দাপট নয় মসৃণতা - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫

দাপট নয় মসৃণতা

দাপট নয় মসৃণতা-aajkaal.in

cinemar mato pijusসম্রাট মুখোপাধ্যায়: পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিনয় জীবনের শেষ দিকটা বড় ‘ক্লাসিক’ ঘেরা ছিল। তাঁর অভিনয়ে ছায়া ফেলে থাকা বরাবরের ধ্রুপদী ভঙ্গীর মতো।
ব্রাত্য বসুর সিনেমার মতো। বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গ্যালিলিও গালিলেই’। অঞ্জন দত্তের তিন পেনির অপেরা।’ হয় কোনোটা সরাসরি ‘ক্লাসিক’–এর অনুবাদ। না হয় কোনোটা ‘ক্লাসিক’–এর ছাড়া শরীরে নিজে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এই তিন নাটকই পীযূষের যাবার বেলায় ফেলে রেখে যাওয়া পদচ্ছাপকে দীর্ঘ আর গভীর করেছে।
কয়েক মাস আগে ‘ব্রাত্যজন’ আয়োজিত বিষ্ণু বসু স্মারক বক্তৃতায় পীযূষ বলেছিলেন ‘অভিনেতার সঙ্গে নির্দেশকের সম্পর্ক’ নিয়ে। সেখানে শুরু আর শেষের দিকে দুটো খুব ব্যক্তিগত অনুভূতির কথা বলেছিলেন পীযূষ। এক পর্দা খুলে গেলে অভিনেতাও কোনো এক অজানা ড়ির্দেশক হয়ে যায়।’ আর দুই, ‘আমায় যখন যে পরিচালক যে পাত্রে রাখে তখন আমি সেই পাত্রের আকার ধারণ করতে পারি।’ দুটো কথাকে জুড়লে যেটা পাওয়া যায়, পীযূষ ছিল একইসঙ্গে ডিরেক্টর্স অ্যাক্টর’ এবং মঞ্চে ‘ইমপ্রোভাইজেশন’–এ
বিশ্বাসী একজন অভিনেতা।
এই ধরনের অভিনেতাদের সাধারণত ‘রিয়ালিস্টিক’ অভিনয়ের একটা ছদ্মবেশ থাকে। কিন্তু সেটা ছদ্মবেশই। পীযূষ বারবার বলতেন, শিশিরবাবুর বলে যাওয়া ‘ইকোনমি অফ এক্সপ্রেশন’–এর কথা। কম অভিব্যক্তিতে অনেকটা অনুভূতিকে প্রকাশ করা। দেখনারি নেই। মসৃণতা আছে। আর তার মধ্যেই লুকোনো আছে ‘স্টাইলাইজেশন’ ব্রাত্য বসুর ভাইরাস এম সূত্রে অভিনেতা পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের যদি দ্বিতীয় জন্ম হয়ে থাকে, ‘সিনেমার মতো’–তে তবে তৃতীয় জন্ম। নাটকের ‘কনটেন্ট’–এ চাহিদা অনুযায়ীই এ নাটকের ‘টেক্সচার’–এ মেলাতে হয়েছিল সিনেমার অনুচ্চকিত, মাপে কাটা সংলাপ বলার রণ আর নাটকের সোচ্চার অভিব্যক্তিকে। যে কোনও অভিনেতার পক্ষেই যা ‘দুস্তর পারবার’। এ নাটকে ব্রাত্য সযত্নে মিলিয়ে রেখেছিলেন অমর ট্র্যাজেডি ‘হ্যামলেট’–এর ছাড়া। পীযূষের চরিত্রটিতে ছিল হ্যামলেটের সৎবাবা ক্লডিয়াসের আদল। ঐ ‘ইকোনমি অফ এক্সপ্রেশন’–এ যথাসম্ভব নিজেকে গুটিয়েরাখতেন পীযূষ। চরিত্রটি একজন ডক–মেকারের। সংলাপ বলতে শুষ্ক কিছু ধারাবিবরণী। চলায় বলায় কোন দেখানেপনা নেই। অথচ স্বরক্ষেপণে এমন এক সরসতা আনতেন পীযূষ, সেই ধারাকণিকাকে হত সিনেমার ইতিহাসের ভেতর এক মুগ্ধ ভ্রমণ। আর দ্বিতায়ার্ধে তাঁর কবিতার মতো ‘সলিলকি’ বলা তো বিখ্যাত হয়ে আছে।
এই ‘স্টাইলাইজেশন’–কে রাখা, অথচ গোপন প্রেমিকের মতো লুকিয়ে রাখা বোঝা যেত গ্যালিলেও চরিত্রেও। চরম সংকটের মুহূর্তে পানপাত্র তুলে নেওয়া, বা কাঁটার ব্যবহার খাদ্য বস্তুতে, কিংবা গবেষণাগারের জিনিসপত্র হাঁটকানো— গোটা ব্যাপারটার মধ্যে দিয়ে সংলাপবিহীন অবস্থাতেই মঞ্চে একটা অস্থিরতা ছড়িয়ে দিতেন তিনি। বা যখন স্বীকার করে নিতেন ভয় পেয়ে যাবার কথা, মুখের ওপর আসা অভিব্যক্তিটাকে আস্তে আস্তে বদলাতেন তিনি। শম্ভু মিত্র এক সময় গ্যালিলিও করেছেন। উৎপল দত্ত এক সময় করেছেন সেই উকিলের চরিত্র, যে চরিত্রের ছায়ায় ছিল পীয়ূষের ১৭ ই জুলাইয়ের রাকেশ চ্যাটার্জি চরিত্রটি। পীযূষ কোথাওই চাপে পড়েননি, তাঁর মৌলিকতার আর সবশেষে গত মাসে অঞ্জন দত্ত, ছন্দা দত্তর সঙ্গে ‘তিন পেনির অপেরা’ এ নাটকে ঠিক কেন্দ্রীয় চরিত্রে নন পীযূষ। এ নাটকে তিনি ভিখিরিদের ব্যবসাদার পিচহাম। নায়ক ম্যাক দ্য নাইফের একাধারে স্বশুর ও শত্রু। ব্রেখট–এর নাটক। ফলে কোনও কিছুই একমেটে নয়। একইসঙ্গে হিসেবে ও মজাদার এই চরিত্র করতে গিয়ে সব রকম ‘প্রোটোটাইপ’ ভেঙেছিলেন পীযূষ। গান গেয়েছিলেন অঞ্জনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। দেখে মনে হচ্ছিল খুবই উপভোগ করছেন চরিত্রটি। আর তারপরই তো ব্যক্তিগত বসন্তদিনের চটি খুলে রেখে গেলেন কোনো এক বাদামপাহাড়ে।

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here