কাশ্মিরে ট্রাকচালক হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, অনন্তনাগে কারফিউ জারি
(রেডিও তেহরান):
জম্মু-কাশ্মিরের এক ট্রাক চালককে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে
(বুধবার) অনন্তনাগে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার
জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
জাহিদ রসুল ভাট নামে ২০ বছর বয়সী ওই ট্রাক
চালককে হত্যার প্রতিবাদে সোমবার কাশ্মিরে বনধ পালন করা হয়। সোমবার থেকে
কাশ্মির উপত্যাকা এ নিয়ে কার্যত বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে এবং গতকাল মঙ্গলবারও
তা বাহাল থাকে। এদিন, অনন্তনাগের বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট এবং ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পাশাপাশি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এদিন দুপুর
পর্যন্ত পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত ছিল। বিকেলে জেকেএলএফ চেয়ারম্যান
মুহাম্মদ ইয়াসীন মালিক, জেকেএলএফ আর কে প্রধান জাভেদ মীর এবং
ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর জাস্টিস-এর মুহাম্মদ আহসান নিহত জাহিদের বাড়িতে
তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে যান। জাহিদের কবর জিয়ারত শেষে জেকেএলএফ
চেয়ারম্যানের ভাষণের পরে সমস্ত পরিবেশ পাল্টে যায়। বিক্ষোভকারীরা ভারত
বিরোধী স্লোগান দেয়া শুরু করে।
জেকেএলএফ চেয়ারম্যান ইয়াসীন মালিক ট্রাক
চালক জাহিদ হত্যার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার অনশনের লক্ষ্যে বেতুঙ্গা থেকে লালচক
পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাকে বাধা দেয়। এ নিয়ে প্রতিবাদকারীদের
সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। এ সময় মিছিলে অংশ নেয়া কয়েকজন
বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়লে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
নিহত জাহিদের গ্রাম বাতেঙ্গুসহ
গোরিওয়ান-বিচবেহারা, অনন্তনাগ শহর এবং কুলগামের খুদওয়ানিতে পুলিশের সঙ্গে
প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি
চালানোর পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোঁড়ে।
পুলিশ জেকেএলএফ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইয়াসীন মালিকসহ তিন কাশ্মিরি নেতাকে আটক করায় তাদের ২৪ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়।
দক্ষিণ কাশ্মিরের অনন্তনাগের বাসিন্দা
ট্রাক ড্রাইভার জাহিদ এবং অন্য সঙ্গীরা কাশ্মিরের দিকে যাওয়ার সময় উধমপুরে
গত ৯ অক্টোবর একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতা তার ট্রাকে পেট্রোল বোমা হামলা
চালায়। দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।
উধমপুর এলাকায় সেই সময় তিনটি গরু জবাই করা
হয়েছে বলে গুজব ছড়ায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ
জানানোর নামে একদল উত্তেজিত মানুষের রোষের শিকার হন জাহিদ নামে ওই ট্রাক
চালক। যদিও ওই মৃত গরুদের ময়না তদন্ত রিপোর্টে প্রকাশ, খাদ্যে বিষক্রিয়ার
ফলেই তাদের মৃত্যু হয়।
হুররিয়াত নেতা সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানি
শুক্রবার জুম্মা নামাজ শেষে রাজ্যের সর্বত্র শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক
দিয়েছেন। এ ঘটনায় রাজ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। #
রেডিও তেহরান/এমএএইচ/এআর/২১
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন