পলাশীর বিপর্যয়ের জন্য মূলত ব্রিটেনই দায়ী ছিল - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, ২৪ জুন, ২০১৫

পলাশীর বিপর্যয়ের জন্য মূলত ব্রিটেনই দায়ী ছিল

পলাশীর বিপর্যয়ের জন্য মূলত ব্রিটেনই দায়ী ছিল

পলাশীর যুদ্ধের শেষে মীরজাফর ও লর্ড ক্লাইভের সাক্ষাৎ এবং পাশে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব (আর্ট ছবি) পলাশীর যুদ্ধের শেষে মীরজাফর ও লর্ড ক্লাইভের সাক্ষাৎ এবং পাশে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব (আর্ট ছবি)
 (রেডিও তেহরান): আজ ২৩ জুন ঐতিহাসিক পলাশী ট্রাজেডি দিবস। ২৫৮ বছর আগে এ দিনে পলাশীর আম বাগানে ইংরেজদের সঙ্গে এক প্রহসনের যুদ্ধে বৃহত্তর 'বাঙ্গালা' তথা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব মির্জা মুহাম্মাদ সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয় ঘটে। ফলে অস্তমিত হয় বৃহত্তর বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্য।


ইরানি বংশোদ্ভূত ও শিয়া মুসলিম এই নবাবের বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ নবাবকে আজও শ্রদ্ধা জানায়। তার সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের কারোই স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। 

নানা ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবাবের সেনা বাহিনীর তুলনায় ইংরেজদের সেনা সংখ্যা ছিল অনেক কম। সেখানে বিশ্বাসঘাতকতা না হলে নবাবের বিজয় ছিল সুনিশ্চিত।

সে যুগে ইংরেজরা বাণিজ্যের অজুহাতে এবং ছলে-বলে কৌশলে বিশ্বের নানা দেশে সার্বিক কর্তৃত্ব ও উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিল। মোঘলদের দুর্বলতার সুযোগে তারা বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার পায় ভারতে। এরপর অর্থনৈতিক শোষণের পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতিতেও নাক গলাতে থাকে ইংরেজরা। তাদের ষড়যন্ত্রমূলক ও উস্কানিমূলক পদক্ষেপ ক্ষুব্ধ করেছিল স্বাধীনচেতা নবাব সিরাজকে। 

খ্রিস্টীয় ১৭৫৬ সনের ২০ জুন সিরাজ-উদ-দৌলা ইংরেজদের শিক্ষা দিতে ও তাদের দম্ভ কমাতে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করেন। কারণ, সামরিক আস্তানায় পরিণত হওয়া এ দুর্গ হয়ে পড়েছিল বাংলার স্বাধীনতার প্রতি মারাত্মক হুমকি। এ দুর্গের সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিলেন নবাব। কিন্তু ইংরেজকে তার এই আপত্তিকে অগ্রাহ্য করায় দুর্গটি দখল করতে বাধ্য হন নবাব সিরাজ। 

এ সময় জন জেপানিয়াহ হলওয়েল নামের এক ধূর্ত ইংরেজ 'কোলকাতার অন্ধকূপ হত্যা' নামের একটি আষাঢ়ে গল্প বানিয়ে নবাবকে গণহত্যাকারী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে। এই গাঁজাখুরি কাহিনীতে বলা হয় যে, ১৪৬ জন ইংরেজকে ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের একটি গর্তে রাখায় তারা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে। হলওয়েল নিজে ওই ঘটনায় বেঁচে যায় বলে দাবি করে।

গবেষক ও ঐতিহাসিকরা এই কাহিনীকে একটি পুরোপুরি মিথ্যা কাহিনী হিসেবে অস্বীকার করে আসছেন। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তার লেখা "An Advanced History of India" শীর্ষক বইয়ে অন্ধকূপ হত্যা বা 'ব্ল্যাক হোল স্টোরি'-কে পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।

ব্রিটিশ পণ্ডিত ও গবেষক জে.এইচ লিটলও "The 'Black Hole'—The Question of Holwell's Veracity" বা 'অন্ধকূপ হত্যা- হলওয়েলের বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্ন' শীর্ষক প্রবন্ধে হলওয়েলের বর্ণিত এই কাহিনীকে 'বড় ধরনের ধোঁকা' বলে মন্তব্য করেছেন। ভারতবর্ষে সামরিক হস্তক্ষেপের অজুহাত তৈরি করতে ও এই লক্ষ্যে ব্রিটেনের লোকদের ক্ষেপিয়ে তোলার উদ্দেশ্যেই এই কাহিনী রচনা করা হয়েছিল বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। 

আলীবর্দী খাঁর পর তার দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সিংহাসনে বসেন। তখন তার বয়স মাত্র ২২ বা মতান্তরে ১৮ বছর। ইংরেজরা ছাড়াও তরুণ নবাবের শত্রু ছিলেন রাজ সিংহাসনের জন্য লালায়িত মীর জাফর ও খালা ঘষেটি বেগম। ইংরেজরা তাদের সাথে যোগাযোগ করে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা পাকাপোক্ত করে।

ষড়যন্ত্র কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ রাজদরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট' নিযুক্ত করেন। এ ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়ক মীর জাফর তা আঁচ করতে পেরে নবাব তাকে প্রধান সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ করে আব্দুল হাদীকে সেনাপতি করেন। কিন্তু কূটচালে পারদর্শী মীর জাফর পবিত্র কুরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করায় নবাবের মন গলে যায় এবং মীর জাফরকে প্রধান সেনাপতি পদে পুনর্বহাল করেন। সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের মতে, এই ভুল সিদ্ধান্তই নবাব সিরাজের জন্য ‘কাল' হয়ে দাঁড়ায়।

[ মুসলিম বিশ্বে কুরআনকে অপব্যবহারের রাজনীতি শুরু করেছিল ইসলামের ইতিহাসের ম্যাকিয়াভেলি তথা মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান ও তার সুযোগ্য উপদেষ্টা আমর ইবনে আস। সিফফিনের যুদ্ধে আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)'র সেনাদলের হাতে যখন মুয়াবিয়ার বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে উঠেছিল তখন আমর ইবনে আস মুয়াবিয়ার একদল সেনার বর্শা বা তরবারির আগায় কুরআনের পৃষ্ঠা বেঁধে আলীর সেনাদলকে বিভ্রান্ত করার কৌশল প্রয়োগ করে। এ কৌশল সফল হয়েছিল। হযরত আলী যতই বোঝাচ্ছিলেন যে এটা হচ্ছে ধোঁকাবাজি, ওরা তথা মুয়াবিয়া-চক্র প্রথমেই কুরআনের শান্তির বাণীকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, কিন্তু বিভ্রান্ত সরলমনা সেনারা যুদ্ধ না থামালে উল্টো আলীকেই হত্যা করবে বলে হুমকি দিতে থাকে। কবি নজরুল এ প্রসঙ্গে এনেছেন তার কবিতায় এভাবে:
এই ধূর্ত ও ভোগীরাই তলোয়ারে বেঁধে কোরআন,
আলী'র সেনারে করেছে সদাই বিব্রত পেরেশান ! ] 

ইংরেজ কর্তৃক পূর্ণিয়ার শওকত জঙ্গকে সাহায্য করা, মীরজাফরের সিংহাসন লাভের বাসনা ও ইংরেজদের পুতুল নবাব বানানোর পরিকল্পনা, ঘষেটি বেগমের সাথে ইংরেজদের যোগাযোগ, নবাবের নিষেধ সত্ত্বেও ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সংস্কার, বিদ্রোহী কৃষ্ণ বল্লভকে ফোর্ট উইলিয়ামে আশ্রয় দান প্রভৃতি কারণে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে সকাল প্রায় ৮ টার দিকে ইংরেজ ও নবাবের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। 

মীর মর্দান ও মোহন লালের বীরত্ব সত্ত্বেও জগৎশেঠ, রায় দুর্লভ, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ কুচক্রী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীদের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে নবাবের পরাজয় ঘটে। ফলে বাংলার স্বাধীনতা প্রায় দু'শ বছরের জন্য অস্তমিত হয়। 

নবাবের পক্ষে ছিল ৫০ হাজার বা মতান্তরে এক লাখ সেনা আর ইংরেজদের পক্ষে মাত্র ৩ হাজার সৈন্য। কিন্তু প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী মীরজাফর, রায় দুর্লভ ও খাদেম হোসেনের অধীনে নবাব বাহিনীর একটি বিরাট অংশ পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কার্যত কোনো অংশগ্রহণই করেনি। 

ঐতিহাসিক ড. রমেশ চন্দ্র লিখেছেন, ‘নবাব ষড়যন্ত্রকারীদের গোপন ষড়যন্ত্রের কথা জানার পর যদি মীর জাফরকে বন্দি করতেন, তবে অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারী ভয় পেয়ে যেতো এবং ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলে পলাশীর যুদ্ধ হতো না।' 

ঘৃণ্য মীর জাফরের কুষ্ঠরোগে মারা যায়। ইংরেজরা প্রথমদিকে ইয়ার লতিফকে হাত করে তাকে নবাব বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু পরে তারা মীরজাফরকেই তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য বেশি উপযোগী ভেবে মীরজাফরের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে এগিয়ে যায়।

বাংলাপিডিয়ায় পলাশীর যুদ্ধের পটভূমি ও যুদ্ধের বিবরণ সম্পর্কে লেখা হয়েছে:

"১৭৫৬ সালের এপ্রিল মাসে সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে নওয়াব এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে বিরোধ অনিবার্য হয়ে পড়ে। নবীন নওয়াব প্রথম বারের মত বাংলায় কোম্পানির অবৈধ কার্যক্রমের তীব্র প্রতিবাদ জানান। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাঁর তিনটি প্রধান অভিযোগ ছিল: অনুমতি ব্যতীত ফোর্ট উইলিয়মে প্রাচীর নির্মাণ ও সংস্কার, ব্যক্তিগত অবৈধ ব্যবসা এবং কোম্পানির কর্মচারীদের দ্বারা দস্তকের নির্লজ্জ অপব্যবহার এবং নওয়াবের অবাধ্য প্রজাদের বেআইনিভাবে আশ্রয় প্রদান। উল্লিখিত অভিযোগসমূহের মীমাংসার জন্য পদক্ষেপ নিতে নওয়াব ব্রিটিশদের আহবান জানান এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিরসনের জন্য কলকাতায় অনেক প্রতিনিধিদল পাঠান। নওয়াব কোম্পানির নিকট কৃষ্ণদাসকে তাঁর হাতে সমর্পণের দাবি করেন এবং নতুন প্রাচীর ভেঙে ফেলতে ও কলকাতার চারদিকের পরিখা ভরাট করতে নির্দেশ দেন। নওয়াবের যে বিশেষ দূত এ সকল দাবি সম্বলিত চিঠি নিয়ে কলকাতায় যান ইংরেজরা তাকে অপমানিত করে। কলকাতার ইংরেজ গভর্নর রজার ড্রেক যে চরম অপমানজনকভাবে নওয়াবের প্রতিনিধি নারায়ণ সিংহকে বিতাড়িত করে তা সবিস্তার শুনে নওয়াব অত্যন্ত রাগান্বিত হন। নওয়াব তৎক্ষণাৎ কাসিমবাজার কুঠি অবরোধের আদেশ দেন। কুঠির প্রধান আত্মসমর্পণ করে কিন্তু কলকাতার ইংরেজ গভর্নর অবাধ্যতা ও একগুঁয়েমি প্রদর্শন করেন। ফলে নওয়াব কলকাতা অভিযান করে তা দখল করে নেন। এ পরাজয়ের পর বাংলায় কোম্পানির পুনঃপ্রতিষ্ঠা দুই উপায়ে করা সম্ভবপর ছিল, হয় নবাবের নিকট আত্মসমর্পণ নচেৎ পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে বল প্রয়োগ। বাংলায় যে সকল ব্রিটিশ ছিল তারা অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর জন্য মাদ্রাজের ফোর্ট সেন্ট জর্জে জরুরি খবর পাঠায়। সেখান হতে রবার্ট ক্লাইভ ও এডমিরাল ওয়াটসনের অধীনে একদল ব্রিটিশ সৈন্য বাংলায় পাঠানো হয়। তারা ১৭৫৭ সালের জানুয়ারি মাসে কলকাতা পুনরুদ্ধার করে এবং নওয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের সঙ্গে আলীনগরের সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন। ... 

কিন্তু ইংরেজরা সন্ধির শর্তাদি অগ্রাহ্য করতে থাকায় যুদ্ধের চাপা উত্তেজনা চলতে থাকে। তারা নওয়াবের প্রতি বিরূপ পারিষদদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। মুর্শিদাবাদ দরবারে কিছু প্রভাবশালী অমাত্য নওয়াব সিরাজউদ্দৌলার প্রতি যে অসন্তুষ্ট ছিল তা অস্বীকার করা যায় না। নওয়াবকে উৎখাত করার উদ্দেশ্যে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে। তবে ব্রিটিশগণ সক্রিয়ভাবে এ ষড়যন্ত্রে জড়িত না হলে আদৌ কোন পলাশী ‘বিপ্লব’ সংঘটিত হওয়া সম্ভব হতো কিনা তা বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। .... 

অনেক ঐতিহাসিক যদিও দৃঢ়ভাবে মত পোষণ করেন যে, ভারতীয় ষড়যন্ত্রকারীগণই সহযোগিতা লাভের আশায় পরিকল্পিত ‘বিপ্লব’ ঘটানোর জন্য ব্রিটিশদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তবুও দলিলাদির সঠিক ও সতর্ক বিশ্লেষণে সন্দেহাতীত ভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ব্রিটিশরাই তাদের পরিকল্পিত ‘বিদ্রোহ’ বাস্তবায়নের জন্য নওয়াব দরবারের বিরুদ্ধবাদীদের সমর্থন আদায়ের জন্য যোগাযোগ করার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ….  

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সকাল ৮টার দিকে যুদ্ধ আরম্ভ হয়। মীর মর্দান, মোহন লাল, খাজা আব্দুল হাদী খান, নব সিং হাজারী প্রমুখের অধীন নওয়াব সেনা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ চালায়, অন্যদিকে মীরজাফর, ইয়ার লতিফ এবং রায় দুর্লভরামের অধীন নওয়াবের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ সেনা নিষ্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে ও পরিস্থিতি অবলোকন করে। এমনকি বেশ কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধের পরও চূড়ান্ত কিছু ঘটে নি। ক্লাইভ এমন প্রতিরোধ পাবেন আশা করেন নি এবং এই মর্মে জানা যায় যে, ‘দিনে যথাসম্ভব তীব্র যুদ্ধ চালিয়ে’ ক্লাইভ রাতের অন্ধকারে কলকাতা পালিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছিলেন। কিন্তু বেলা তিনটার দিকে কামানের গোলা মীর মর্দানকে আঘাত হানে এবং এতে তাঁর মৃত্যু হয়। 

মীর মর্দানের মৃত্যুতে হতভম্ব নওয়াব মীরজাফরকে ডেকে পাঠান এবং তাঁর জীবন ও সম্মান রক্ষার জন্য তাকে সনির্বন্ধ অনুরোধ করেন। মীরজাফর নওয়াবকে ঐ দিনের মতো যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং পরদিন সকালে নতুন উদ্যমে যুদ্ধ শুরু করার পরামর্শ দেয়, আর এ খবর শীঘ্র ক্লাইভের নিকট পৌঁছানো হয়। পরামর্শমত নওয়াবের সেনানায়কেরা পিছুতে থাকলে ইংরেজ সেনারা নতুন করে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায় এবং ফলে নওয়াব বাহিনী বিশৃঙ্খলভাবে যত্রতত্র পালিয়ে যায়। অপরাহ্ণ ৫টার দিকে যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় এবং বিজয়ী ক্লাইভ বীরদর্পে তখনই মুর্শিদাবাদ যাত্রা করেন। জন উড নামে জনৈক ব্রিটিশ সৈন্য পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিল, তার মতে ‘এটাই ছিল সেই বিশিষ্ট ও চূড়ান্ত যুদ্ধ যেখানে কোন ব্যাপক আক্রমণ ছাড়াই রাজ্য জয় করা হয়’। 

ষড়যন্ত্র এবং পরবর্তীকালে ‘পলাশী-বিপ্লব’ ইংরেজদের দ্বারা শুধু উদ্ভাবিত ও উৎসাহিতই হয় নি, বরং যুদ্ধের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তারা দেশিয় ষড়যন্ত্রকারীদের ব্রিটিশ পরিকল্পনা সমর্থন করতে প্রলুব্ধ করে। সাধারণ ধারণা - ষড়যন্ত্রটি ছিল ভারতজাত, এর পেছনে ব্রিটিশদের পরিকল্পিত কোন কূটকৌশল ছিল না, ষড়যন্ত্রের মূলে বা এর উত্তরণে তাদের অতি সামান্য ভূমিকা ছিল কিংবা কোন ভূমিকাই ছিল না, এটি ছিল বাংলার ‘অভ্যন্তরীণ সমস্যা’ যা ‘অবশ্যম্ভাবীভাবে ব্রিটিশদের জড়ায়’ এবং বাংলায় ব্রিটিশ বিজয় ছিল প্রায় সম্পূর্ণ আকস্মিক, এ কথাগুলি এখন ধোপে টেকে না। ইংরেজরা তাদের ষড়যন্ত্রের জোরে ও সিরাজউদ্দৌলার সভাসদদের বিশ্বাসঘাতকতার দরুণ পলাশীতে বিজয়ী হয়। নওয়াবের পরাজয় ছিল রাজনৈতিক, সামরিক নয়।"


পলাশীর বিপর্যয়ের ফলে গোটা ভারতবর্ষে ব্রিটেনের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। ভারতে নানা সময়ে ব্রিটেনের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ এবং শত্রুতামূলক নানা নীতির কারনে কোটি কোটি বাঙ্গালীসহ অন্তত দশ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। দেশীয় শিল্প, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও সমাজ-ব্যবস্থারও হয়েছে অপূরণীয় ক্ষতি। বিশেষ করে, মুসলমানরা হয়ে পড়ে সবচেয়ে দরিদ্র ও অনগ্রসর। অথচ তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহর বাংলার মুর্শিদাবাদসহ ভারতের নানা শহরের সম্পদ লুট করে ইংরেজরা সংগ্রহ করেছে তাদের দেশকে সম্পদশালী করার নানা উপাদান।   # 

রেডিও তেহরান/এএইচ/২৩
সূর্য না ডোবার দেশে রোজা পালন
প্রকাশ : ২৩ জুন, ২০১৫
চলছে সিয়াম সাধনার মাস। মুসলমানদের অতি পবিত্রতার মাস। রমজান মাসের ৩০ দিনের প্রতিদিনই সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে সিয়াম সাধনা করার নিয়ম রয়েছে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা তা পালন করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নিশীথ সূর্যের দেশ হিসেবে খ্যাত বা পৃথিবীর উত্তর মেরুর যেসব দেশে গ্রীষ্মকালে কখনোই সূর্য ডোবে না সেখানকার মুসলমানরা কীভাবে রোজা রাখেন? রমজান মাস যেহেতু চন্দ্রপঞ্জিকার ওপর নির্ভর করে চলে তাই কয়েক বছর পরপরই ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে রোজা শুরু হয়। এ বছরের মতো বিদায়ী গ্রীষ্মে সর্বশেষ রোজা শুরু হয়েছিল আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। তবে সেসময় এমন প্রশ্নের সম্মুখিন কাউকে হতে হয়নি। কারণ ওই সময় উত্তর মেরুর দেশগুলোতে মুসলমানদের খুব একটা বসবাস ছিল না। নব্বই দশকের শুরু থেকেই সোমালিয়া, ইরাক, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলিম সুইডেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডের মতো উত্তর মেরুর দেশগুলোতে অভিবাসী হতে থাকে। এ দেশগুলোতে বছরের প্রায় ছয় মাস কখনোই সূর্য অস্ত যায় না। এর ফলে দেশগুলোতে বর্তমানে অবস্থানরত মুসলিমদের রোজা পালন নিয়ে একটি নির্মম বাস্তবতা ও নৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড় করায়। ওখানকার মুসলমানরা তাহলে কীভাবে রোজা রাখছেন? সম্প্রতি এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ইন্দোনেশিয়ার এক সাংবাদিক নরওয়ের সর্ব উত্তরের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ট্রোমসো যান। ওখানকার মুসলমানদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তিনি জানতে পারেন কীভাবে তারা মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিল রেখে সিয়াম সাধনা করছেন। ট্রোমসো শহরটি ভৌগলিকভাবে আর্কটিক সার্কেল বা সুমেরু বৃত্তের প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। শহরের চারদিক বরাফাবৃত পর্বতমালা ও সমুদ্রের খাঁড়ি দিয়ে ঘেরা। প্রতি বছর মে মাসের শেষদিক থেকে শুরু করে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত শহরটির বাসিন্দারা ‘মিডনাইট সান’ বা ‘মধ্যরাতে সুর্য’ দেখার এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। সময়ের হিসেব কষে ঠিক এ বছরই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রোমসোর মুসলিম সম্প্রদায় পুরো রমজানে রাতের দেখা পাবেন না। তাহলে কীভাবে তারা রোজা রাখছেন? ১৯৮৬ সালেও এই একই সময়ে রোজা এসেছিল। কিন্তু সেসময় ট্রোমসো শহরে কোনো মুসলিমের বসবাস ছিল না বলে প্রশ্নটি সামনে আসেনি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলিমদের আগমনে বর্তমানে ট্রোমসো মুসলমানদের শহরে পরিণত হয়েছে। সেখানকার অধিবাসীরা জানিয়েছেন, সুর্য এখানে কখনোই ডোবে না। ২৪ ঘন্টাই আকাশের মাঝখানে অবস্থান করে। তাই এ শহরে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হিসেব করে রোজা রাখা কখনোই সম্ভব নয়। এখানকার মুসলমানরা নিকটবর্তী এমন কোনো দেশের সঙ্গে সময় মিলিয়ে রোজা রাখেন যেখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়। আবার সৌদি আরবের মক্কা নগরীর সময়ের সঙ্গে মিল রেখে দিনের হিসাব করেও রোজা রাখার নিয়ম রয়েছে। তবে সেটা তারা সম্মিলিতভাবে আলোচনা করে নির্ধারন করেন। এ বছর সৌদি আরবের মক্কার সময়ের সঙ্গে মিল রেখেই তারা রোজা পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। মক্কায় যদি ভোর পাঁচটায় সূর্যোদয় হয় তাহলে ট্রোমসোর মুসলিমরাও নরওয়ের স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা থেকেই দিনের সময় গণনা শুরু করবেন। মক্কার দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য খুবই ভারসাম্যপূর্ণ বলেই তারা এ নিয়মটি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু রোজা নয়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ও তারা এভাবেই বিন্যস্ত করে পালন করছেন। এ তো গেল দিনের কথা। ট্রোমসোর মুসলমানদের এর আগেও অনেকবার রোজা রাখার জন্যে সময় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার প্রমাণ দিতে হয়েছে। শীতকালে তাদেরকে এর ঠিক উল্টো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। কারণ শীতকালে এখানে সারাক্ষণই রাত থাকে। সূর্যের দেখা মেলে না প্রায় ছয় মাস। তাই শীতকালের জন্যেও তারা মক্কার নিয়মই অনুসরণ করেন। গ্রীষ্মকালে যেমন সূর্য অস্ত যায় না তেমনি শীতকালে সূর্যোদয় হয় না। তাই মক্কার সময় অনুসরণ করাটাই তারা শ্রেয় মনে করেন।
<a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'><img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&n=acd94d5f' border='0' alt='' /></a>
পৃথিবী দুই মেরুতে বিভক্ত। দুই মেরুতে দিন ও রাতের হিসেব একেবারেই আলাদা। দুই মেরুতেই দিন অথবা রাত খুব দীর্ঘ হয়। এমনও দেখা যায়, টানা ছয় মাস ঝলমলে দিন। ২৪ ঘণ্টা সূর্য এক দিগন্ত থেকে আরেক দিগন্তে ছুটে যায়। কিন্তু অস্ত যাবার কোনো তাড়া নেই তার। আবার ছয় মাস অতল গহ্বরে ডুব। ছয় মাস রাত।ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক (গ্রিনল্যন্ড), রাশিয়া, আইসল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার কিছু অংশে গ্রীষ্মকালের একটি বড় সময় সূর্য কখনোই অস্ত যায় না। এটাকে নিশীথ সূর্য নামে অভিহিত করা হয়। কুমেরু বৃত্তের দক্ষিণ মেরুতে কোনো স্থায়ী বসতি না থাকায় সুমেরু বৃত্তের উত্তরাঞ্চলের মানুষরা সীমিত আকারে এ ঘটনার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। ফিনল্যান্ডের একেবারে উত্তর প্রান্তে ৭০ দিনেরও বেশি সময় ধরে সূর্য ডোবে না। অপর দিকে ইউরোপের সর্ব উত্তর প্রান্ত নরওয়ের স্বালবার্ড অঞ্চলে ১৯ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চার মাসের বেশি সময় সূর্যাস্ত হয় না। কোনো কোনো জায়গায় একটানা প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত সূর্য আকাশে দৃশ্যমান থাকে। এসব অঞ্চলে খুব বেশি মুসলমান বসবাস না করলেও যারা থাকেন তারা মূলত মক্কা নগরীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নামাজ পড়েন এবং রোজা পালন করেন।এফ আই দীপু
- See more at: http://www.jugantor.com/oneday-everyday/2015/06/23/283102#sthash.u78hBswy.dpuf
সূর্য না ডোবার দেশে রোজা পালন
প্রকাশ : ২৩ জুন, ২০১৫
চলছে সিয়াম সাধনার মাস। মুসলমানদের অতি পবিত্রতার মাস। রমজান মাসের ৩০ দিনের প্রতিদিনই সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে সিয়াম সাধনা করার নিয়ম রয়েছে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা তা পালন করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নিশীথ সূর্যের দেশ হিসেবে খ্যাত বা পৃথিবীর উত্তর মেরুর যেসব দেশে গ্রীষ্মকালে কখনোই সূর্য ডোবে না সেখানকার মুসলমানরা কীভাবে রোজা রাখেন? রমজান মাস যেহেতু চন্দ্রপঞ্জিকার ওপর নির্ভর করে চলে তাই কয়েক বছর পরপরই ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে রোজা শুরু হয়। এ বছরের মতো বিদায়ী গ্রীষ্মে সর্বশেষ রোজা শুরু হয়েছিল আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। তবে সেসময় এমন প্রশ্নের সম্মুখিন কাউকে হতে হয়নি। কারণ ওই সময় উত্তর মেরুর দেশগুলোতে মুসলমানদের খুব একটা বসবাস ছিল না। নব্বই দশকের শুরু থেকেই সোমালিয়া, ইরাক, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলিম সুইডেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডের মতো উত্তর মেরুর দেশগুলোতে অভিবাসী হতে থাকে। এ দেশগুলোতে বছরের প্রায় ছয় মাস কখনোই সূর্য অস্ত যায় না। এর ফলে দেশগুলোতে বর্তমানে অবস্থানরত মুসলিমদের রোজা পালন নিয়ে একটি নির্মম বাস্তবতা ও নৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড় করায়। ওখানকার মুসলমানরা তাহলে কীভাবে রোজা রাখছেন? সম্প্রতি এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ইন্দোনেশিয়ার এক সাংবাদিক নরওয়ের সর্ব উত্তরের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ট্রোমসো যান। ওখানকার মুসলমানদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তিনি জানতে পারেন কীভাবে তারা মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিল রেখে সিয়াম সাধনা করছেন। ট্রোমসো শহরটি ভৌগলিকভাবে আর্কটিক সার্কেল বা সুমেরু বৃত্তের প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। শহরের চারদিক বরাফাবৃত পর্বতমালা ও সমুদ্রের খাঁড়ি দিয়ে ঘেরা। প্রতি বছর মে মাসের শেষদিক থেকে শুরু করে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত শহরটির বাসিন্দারা ‘মিডনাইট সান’ বা ‘মধ্যরাতে সুর্য’ দেখার এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। সময়ের হিসেব কষে ঠিক এ বছরই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রোমসোর মুসলিম সম্প্রদায় পুরো রমজানে রাতের দেখা পাবেন না। তাহলে কীভাবে তারা রোজা রাখছেন? ১৯৮৬ সালেও এই একই সময়ে রোজা এসেছিল। কিন্তু সেসময় ট্রোমসো শহরে কোনো মুসলিমের বসবাস ছিল না বলে প্রশ্নটি সামনে আসেনি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলিমদের আগমনে বর্তমানে ট্রোমসো মুসলমানদের শহরে পরিণত হয়েছে। সেখানকার অধিবাসীরা জানিয়েছেন, সুর্য এখানে কখনোই ডোবে না। ২৪ ঘন্টাই আকাশের মাঝখানে অবস্থান করে। তাই এ শহরে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হিসেব করে রোজা রাখা কখনোই সম্ভব নয়। এখানকার মুসলমানরা নিকটবর্তী এমন কোনো দেশের সঙ্গে সময় মিলিয়ে রোজা রাখেন যেখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়। আবার সৌদি আরবের মক্কা নগরীর সময়ের সঙ্গে মিল রেখে দিনের হিসাব করেও রোজা রাখার নিয়ম রয়েছে। তবে সেটা তারা সম্মিলিতভাবে আলোচনা করে নির্ধারন করেন। এ বছর সৌদি আরবের মক্কার সময়ের সঙ্গে মিল রেখেই তারা রোজা পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। মক্কায় যদি ভোর পাঁচটায় সূর্যোদয় হয় তাহলে ট্রোমসোর মুসলিমরাও নরওয়ের স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা থেকেই দিনের সময় গণনা শুরু করবেন। মক্কার দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য খুবই ভারসাম্যপূর্ণ বলেই তারা এ নিয়মটি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু রোজা নয়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ও তারা এভাবেই বিন্যস্ত করে পালন করছেন। এ তো গেল দিনের কথা। ট্রোমসোর মুসলমানদের এর আগেও অনেকবার রোজা রাখার জন্যে সময় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার প্রমাণ দিতে হয়েছে। শীতকালে তাদেরকে এর ঠিক উল্টো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। কারণ শীতকালে এখানে সারাক্ষণই রাত থাকে। সূর্যের দেখা মেলে না প্রায় ছয় মাস। তাই শীতকালের জন্যেও তারা মক্কার নিয়মই অনুসরণ করেন। গ্রীষ্মকালে যেমন সূর্য অস্ত যায় না তেমনি শীতকালে সূর্যোদয় হয় না। তাই মক্কার সময় অনুসরণ করাটাই তারা শ্রেয় মনে করেন।
<a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'><img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&n=acd94d5f' border='0' alt='' /></a>
পৃথিবী দুই মেরুতে বিভক্ত। দুই মেরুতে দিন ও রাতের হিসেব একেবারেই আলাদা। দুই মেরুতেই দিন অথবা রাত খুব দীর্ঘ হয়। এমনও দেখা যায়, টানা ছয় মাস ঝলমলে দিন। ২৪ ঘণ্টা সূর্য এক দিগন্ত থেকে আরেক দিগন্তে ছুটে যায়। কিন্তু অস্ত যাবার কোনো তাড়া নেই তার। আবার ছয় মাস অতল গহ্বরে ডুব। ছয় মাস রাত।ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক (গ্রিনল্যন্ড), রাশিয়া, আইসল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার কিছু অংশে গ্রীষ্মকালের একটি বড় সময় সূর্য কখনোই অস্ত যায় না। এটাকে নিশীথ সূর্য নামে অভিহিত করা হয়। কুমেরু বৃত্তের দক্ষিণ মেরুতে কোনো স্থায়ী বসতি না থাকায় সুমেরু বৃত্তের উত্তরাঞ্চলের মানুষরা সীমিত আকারে এ ঘটনার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। ফিনল্যান্ডের একেবারে উত্তর প্রান্তে ৭০ দিনেরও বেশি সময় ধরে সূর্য ডোবে না। অপর দিকে ইউরোপের সর্ব উত্তর প্রান্ত নরওয়ের স্বালবার্ড অঞ্চলে ১৯ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চার মাসের বেশি সময় সূর্যাস্ত হয় না। কোনো কোনো জায়গায় একটানা প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত সূর্য আকাশে দৃশ্যমান থাকে। এসব অঞ্চলে খুব বেশি মুসলমান বসবাস না করলেও যারা থাকেন তারা মূলত মক্কা নগরীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নামাজ পড়েন এবং রোজা পালন করেন।এফ আই দীপু
- See more at: http://www.jugantor.com/oneday-everyday/2015/06/23/283102#sthash.u78hBswy.dpuf

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here