প্রশ্ন: আপনি এমন একটা নজির গড়েছেন যা ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সের ইতিহাসে বিরলতম। কী ভাবে ব্যাপারটা উপভোগ করছেন?
দীপা: যে লক্ষ্য নিয়ে গ্লাসগো এসেছি সেটা এখনও পূরণ হয়নি। আর উপভোগের সময় কোথায়? আসল লড়াই ৩১ অক্টোবর। এখন শুধু প্র্যাকটিস আর প্র্যাকটিস। ওই দিন আমাকে সেরাটা দিতেই হবে।
প্র: ৩১ তারিখ ফাইনালে তিন নম্বরের মধ্যে থাকতে পারলে তো আপনার রিও অলিম্পিকের টিকিট পাকা। কতটা আশাবাদী আপনি?
দীপা: স্যরকে আমি কথা দিয়েছি, পদক জিতে ফিরবই। সামনে দুটো চ্যালেঞ্জ— প্রথম তিনে থেকে পদক জয় আর রিওর টিকিট জোগাড় করা।
প্র: কতটা আশাবাদী, সেটা কিন্তু বলছেন না।
দীপা: একানব্বইটা দেশ এখানে অংশ নিয়েছে। আমি তাদের মধ্যে সাত নম্বরে। কিন্তু ভল্টিং ইভেন্ট ছাড়া বাকি তিনটেয় (ফ্লোর এক্সারসাইজ, ব্যালান্স বিম, আনইভেন বার) আমার ফল প্রত্যাশা মতো হয়নি। আসলে আমাদের খেলাটা এ রকমই। দিনের দিন যে সেরাটা দিতে পারবে, সে-ই জিতবে। আমি কিন্তু আশাবাদী পদক নিয়ে ফিরবই। ৩১ অক্টোবর দিনটা আমারই হবে। লড়াই কঠিন। কিন্তু এই গ্লাসগোতেই কমনওয়েলথে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলাম। এ বার পাব না কেন?
প্র: সোমদেব দেববর্মনের পর আপনি ত্রিপুরার খেলাধুলোর ইতিহাসে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। কেমন লাগছে?
দীপা: সোমদেব তো যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। আমি কিন্তু ত্রিপুরা ছেড়ে যাইনি। ত্রিপুরাকে পরপর দুটো জাতীয় গেমসে পাঁচটা করে পদক দিয়েছি। (পাশে বসে থাকা কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী ফোনটা কেড়ে নিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘‘আমার ছাত্রীর কাছে কিন্তু অন্য রাজ্যের হয়ে গেমসে নামার কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব ছিল। ও কিন্তু ত্রিপুরা ছেড়ে যায়নি আমার কাছে অনুশীলন করবে বলে। বাংলা থেকেও প্রস্তাব ছিল।’’)
প্র: যে রাজ্যের হয়ে দশটা পদক পেলেন, তারা আপনাকে কত টাকা দিয়েছে?
দীপা: আমার কোচ বলবেন। (বিশ্বেশ্বর বললেন, ‘‘এক টাকাও নয়। তবে ওরা দীপাকে চাকরি দিয়েছে। প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’’)
প্র: গ্লাসগো কমনওয়েলথে ব্রোঞ্জ জেতায় কোনও পুরস্কার দিয়েছিল আপনার রাজ্য?
দীপা: হ্যাঁ, দিয়েছিল। প্র্যাকটিসের সময় হয়ে যাচ্ছে, এ বার ছেড়ে দিন। (আসলে জুটেছিল একটা ফুলের তোড়া, একটা ঘড়ি।)
প্র: এত বড় একটা নজির গড়লেন। তবু আপনার গলায় উচ্ছ্বাস নেই কেন?
দীপা: এখানে প্রথম তিনে থাকতে পারলে সমস্যা নেই। কিন্তু লড়াইটা প্রচণ্ড কঠিন। রুশ, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের ভাল ভাল জিমন্যাস্ট থাকবে। যদি কোনও কারণে মিস হয়ে যায় তা হলে আর একটা সুযোগ পাব। তবে সেই তালিকায় আমি এখনও রিজার্ভে আছি। চব্বিশ জন সুযোগ পাবে। আমি ছাব্বিশে আছি।
প্র: আপনার বাবা ভারোত্তোলনের কোচ। আপনি হঠাত্ জিমন্যাস্টিক্সে?
দীপা: আমার বাবাই তো স্যরের স্ত্রী সোমা নন্দীর কাছে সাইতে জিমন্যাস্টিক্স করতে পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকে এই খেলায় চলে আসা।
প্র: আপনার ফেভারিট অ্যাথলিট কে?
দীপা: যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাবি ডগলাস।