কোলকাতার রাজপথে প্রকাশ্যে গরুর গোশত খেয়ে অভিনব প্রতিবাদ
(রেডিও তেহরান): এবার
কোলকাতার রাজপথে প্রকাশ্যে গরুর গোশত খেয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদী দলগুলোর
কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্টজনরা।
শুক্রবার কোলকাতার ধর্মতলায় ‘ভাষা ও চেতনা
সমিতি’র উদ্যোগে কর্মসূচিতে গরুর গোশত খেয়ে প্রতীকী প্রতিবাদে শামিল
হয়েছিলেন কবি সুবোধ সরকার, কোলকাতার সাবেক মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য,
আইনজীবী ইমানুল হক প্রমুখ।
রঙিন পোস্টার, আবৃত্তি ও গানে গানে বিজেপি
সরকার এবং আরএসএস’র সমালোচনা করেন প্রতিবাদকারীরা। এর পর প্রকাশ্যে রান্না
করা গরুর গোশত খান উপস্থিত বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিকেরা।
সুবোধ সরকার বলেন, ‘খাদ্যের ওপর ফতোয়া জারি করা চলবে না। আমরা (শুক্রবার) গান গেয়ে, কবিতা বলে, গোশত খেয়ে এর প্রতিবাদ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রচুর লোক গরুর গোশত
খায়। এটা সস্তা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ। ডাক্তার যদি গরুর গোশত খেতে বলেন তাহলে তা
খেতে বাধা কেথায়? কেরল হাউসে পুলিশ যে সক্রিয়তা দেখিয়েছে তারও একটা
প্রতিবাদ হওয়া জরুরি ছিল।’
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘খাদ্যাভাস
মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। খাদ্যাভাসের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক
নেই। এর সঙ্গে ধর্মকে মিলিয়ে দেশকে ভাঙার যে চেষ্টা চলছে তার বিরুদ্ধে এই
প্রতিবাদ।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা দাদরিতে গরুর গোশত খাওয়ার সন্দেহে এক মুসলিম বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা, হরিয়ানায় দলিত শিশুদের হত্যা, সাহিত্যিক কালবুর্গির হত্যা, কেরল হাউসে পুলিশি অভিযানসহ বিভিন্ন সাম্প্রতিক ঘটনার তাঁরা প্রতিবাদ জানান।
এদিকে, রাজ্যের বিশিষ্টজনদের একাংশ প্রকাশ্যে গোশত খেয়ে প্রতিবাদ জানানোর সমালোচনা করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি রাহুল সিনহা।
ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিআইএম রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কানী দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বিজেপি সভাপতি বলেন, এই ঘটনা নির্দিষ্ট
একটি সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবাবেগ কে আঘাত করবে। কিভাবে রাজ্য সরকার
প্রকাশ্যে এধরনের কর্মসূচির অনুমতি দিল তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
উদ্যোক্তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের
সেন্টিমেন্টে লাগে এমন গোশত প্রকাশ্যে কেন খাওয়ার সাহস দেখাতে পারলেন না?
গরুর গোশত বন্ধ করে যেমন হিন্দুত্ববাদীরা দেশের সংবিধানকে অবমাননা করছেন,
তেমনি গো-গোশত উৎসব করে প্রতিবাদের নামে ‘ছেলেমানুষী’ করেছেন উদ্যোক্তারা।
উল্লেখ্য, গত
৮ অক্টোবর জম্মু-কাশ্মিরে ‘বিফ পার্টি’ দেয়ার অভিযোগে নির্দলীয় এক মুসলিম
বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে ব্যাপক মারধর করেছে বিজেপি বিধায়করা।
বিধানসভায় ঢোকা মাত্রই তাকে সকলের সামনে মারধর করেন বিজেপি বিধায়ক রবীন্দর
রায়নাসহ অন্যরা। কংগ্রেস এবং এনসি বিধায়করা ছুটে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ার রশিদ
আহমেদকে রক্ষা করেন।#
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন