবসের সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, অচিরেই
যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং
বাজেয়াপ্তকৃত এসব সম্পদ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে।
“বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের কোনো আইন নেই। এজন্য আইন প্রণয়ন করা হবে” বলেও তিনি সেদিন ঘোষণা দিয়েছিলেন।
একই সাথে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী অভিমত
দেন যে, বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করার কোনো
অধিকার নেই। বাংলার মাটি থেকে জামায়াতের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করা হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা
এবং জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে পটুয়াখালির মুক্তিযোদ্ধা
আবদুল আজিজ মল্লিক রেডিও তেহরানকে বলেন, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত বা পরিবারের
সদস্যদের অধিকার বঞ্চিত করা ঠিক হবে না। তবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা যেতে
পারে।
এ প্রসঙ্গে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা
করে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ বলেন, একের
অপরাধের জন্য অন্যকে শাস্তি দেয়া যায় না।
ওদিকে সরকারের অংশীদার বাংলাদেশ
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের
সম্পদ বাজেয়াপ্ত বা জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে যা করতে হবে
সেটা আইনের মাধ্যমেই করতে হবে। তবে এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের সাথে বা তাদের
নিজেদের মধ্যে এখনো কোনো কিছু আলোচনা হয় নি।
তবে, গতকাল প্রেস ক্লাবের সামনের সমাবেশে
যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা বা জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার
ব্যাপারে এরকম আইন প্রণয়নের বিষয়ে কিছু বলেননি মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লায়ন মো. সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।#
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন