শত্রুরা হুমকি দিলেও আজ পর্যন্ত তারা হামলার সাহস পায়নি: ইরানের প্রেসিডেন্ট
(রেডিও তেহরান): ইরানের
প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, তার দেশের সেনাবাহিনীর লক্ষ্য স্থায়ী
শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তিনি ইরানের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ
কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে এ কথা বলেছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরানের
সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা ছাড়াও আঞ্চলিক শান্তি
প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। প্রেসিডেন্ট রুহানি দেশ
প্রতিরক্ষায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা এবং সদা প্রস্তুত থাকার কথা
উল্লেখ করে বলেছেন, আমাদের শক্তিশালী বাহিনী থাকার কারণে শত্রুরা হামলার
হুমকি দিলেও তারা আজ পর্যন্ত হামলার সাহস পায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক ও রাজনৈতিক
ক্ষেত্রে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান মধ্যপ্রাচ্যের অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি
দেশ। ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের পর ইরান সামরিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনটি মূল
নীতি অনুসরণ করে আসছে। এ তিন মূল নীতি হচ্ছে, প্রথমত আত্মসম্মানবোধ,
দ্বিতীয়ত দূরদর্শিতা ও কল্যাণ চিন্তা এবং তৃতীয়ত যৌক্তিক কূটনৈতিক তৎপরতা
ও প্রতিরক্ষামূলক সামরিক ব্যবস্থা।
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ইরান পারস্পরিক সম্মান ও
সহযোগিতা এবং গঠনমূলক সংলাপের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার
বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। এ নীতির আলোকে ইরান একদিকে নিজ জাতীয় স্বার্থ
রক্ষার পাশাপাশি অন্য দেশের অধিকার ও স্বার্থের বিষয়টিকেও বিশেষভাবে
গুরুত্ব দেয়। বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য অন্য দেশের সঙ্গে
ইরানের সহযোগিতার ধরন থেকে বোঝা যায়, এ অঞ্চলের সব দেশের স্বার্থকে ইরান
কতখানি গুরুত্ব দেয়।
নিজের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার
জন্য সামরিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ইরান ব্যাপক শক্তি অর্জন করেছে। একই
সঙ্গে ইরানের শক্তি সঞ্চয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা
প্রতিষ্ঠা এবং সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলা করা। এ ছাড়া, এ অঞ্চলে টেকসই
শান্তি প্রতিষ্ঠাও ইরানের প্রতিরক্ষা নীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
আন্তর্জাতিক পানি সীমায়ও ইরানের
সেনাবাহিনীর শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে। ইরান দক্ষিণের ওমান এবং
উত্তরের রাশিয়াসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার মাধ্যমে
আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মজলুমের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। এ
ছাড়া, ইরান এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবেলায়ও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে
তুলেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট সহিংসতা ও উগ্র
সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক জোট গঠনের প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। এ লক্ষ্যে
তিনি জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ‘সহিংসতা ও উগ্রবাদমুক্ত বিশ্ব’
শীর্ষক একটি প্রস্তাব পাশের আহবান জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট রুহানির এ
প্রস্তাব থেকে এ অঞ্চলে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইরানের সশস্ত্র
বাহিনীর নীতি আদর্শের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আইএসআইএল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে
ইরাক ও সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে ইরান। কারণ এ সন্ত্রাসীরা সমগ্র
মধ্যপ্রাচ্যকে মারাত্মক হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর
ক্রমবর্ধমান শক্তি এ অঞ্চলের সব দেশের জন্য বন্ধুত্বের বার্তা বয়ে এনেছে
এবং ইরান কোনো দেশের জন্যই হুমকি নয়। অথচ শত্রুরা ইরানের প্রতিরক্ষা
শক্তিকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি এ অঞ্চলে ইরানের শান্তিকামী
নীতিকে ভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। #
রেডিও তেহরান/আরএইচ/২৮
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন