অসিহষ্ণুতার বিরুদ্ধে সরব ইতিহাসবিদেরাও - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৫

অসিহষ্ণুতার বিরুদ্ধে সরব ইতিহাসবিদেরাও

পদ্মভূষণ ফেরাবেন বিজ্ঞানী ভার্গব

অসিহষ্ণুতার বিরুদ্ধে সরব ইতিহাসবিদেরাও-anandabazar.

নিজস্ব সংবাদদাতা

পি এম ভার্গব বিজ্ঞানী

সাহিত্যিক, চিত্র পরিচালক, বিজ্ঞানীদের পরে এ বার সরকার-বিরোধিতায় সরব ইতিহাসবিদেরা।
এক দিকে দেশ জুড়ে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ। অন্য দিকে, গোটা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা। এই দুইয়ের সমালোচনা করে আজ প্রতিবাদে সরব হন দেশের ৫৩ জন ইতিহাসবিদ। সাহিত্যিকদের পুরস্কার ফেরানোর ঘটনায় অস্বস্তিতে ছিল সরকার। গতকাল সেই পথে পা বাড়ান চিত্র পরিচালক ও দেশের বিজ্ঞানীমহল। পরিচালক দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ চলচ্চিত্র জগতের  দশ ব্যক্তিত্ব মুম্বইয়ে জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। আর গেরুয়া শিবিরের অতিসক্রিয়তার প্রতিবাদে নিজের পদ্মভূষণ পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বর্ষীয়ান বিজ্ঞানী পি এম ভার্গব। তা ছাড়া, পরিকল্পিত ভাবে ধর্মীয় অসন্তোষ ছড়ানো ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে থাকা ১৩৫ জন বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদরা রাষ্ট্রপতির কাছে ই-মেলে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠান।
সরকার পক্ষ গতকালের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই আজ সরব হয়েছেন ইতিহাসবিদেরা। রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিব, কে এন পানিক্কর, মৃদুলা মুখোপাধ্যায়ের মতো ইতিহাসবিদেরা আজ যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, যে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল কঠোর ভাষায় বার্তা দেওয়া। কিন্তু ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার পরিবর্তে তিনি অন্য বিষয় নিয়ে সরব হচ্ছেন। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

সর্বস্তরের শিক্ষিত সমাজ যখন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এ ভাবে মুখ খুলছে, তখন আজও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দাবি করেন, ‘‘এটা ভেকধারীদের কৃত্রিম বিদ্রোহ। বিহার নির্বাচন চলাকালীন যে ভাবে প্রতিবাদ করা হচ্ছে তার পিছনে রয়েছে নির্বাচনী রাজনীতি।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও বলেন, ‘‘দেশে যখনই কংগ্রেস সরকার এসেছে, রাজ্যে রাজ্যে দাঙ্গা হয়েছে। হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছেন। কই, তখন তো কেউ অকাদেমি পুরস্কার বা পদ্ম খেতাব ফিরিয়ে দেননি!’’
রাজনাথ-জেটলি এ কথা বললেও, অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে গোটা দেশে। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে নিজের পদ্মভূষণ খেতাব ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুউলার বায়োলজি-র প্রতিষ্ঠাতা অধিকর্তা বিজ্ঞানী পি এম ভার্গব। তাঁর যুক্তি, ‘‘দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হওয়ার মুখে। যা দেখে আমি চিন্তিত।’’ গত দেড় বছরে সঙ্ঘ পরিবার যে ভাবে তাঁর সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করছিল তাতে অস্বস্তিতে ভুগছিলেন ভার্গব। বিশেষ করে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যে ভাবে গৈরিকীকরণের প্রচেষ্টা চলছিল, তা মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। গত সায়েন্স কংগ্রেসে আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল প্রাচীন ভারতে বিমানের মাধ্যমে মহাকাশভ্রমণ। ভার্গব তখনই বলেছিলেন, এ ধরনের অবাস্তব বিষয় নিয়ে সায়েন্স কংগ্রেসে আলোচনা করে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। সেই সায়েন্স কংগ্রেসে তাঁর বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী মোদী আবার বলেছিলেন, প্রাচীন ভারতে সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপন হতো। তখন সেই বক্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করেন ভার্গব। কাল তিনি বলেন, ‘‘আমি ইউপিএ সরকারেরও  সমালোচনা করেছি। কিন্তু তারা এর থেকে ভাল ছিল। কে কী খাবে, কী পরবে অন্তত সে বিষয়ে নির্দেশ দিত না।’’ ভার্গবের আশঙ্কা, এ ভাবে চললে শেষ পর্যন্ত ভারতও পাকিস্তানের মতো মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
আজ ভার্গবের সুরেই সরব হন রোমিলা থাপার ও ইরফান হাবিবেরা। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘মতের পার্থক্য হলেই হিংসার শিকার হতে হচ্ছে। যুক্তিপূর্ণ আলোচনার পরিবর্তে বুলেট ব্যবহার করে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।’’ ইতিহাসবিদেরা প্রশ্ন তুলেছেন সরকারের মানসিকতা নিয়েই। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘চতুর্দিকে কেন্দ্র-বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে। কিন্তু কেন সেই মনোভাব জন্মেছে তার উৎস খোঁজার পরিবর্তে মন্ত্রীরা একে কাগুজে বিপ্লব বলে অভিহিত করছেন। সাহিত্যিকদের পরামর্শ দিচ্ছেন কলম বন্ধ করে রাখার জন্য। প্রতিবাদ জানালে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, এই সরকারের আমলে ইতিহাস পাল্টানোর প্রচেষ্টা চলছে। ভারতের নতুন ইতিহাস লিখতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।
দেশের এই সার্বিক ছবি পাল্টাতে প্রধানমন্ত্রীকে আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চাইছেন ইতিহাসবিদেরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে গোটা বিষয়টি নিয়ে চুপ, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। ইতিহাসবিদ মৃদুলা মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সরকারের উচিত মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা। যে বহুত্ববাদী চরিত্রের জন্য ভারত এত দিন পরিচিত হয়ে এসেছে, সেই চরিত্রকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সক্রিয় হতে হবে সরকারকে।’’
গোটা বিষয়টির মধ্যে অবশ্য পরিকল্পিত রাজনীতির ছাপ দেখছে বিজেপি। আজ অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘বিদ্রোহ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা করছে তারা ঘোষিত বিজেপি-বিরোধী। নরেন্দ্র মোদী যখন বারাণসীতে নির্বাচনে লড়ছিলেন তখন ওই ব্যক্তিরাই মোদীর বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছিলেন।’’ প্রতিবাদের সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জেটলি। তাঁর কথায়, ‘‘বেছে বেছে বিহার নির্বাচনের সময়েই যে ভাবে প্রতিবাদের সুর তীব্র হচ্ছে, তাতে এর পিছনে নিবার্চনী রাজনীতি থাকলে অবাক হব না।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও আজ বলেন, ‘‘সমানে বলা হচ্ছে যে দেশে অসিহষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পরে কোনও বড় মাপের দাঙ্গা বা অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। অথচ, দেশে কংগ্রেস সরকারের আমলে  দাঙ্গায় হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছেন। তখন তো কেউ খেতাব ফিরিয়ে দেননি!’’
মুখে বললেও বিশিষ্টজনেরা যে ভাবে প্রতিবাদের সুর চড়াচ্ছেন, তাতে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপি শিবিরে।

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here