কোলকাতায় ছাত্রদের মারধর করল আরএসএস, নিন্দা সিপিএম-কংগ্রেসের
(রেডিও তেহরান):
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-এর দফতরের
সামনে বিক্ষোভকারী ছাত্রদের মারধর করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ইউএসডিএফ
নামে ওই ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা হায়দ্রাবাদের গবেষক দলিত ছাত্রের অস্বাভাবিক
মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করেন। আরএসএস-এর
রাজ্য দফতর কেশব ভবনের কাছে বিক্ষোভ করতে গেলে তাদের মারধর করা হয়। আরএসএস
সমর্থকরা তাদের লাথি এবং ঘুষি মারলেও পুলিশ আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো
ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
মিডিয়া সূত্রে প্রকাশ, প্রতিবাদকারী
ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাতে গেলে আরএসএস সমর্থকদের সঙ্গে তাদের প্রথমে বচসা,
তর্কাতর্কি এবং পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পুলিশ এ সময় বিক্ষোভ দেখাতে আসা
ছাত্রদের আটক করে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এক
ছাত্রী জানায়, ‘আরএসএস ছাত্রদের মারধর করলেও পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে।
আমাদের কোনোই নিরাপত্তা ছিল না সেখানে।’
এ ঘটনায় রাজ্য বিজেপি প্রেসিডেন্ট দিলীপ
ঘোষ জানান, ‘হায়দ্রাবাদের ওই ছাত্রের (রোহিত ভেমুলা) আত্মহত্যার সঙ্গে
রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। তবু তা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।’
ছাত্রদের মারধর প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান,
‘বাড়ির সামনে কেউ বিনা কারণে অশান্তি করতে এলে কী আর করা যাবে? আমার মনে
হয় আরএসএস-এর লোকেরা যথেষ্ট সংযমী এবং বিচক্ষণ! কাদের সঙ্গে কী আচরণ করতে
হয়, তা ওদের জানা আছে!’
আরএসএস নেতা সুশীল কুমার রায় জানান,
‘আরএসএস সম্পর্কে ভুল ধারণা ছেড়ে তরুণ প্রতিবাদীদের আলোচনার টেবিলে বসতে
আহ্বান জানাচ্ছি। জাতি নির্মাণে উৎসাহী হলে তারা আরএসএসে যোগও দিতে পারেন।
অপ্রয়োজনীয় প্রতিবাদে শুধু সময় নষ্ট হয়!’
আরএসএস নেতা জিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এ ঘটনায় তাদের কোনো সদস্য জড়িত ছিলেন না।
এদিকে, মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে
সিপিএম নেতা শমিক লাহিড়ি জানান, ‘আরএসএস-এর কাছে এটাই প্রত্যাশিত। এরা
মৌলবাদী প্রচারের মাধ্যমে দেশকে ভাঙতে চাচ্ছে।’ বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে
গোপন আঁতাতের জন্য পুলিশ আরএসএস কর্মীদের গায়ে হাত দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন
তিনি।
শমিক লাহিড়ি বলেন, ‘আরএসএস সর্বত্র
‘মনুবাদী সংস্কৃতি’ প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। এই কোলকাতার বুকেও তারা
প্রতিবাদীদের মেরে শায়েস্তা করতে চাচ্ছে!’
কংগ্রেস নেতা এবং সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য
আরএসএস-এর সহিষ্ণুতা প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেকোনো
সংগঠনের প্রতিবাদ জানানোর অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন,
‘প্রতিবাদের প্রতি এটা কী সহিষ্ণুতার প্রকাশ?’ এ ঘটনায় আরএসএস-এর
সহিষ্ণুতার মাত্রা স্পষ্ট বলেও কটাক্ষ করেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।#
রেডিও তেহরান/এমএএইচ/এআর/২৭
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন