রাম মন্দির ও যোগব্যায়াম নিয়ে উগ্র হিন্দু নেতাদের আপত্তিকর মন্তব্য
(রেডিও তেহরান): ভারতের বিশ্ব
হিন্দু পরিষদ নেতা অশোক সিঙ্ঘল অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে বিতর্কিত
মন্তব্য করেছেন। বুধবার তিনি স্পষ্ট জানান, ‘এই মামলা আদালতের বাইরে
সমাধানের একটিই রাস্তা। তা হল রাম জন্মভুমি, কৃষ্ণ জন্মভূমি এবং কাশী
বিশ্বনাথ থেকে মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডকে নিজেদের দাবি প্রত্যাহার করতে
হবে।’
অশোক সিঙ্ঘল বলেছেন, ‘মুসলমান আদালতে এবং
বাইরে ভাই ভাই বলে চেঁচাচ্ছে, যদিও ওরা ভাই ভাই হতে পারে না। যদি তারা চায়,
আমাদের দেশে ভাই ভাইয়ের স্লোগান হৃদয়ে স্থায়ী হোক, তাহলে ওই তিন স্থান
থেকে নিজেদের দাবি ছেড়ে দিতে হবে।’
এই উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা বলেন, ‘আমরা
সাফ বলে দিয়েছি, ‘রাম জন্মভুমি, কৃষ্ণ জন্মভূমি এবং কাশী বিশ্বনাথ থেকে
নিজেদের দাবি প্রত্যাহার করে নিতে হবে।’
সিঙ্ঘলের দাবি, দেশে ত্রিশ হাজার মন্দির
ভাঙা হয়েছিল। আমরা লক্ষাধিক তৈরি করে নিয়েছি। অন্য মন্দির নিয়ে আমাদের কিছু
বলার নেই। কিন্তু এই তিন ধ্বংস হওয়া মন্দিরের জন্য আমাদের বুকে অপমানের
বিশাল পাথর চেপে রয়েছে।
হিন্দি গণমাধ্যম ‘আজতক’-এ এসংক্রান্ত
সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ‘আজতক’-এ প্রকাশিত অন্য এক সংবাদে বলা হয়েছে,
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেত্রী সাধ্বী প্রাচী হরিদ্বারে মুসলিমদের বিরুদ্ধে
বিতর্কিত মন্তব্য করে বলেছেন, এ দেশে যে ব্যক্তি যোগ ব্যায়াম করে, সে
কোনোদিন সন্ত্রাসী হতে পারে না। এ মন্তব্যের পাশাপাশি তিনি বলেছেন, নামাজ
পড়া কিছু ব্যক্তি সন্ত্রাসী হয়।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবারই সাধ্বী প্রাচী
বিতর্কিত মন্তব্য করে বলেন, ‘যোগের বিরোধিতা করা ব্যক্তিদের পাকিস্তানে চলে
যাওয়া উচিত। এ দেশে তাদের থাকার কোনো অধিকার নেই।’
সাধ্বী প্রাচীর বক্তব্য প্রসঙ্গে কংগ্রেস
মুখপাত্র সঞ্জয় ঝা’র মন্তব্য, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ যোগাভ্যাস করবেন
কি না, সেটা নিয়ে তাদের নিজের সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। বিজেপি
মানুষের ওপর গায়ের জোরেই যোগ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে।’
এর আগে বিজেপি এমপি যোগী আদিত্যনাথ যোগ
নিয়ে সূর্য নমস্কার প্রসঙ্গে বলেছিলেন, সূর্য নমস্কারের বিরোধীদের সাগরের
পানিতে ডুবে মরা উচিত।
প্রসঙ্গত, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’
বোর্ডের পক্ষ থেকে ‘যোগ’কে সরকারিভাবে উন্নীত করার পরিকল্পনাকে ‘সেকুলার
সংবিধানের লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। যোগ পালন, স্কুলে সূর্য নমস্কার
এবং বন্দেমাতরম শুরু করা আরএসএসের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা বলে মন্তব্য
করা হয়েছে।
যোগ এবং সূর্য নমস্কার হিন্দু ধর্মের
ক্রিয়াকলাপ এবং এটি মুসলমানদের মতাদর্শের বিরুদ্ধ বিষয় বলেও মুসলিম
পার্সোনাল ল’ বোর্ডের পক্ষ থেকে মন্তব্য করে এ নিয়ে মুসলিমদের সতর্ক থাকার
পরামর্শ দেয়া হয়। এর পরেই সবাধী প্রাচী একের পর এক বিতর্কিত ও তীব্র
আপত্তিকর মন্তব্য করে চলেছেন।#
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন