গণতন্ত্র ও ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মুসলিম বিশ্বের সম্পর্ক কেমন-voabangla
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশ সম্পূর্নভাবে বন্ধ করার প্রস্তাব করে রিপাবলিকান দলের এগিয়ে থাকা প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প মুসলমানদের সম্পর্কে তার চিন্তা ভাবনা ও অবস্থান পরিস্কার করেন।
‘আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই’ বারবার একথা উল্লেখ করে, ৯-১১ এর সন্ত্রাসী হামলার উদাহরণ টেনে ট্রাম্প বলেন মুসলমানেরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে চায়।
মুসলমানদের বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থানের কারনে রিপাবলিকান দলটির অবস্থান মুসলমান ও আমেরিকান মুসলমানদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এতে করে ডেমোক্রেটদের মধ্যেও শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান।
মুসলমান বিরোধী কথাবার্তার জবাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা।
তিনি বলেন, “যখন রাজনীতিকরা মুসলমানদেরকে অপমান করে কথা বলেন, যখন মসজিদে হামলা করা হয়, কোনো বাচ্চাকে নাম ধরে ডাকা হয়—তাতে আমরা অনিরাপদ বোধ করি”।
মঙ্গলবার ষ্টেট অব ইউনিয়ন ভাষণেও তিনি বলেন, “এটি ভুল, বিশ্বের কাছে এতে আমরা খাটো হই”।
বিতর্কের খাতিরে এ নিয়ে মুসলমানেরা কি ভাবছেন?
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ফাইসাল আব্দুল রউফ বলেন, “ইমলামি আইনের ভিত্তি হচ্ছে গনতন্ত্র”।
“স্বাধীনতার ঘোষণা ইসলামি আইনের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ন। নির্বাচনসহ সকল ক্ষেত্রে আমাদের শাষকেরা সেইসব নীতিমালা অনুসরণ করে চলেন।
মুসলমান-পশ্চিমি সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে দা কর্ডোবা ইনিশিয়েটিভ নামে একটি প্রতিষ।ঠান গড়ে তোলেন ফাইসাল আব্দুল রউফ। তার বই Defining Islamic Statehood, তে তিনি আমেরকার মুসলমানদের জীবন তুলে ধরেন।
যুক্তরাষ্ট্র জন্মগ্রহন করা ও বেড়ে ওঠা এই ইমাম ফাইসাল বলেন, “বহু মুসলমান মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস তাদের জন্যে তারা যেসব দেশ থেকে এসেছেন সে সব দেশের তুলনায় অনেক বেশী ইসলামি পরিবেশ দেয়”।
সারা বিশ্বের মুসলমান পন্ডিত, ইসলামি চিন্তিবিদ ও ইসলামি নেতাদের সঙ্গে আলোচনাসহ ছয় বছরের গবেষণার পর তিনি ঐ বইট লেখেন। তিনি বলেন, ইসলামে মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে ছয়টি: জীবন রক্ষা, মর্যাদা, সম্পত্তি, পরিবার, জ্ঞান বুদ্ধি আহরণ ও ধর্ম- যার সব কিছুই আমেরকার জীবনের সঙ্গে যায়।
নিউ জার্সির তরূন মুসলমান নেতা মাহমুদ মাহমুদ শক্তভাবে বিশ্বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান ও অমুসলিমদের মধ্যে রয়েছে শক্ত বন্ধন। ফেইসালের সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, “পৃথিবীর বহু মুসলমান দেশের চেয়ে যুক্তহরাষ্ট্রে অনেক ভালোভাবে ইসলামী পথ অনুসরণ করে চলা যায়”।
মাহমুদ বলেন, “স্বজনপ্রীতি সকল ইসলামি দেশে বর্তমান”। সেখানে রয়েছে দুর্নীতি, নারীর প্রতি খারাপ আচরণ, দরিদ্রের অধিকার হরণ, সামাজিক ন্যায় বিচারেরর অভাব, দারিদ্র। ফলে আপনি যদি মিলিয়ে ঐসব ইসলামি দেশে এবং যুক্তরাষ্ট্রে দেখেন এসব বিষয়এর অবস্থা; দেখবেন মানুষ এখানে অনেক বেশী মুক্ত ও স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করছেন”।
ইমাম ফাইসাল বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এবং মুসলমান বিশ্বকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। মুসলমান বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক স্বার্থ রয়েছে; বিশ্বের মোট জনসংখ্রার প্রায় সিকিভাগই হচ্ছেন মুসলমান। যুক্তরাষ্ট্রের সেনা রয়েছে ইরাকে। আফগানিস্তানে। তুরস্কে আমাদের ঘাটি রয়েছে। রয়েছে অর্থনৈতিক স্বার্থ। সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলমানদের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা-এটিকে আলাদা করা সম্ভব নয়”।
ডনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, "আপনি বলছেন এই দেশে মুসলমানদের আসার অনুমতি দেবেন না, যদি তা বাস্তবে করার চেস্টা করেন, আপনি তখন আবিস্কার করবেন আমেরকার সঙ্গে মুসলমান বিশ্বের সম্পর্ক কতো নিবিড়; এটা করা সম্ভব নয়”।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন