অধিকৃত ফিলিস্তিনে সংকট তীব্রতর হওয়ায় চিন্তিত খোদ ইহুদি অভিবাসীরা
(রেডিও তেহরান): অধিকৃত
ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সহিংস কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায়
ফিলিস্তিনিরাও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হচ্ছে। এ অবস্থায় ওই
অঞ্চলে নতুন করে অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় ইহুদি
উপশহরসহ ইসরাইলের অন্যান্য এলাকার নাগরিকরা গত কয়েকদিনে এর প্রতিবাদে
বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। ইহুদিরা ওই অঞ্চলে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নীতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। বেশ কয়েকটি
ইহুদি উপশহরের নাগরিকরা গত কয়েক দিনে প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধকামী নীতির
বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করে যাচ্ছে। এর আগেও ইসরাইলের নিরাপত্তা ও
সেনাবাহিনীর ১০৫জন অফিসার এক যৌথ চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নীতির
প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইহুদি
অভিবাসীরা এখন এটা বুঝতে পেরেছে ইসরাইল একটি দখলদার শক্তি এবং তাদের
সহিংসতা, আগ্রাসী ও দমননীতির কারণে ইসরাইলের কেউই নিরাপদ নয়। এদিকে,
ইসরাইলের কর্মকর্তারা উগ্র ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে
দেয়ায় পরিস্থিতি আরো বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং ইসরাইলের নিরাপত্তাও
হুমকির মুখে পড়েছে। অথচ যেসব ইহুদি উন্নত জীবনের আশায় ইসরাইলে এসেছে তারা
নিজ নিজ দেশেই অনেক বেশি নিরাপদে ও শান্তিতে জীবন যাপন করত। ইসরাইলের
কর্মকর্তারা উন্নত ও নিরাপদ জীবন যাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন দেশ
থেকে ইহুদিদেরকে ইসরাইলে আসতে উদ্বুদ্ধ করে। কিন্তু ইসরাইলে আসার পর ইহুদি
অভিবাসীরা বুঝতে পারে তাদেরকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখানে
আনা হয়েছে।
ইসরাইলি নেতারা ইহুদি রাষ্ট্র গঠন এবং
ধর্মগ্রন্থ তৌরাতের মিথ্যা ব্যাখ্যা তুলে ধরে পৃথিবীতেই বেহেশতী জীবনের
আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদেরকে এখানে নিয়ে আসছে। ইহুদিদের কথিত
বেহেশত বর্তমানে জাহান্নামে পরিণত হয়েছে। এমনকি ইহুদিরাও সেখানে আর থাকতে
চায় না। এ কারণে গত কয়েক বছরে বহু ইহুদি অভিবাসীর ইসরাইল ত্যাগের ঘটনা
ঘটেছে।
ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে খোদ ইহুদিদের
প্রতিবাদ আন্দোলন ও অসন্তোষ থেকে বোঝা যায়, বায়তুল মোকাদ্দাস দখলদার
ইসরাইল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে বৈধতা হারিয়েছে। এ ছাড়া, উন্নত
জীবনের যে আশ্বাস ইহুদি অভিবাসীদেরকে দেয়া হয়েছিল তাও মিথ্যা প্রমাণিত
হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের অভ্যন্তরে
জনগণ যেভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তাকে ইসরাইলের জন্য
বিপদঘণ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এমনকি ইসরাইলের কোনো কোনো গণমাধ্যম এও
মন্তব্য করেছে, ইসরাইল ক্রমেই পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় ইসরাইলি কর্মকর্তারা জনমতকে
বিভ্রান্ত করার জন্য এবং নিজেদের শোচনীয় অবস্থা ধামাচাপা দেয়ার জন্য
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা
মনে করছেন।#
রেডিও তেহরান/আরএইচ/২৬
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন