পুরনো বিদ্রোহ ও কোন্দল শুরু
রংপুরে ছাত্রদলের নয়া কমিটি থেকে ১০ জনের পদত্যাগ
স্টাফ রিপোর্টার.
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটি অনুমোদনের ২৪ ঘন্টা পার না হতেই নয়া কমিটি থেকে ১০ জন পদত্যাগ করেছেন। রোববার মধ্য রাতে রংপুর জেলা ও ছাত্রদলের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটি । এরপর দিন সোমবার দুপুরে রংপুর মহানগরীর ইঞ্জিনিয়রাপাড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান হিযবুল, সিনিয়র সহ সভাপতি মাহবুব হোসেন সুমন, সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম রিপন ও তৌহিদুল ইসলাম মুসা, যুগ্ম সম্পাদক মুনতাসির মুন্না, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত জীবন ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি মামুনুর রশিদ মুকুট, সহ-সভাপতি আবিদ হাসান গুড্ডু ও অহিদুজ্জামান মুরাদ পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত পদত্যাগকারী ছাত্রনেতারা অভিযোগ করেন, নতুন কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন না করে জুনিয়রদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় বিগত সময়ের আন্দোলনে যারা রাজপথে সংগ্রাম করেছে তাদেরকে যথাযথ পদে রাখা হয়নি। তাই ভারসাম্যহীন কমিটি থেকে তারা পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। এদিকে নতুন কমিটি থেকে হঠাৎ করেই এমন পদত্যাগের ঘোষণায় রংপুর ছাত্রদলের সেই পুরনো বিদ্রোহ ও কোন্দল আবার মাথা চাড়া দিয়েছে বলে মনে করছেন দলটির সিনিয়র নেতাকর্মীরা।
এদিকে রোরবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রংপুর বিভাগের ৭ জোনের কমিটি অনুমোদনের বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এতে রংপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি মনিরুজ্জামান হিযবুল, সিনিয়র সহসভাপতি মাহবুব হোসেন সুমন, সহসভাপতি হুমায়ূন কবির রিন্টু, জুবায়ের হাসান রুজু ,আশরাফুল আলম রিপন ও তৌহিদুল ইসলাম মুসা, সাধারণ সম্পাদক শরীফ নেওয়াজ জোহা, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ইমরান সুজন, যুগ্ম সম্পাদক শামিম আহমেদ লিয়ন, যুগ্ম সম্পাদক মুনতাসির মুন্না, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত জীবন ও রংপুর মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি নূর হাসান সুমন, সিনিয়র সহসভাপতি মামুনুর রশিদ মুকুট, সহসভাপতি আবিদ হাসান গুড্ডু, অহিদুজ্জামান মুরাদ, নোমান হাসান, ইমরান আলি শান্ত ও সিরাজদৌলা ডন, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম জীম, যুগ্ম সম্পাদক ইমরান খান সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান চৌধুরী রাজীব, প্রচার সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম তমালের নাম উল্লেখ্য করেন।
এদিকে, বিবাহিত ও অছাত্রদের নিয়ে ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিত কর্মীদের মূল্যায়ন না করায় জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেছেন। ফলে ছাত্রদল নেতা কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ যারা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলনে সংগ্রামে অংশ নিয়ে, জেল জুলুম গ্রেফতার নির্যাতন সহ্য করে এবং দলের কর্মকান্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া অনেক নেতা কর্মীকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে নব গঠিত জেলা ছাত্র দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুব হোসেন সুমন ও মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি নোমান হাসান অভিযোগ করে জানান, ‘রংপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়েছে নুর হোসেন সুমনকে। যিনি কখনই ছাত্রদলের কোনও মিছিলে মিটিংয়ে বা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকায় থাকেন, তিনি পেশায় অটো পার্টস ব্যবসায়ী ও বিবাহিত,অছাত্র। এ ছাড়া তার পিতা জাতীয় পার্টির নেতা ও এক ভাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আরেক ভাই রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক । তাকে কীভাবে ছাত্রদলের মহানগর কমিটির সভাপতি করা হলো তা বুঝতে পারছি না।’
একইভাবে জেলা ছাত্রদলের নব গঠিত কমিটির সাধারন সম্পাদক শরীফ নেওয়াজ জোহা, ১নং যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল্যাহ আল ইমরান সুজন ছাত্র দলের কোনও আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। আর প্রচার সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম তমালকে কেউ চেনেন না বলেও তাদের অভিযোগ। ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে অপরিচিতি ব্যক্তিদের ছাত্রদলের নেতা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ যারা দলের জন্য জেল জুলুম হুলিয়া মাথায় নিয়ে এখনও দলের জন্য কাজ করছেন তাদের কোনও মূল্যায়ন করা হয়নি। নাম প্রকাশে আরো কয়েক নেতা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদল তো আর প্রকৃত ছাত্রদের নেই। এখন অছাত্ররাই বড় বড় পদ পায়। তার উদাহরন মহানগর কমিটির সাধারন সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম জিম। যিনি পেশায় একজন ঠিকাদার ও বিবাহিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন