ইসরাইলই ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির মূল কারণ: খোশরু
(রেডিও তেহরান): জাতিসংঘে
নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধি গোলাম আলি খোশরু বলেছেন মধ্যপ্রাচ্যে হতাশা,
সহিংসতা, নিরাপত্তাহীনতা ও অশান্তির মূল উৎস হলো ইসরাইল।
মধ্যপ্রাচ্যে ধর্মীয় সংঘাতে নিহতদের নিয়ে
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আজ তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন সময় এসেছে
ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসানে বিশ্বকে এগিয়ে আসার।
জনাব খশরু বলেন বিশ্ববাসী ফিলিস্তিনি
জনগণের দুর্দশার সাক্ষী। মৌলিক অধিকার থেকে ফিলিস্তিনিরা কীভাবে বঞ্চিত
হচ্ছে সবাই তা দেখছে। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন আবারও ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি
যথারীতি একাত্মতা ঘোষণা করছে এবং তাদের অনস্বীকার্য বৈধ অধিকারগুলো
বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছে।
ফিলিস্তিনের বর্তমান করুণ পরিস্থিতির জন্য
ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিকতা ও অমার্জনীয় অপরাধকে দায়ী করেন এই কূটনীতিক।
তিনি মাসজিদুল আকসা এবং পূর্ব বায়তুল মোকাদ্দাসের ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রতি
বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনভুক্ত দেশগুলোর প্রতি
আহ্বান জানান। একইভাবে তিনি জাতিসংঘের প্রতিও আহ্বান জানিয়ে বলেন
বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এই সংস্থার উচিত যথাযথ
দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা এবং তাদের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে
আন্তরিক হওয়া। সেইসাথে ফিলিস্তিন সংকটের ন্যায় ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের
লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জনাব খোশরু বলেন ফিলিস্তিনের বিভিন্ন
এলাকায় চলতি অক্টোবর মাসের শুরু থেকেই ইসরাইল বিরোধী ব্যাপক গণবিক্ষাভ
লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইসরাইলি সেনারা ও অধিকৃত ভূখণ্ডের ইহুদি অধ্যুষিত
এলাকার অধিবাসীরা, আরব দেশগুলোসহ বিশ্বসমাজের রহস্যজনক নীরবতায় প্রশ্রয়
পেয়ে এবং ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটের সবুজ সংকেত পেয়ে মাসজিদুল আকসাসহ
ইসলামি পবিত্র স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার ঘটনা ব্যাপক বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা শত
কোটি মুসলমানের প্রথম কেবলা মাসজিদুল আকসাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে
যাচ্ছে। বিশেষ করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মাসজিদুল আকসায় হামলা চালিয়ে তারা
ফিলিস্তিনের মজলুম জনতার অনুভূতিতে আঘাত করে যাচ্ছে। অপরদিকে ফিলিস্তিনের
তরুণ যুবকেরা পবিত্র ওই স্থাপনার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে
ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে কুদস ইন্তিফাদা বা গণজাগরণ শুরু করেছে।
নিরস্ত্র ওই তরুণরা শিশুহত্যাকারী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে
নিজেদের ন্যুনতম অধিকার সংরক্ষণ করতে সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরাইলের নৃশংস হামলার ঘটনায় এরইমাঝে শহিদ
হয়েছে অন্তত ৬০ ফিলিস্তিনি। যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহুর যুদ্ধোন্মাদ মন্ত্রিসভা
ফিলিস্তিনি জনগণ বিশেষ করে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে পাশবিকতা আরও বাড়িয়ে
দিয়েছে। কিন্তু দখলদার ইসরাইলের মোকাবেলায় ফিলিস্তিনিদের একমাত্র হাতিয়ার
হচ্ছে কুদস ইন্তিফাদা বা গণজাগরণ। এই ইন্তিফাদার মাধ্যমেই তারা তাদের
ভূখণ্ড ও মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনাগুলো রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মজলুম ফিলিস্তিনিরা গত ষাট বছরেরও বেশি
সময় ধরে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর নিষ্ঠুরতা ও সহিংসতার মুখোমুখি মানবেতর
জীবনযাপন করছে। বিশ্ববাসী বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষেদের নীরবতার মাঝে
একমাত্র প্রতিরোধই তাদের সম্বল। জনাব খোশরু বলেন,দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো
কিংবা বর্ণবাদী ইসরাইলি নেতাদের শাস্তি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় ওই
প্রতিরোধই,আর কিছু নয়।
রেডিও তেহরান/এনএম/২৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন