সান্তার একাল–সেকাল-aajkaal.in
পায়েল সামন্ত: সান্তার
ব্যাপারটা খুব ছোটবেলায় কিছুই জানতেন না তো! আহা, সান্তা-বান্তা জোকের কথা
বলছি না৷ ফ্ল্যাশব্যাকে যান, দেখবেন লাল স্যুট-পরা সাদা দাঁড়ি-গোঁফওলা
বুড়ো একজন৷ ক্রিসমাসের উৎসবে যাঁকে ছাড়া ভাবাই যায় না৷ তিনি ছেলেপুলেদের
পছন্দসই উপহার না দিলে বড়দিনের মজাটাই তো মাটি! তাঁর সঙ্গে আপনার আলাপটি
কবে হয়েছে, মনে করতে পারছেন না? দেখুন, এই লেখাটা পড়তে পড়তে মনে পড়ে যাবে৷
একটু বড় হতে গুটিকয় বন্ধু জুটলো আপনার৷ বন্ধুদের সুবাদে তাদের পরিবারের সঙ্গেও আলাপ হল৷ আলাপ হল বোকাবা‘টির সঙ্গেও! সেখানেই দেখলেন, শীতকাল মানে পা ফাটার ক্রিম, গ্লিসারিন সাবান আর একজন মোটাসোটা দাঁড়িওলা বুড়োর সবকিছুতে হাসিমুখে উপস্হিতি! তিনি আবার যে-সে বুড়ো নন, কেকের বাক্সে অহরহ তাঁকে দেখা যায়৷ বড়দিনের কেকে তাঁর ছবি না থাকলে সে কেকের জাত নিয়ে গেরস্হের মনে সন্দেহ জাগত৷ খেয়াল করেছেন কিনা জানি না, সান্তাকে কেকের প্যাকেটে বা খাবারের বিজ্ঞাপনেই দেখা যায়! কখনও সখনও শীতকালে মেলার বিজ্ঞাপনে বুড়োর হাসিমুখ দেখা যেত৷ এখন তো বুড়োর মুখ সব বিজ্ঞাপনেই চলে৷ তবে সান্তার বোধহয় আমাদের মতো শীতে অরুচি নেই৷ তাই পা ফাটার ক্রিমে বা গ্লিসারিন সাবানে সান্তার মুখ চোখে পড়ে না! শুনেছি সান্তা তো শীতের দেশে থাকে, তাই ওঁর পা ফাটে না বা ত্বক খসখসে হয় না!
ওই সান্তা মার্কা কেকই বলুন, আর সান্তা মার্কা ছাতাই বলুন, সান্তা যাতেই থাকুক না কেন, আমাদের কিন্তু ভালই লাগে৷ সত্যি বলতে তার মতো এত জনপ্রিয় ব্র্যান্ড অ্যামবাসাডর কে আছে? টম ক্রুজ বলুন, অমিতাভ বচ্চন বলুন, বিজ্ঞাপনে সান্তাকে দেখতে সবার চেয়ে বেশি ভাল লাগে! হ্যাঁ, এই ভাল লাগাটার জন্যই তো লাল স্যুট-পরা অমন সান্তার জন্ম৷ বিপণন, বিজ্ঞাপনের হাত ধরেই ওই লাল স্যুট-পরা সান্তার আগমন৷ সৌজন্যে কোকাকোলা আর হ্যাডন সান্ডব্লম৷ নেহাত ই কোকাকোলার বিজ্ঞাপন আর কী! কোকাকোলার বিজ্ঞাপনের জন্য হ্যাডন সান্ডব্লম আঁকলেন লাল স্যুট-পরা সান্তা৷ কিন্তু মোটাসোটা হাসিমুখ বুড়ো সান্তা আদতে বিজ্ঞাপনের ফল নন৷ সান্তাক্লজ নামটা এসেছে সেন্ট নিকোলাসের ডাচ নাম সিন্টার ক্লাস থেকে৷ কে এই সেন্ট নিকোলাস আর কেনই বা তাঁর সঙ্গে সান্তাক্লজের নাম জড়িয়ে? দয়ালু আর্চবিশপ নিকোলাসের সঙ্গে গরিব-দুখীরা দেখা করতে এলেই তিনি চুপিচুপি তাদের খুলে রাখা জুতোয় রেখে দিতেন কিছু পয়সা৷ সান্তার চরিত্র এসব ঘটনার ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয়েছে৷ সান্তা যেন নিজেরই প্রতিচ্ছবি৷ ১৭৭৩-৭৪ নাগাদ সান্তার চেহারাতেও ছিল তাই বিশপীয় ছাপ!
সেই আল্লাখাল্লা পরিহিত আদি সান্তা হঠাৎই পাল্টে গেল একটা কবিতার ঠেলায়৷ ১৮২২-এ বিশপ ক্লেমেন্ট মুর তাঁর তিন মেয়ের জন্য কবিতা লেখেন– ‘আ ভিজিট ফ্রম সেইন্ট নিকোলাস’৷ এখানেই বলা হল, ক্রিসমাস সন্ধ্যায় উত্তর মেরু থেকে এক খোসামুদে বেঁটে বুড়ো উপহার নিয়ে আসে বাচ্চাদের জন্য৷ ঘরের চিমনি দিয়ে ঢুকে বাচ্চাদের জন্য বুড়ো উপহার রেখে যায়৷ অনেক দূর থেকে আসে বলে বুড়োর খিদেও পেয়ে যায় কিনা, তাই খাবার হিসেবে কুকি আর দুধ রেখে দিতে হয়৷ এরকম করে সামাজিক ভাবে সান্তাক্লজের একটা অবয়ব জন্ম নিল৷ সেই অবয়ব পূর্ণতা পেল কার্টুনিস্ট টমাস নাস্তের হাতে৷ ১৮৮১ সালের ১ জানুয়ারি ‘হার্পার্স উইকলি’তে প্রথম বেরোল সান্তার কার্টুন৷ ব্যস, সান্তাকে আর পায় কে! তার জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকল৷ অবশেষে কোকাকোলার হাত ধরে লাল স্যুট, সাদা কলারওয়ালা কোটযুক্ত সান্তা ঢুকল আমাদের ড্রয়িংরুমে৷ ১৯৩১ নাগাদ কোকাকোলার হাত ধরে সেই সান্তার নতুন দৌড় শুরু হল৷ ১৯৬৪-তে সান্ডব্লমের হাতে সান্তার শেষ ছবি আঁকা৷ সান্তার এখন নানা ইমেজ– কখনও বাচ্চাদের খেলনা বিলোয় তো কখনও সেলস্ম্যানের কাজ করে৷ সান্তার সঙ্গে এসেছে মিসেস ক্লজও৷ প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়মে রয়েছে সান্তার এসব বিবর্তনের ছবি৷ সান্তাকে আপনি গণমাধ্যমের সঙ্গে তুলনা করতেই পারেন৷ রেডিও-টিভির মতো হাওয়ায় ভর করে সান্তাও উত্তর মেরু থেকে পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় কোকাকোলা বা কেক-প্যাস্ট্রি হাতে অনায়াসে চলে যেতে পারে! বড়দিনের রাতে আপনি ছাদে গিয়ে তারার মাঝে খুঁজতে পারেন সান্তাকে!
একটু বড় হতে গুটিকয় বন্ধু জুটলো আপনার৷ বন্ধুদের সুবাদে তাদের পরিবারের সঙ্গেও আলাপ হল৷ আলাপ হল বোকাবা‘টির সঙ্গেও! সেখানেই দেখলেন, শীতকাল মানে পা ফাটার ক্রিম, গ্লিসারিন সাবান আর একজন মোটাসোটা দাঁড়িওলা বুড়োর সবকিছুতে হাসিমুখে উপস্হিতি! তিনি আবার যে-সে বুড়ো নন, কেকের বাক্সে অহরহ তাঁকে দেখা যায়৷ বড়দিনের কেকে তাঁর ছবি না থাকলে সে কেকের জাত নিয়ে গেরস্হের মনে সন্দেহ জাগত৷ খেয়াল করেছেন কিনা জানি না, সান্তাকে কেকের প্যাকেটে বা খাবারের বিজ্ঞাপনেই দেখা যায়! কখনও সখনও শীতকালে মেলার বিজ্ঞাপনে বুড়োর হাসিমুখ দেখা যেত৷ এখন তো বুড়োর মুখ সব বিজ্ঞাপনেই চলে৷ তবে সান্তার বোধহয় আমাদের মতো শীতে অরুচি নেই৷ তাই পা ফাটার ক্রিমে বা গ্লিসারিন সাবানে সান্তার মুখ চোখে পড়ে না! শুনেছি সান্তা তো শীতের দেশে থাকে, তাই ওঁর পা ফাটে না বা ত্বক খসখসে হয় না!
ওই সান্তা মার্কা কেকই বলুন, আর সান্তা মার্কা ছাতাই বলুন, সান্তা যাতেই থাকুক না কেন, আমাদের কিন্তু ভালই লাগে৷ সত্যি বলতে তার মতো এত জনপ্রিয় ব্র্যান্ড অ্যামবাসাডর কে আছে? টম ক্রুজ বলুন, অমিতাভ বচ্চন বলুন, বিজ্ঞাপনে সান্তাকে দেখতে সবার চেয়ে বেশি ভাল লাগে! হ্যাঁ, এই ভাল লাগাটার জন্যই তো লাল স্যুট-পরা অমন সান্তার জন্ম৷ বিপণন, বিজ্ঞাপনের হাত ধরেই ওই লাল স্যুট-পরা সান্তার আগমন৷ সৌজন্যে কোকাকোলা আর হ্যাডন সান্ডব্লম৷ নেহাত ই কোকাকোলার বিজ্ঞাপন আর কী! কোকাকোলার বিজ্ঞাপনের জন্য হ্যাডন সান্ডব্লম আঁকলেন লাল স্যুট-পরা সান্তা৷ কিন্তু মোটাসোটা হাসিমুখ বুড়ো সান্তা আদতে বিজ্ঞাপনের ফল নন৷ সান্তাক্লজ নামটা এসেছে সেন্ট নিকোলাসের ডাচ নাম সিন্টার ক্লাস থেকে৷ কে এই সেন্ট নিকোলাস আর কেনই বা তাঁর সঙ্গে সান্তাক্লজের নাম জড়িয়ে? দয়ালু আর্চবিশপ নিকোলাসের সঙ্গে গরিব-দুখীরা দেখা করতে এলেই তিনি চুপিচুপি তাদের খুলে রাখা জুতোয় রেখে দিতেন কিছু পয়সা৷ সান্তার চরিত্র এসব ঘটনার ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয়েছে৷ সান্তা যেন নিজেরই প্রতিচ্ছবি৷ ১৭৭৩-৭৪ নাগাদ সান্তার চেহারাতেও ছিল তাই বিশপীয় ছাপ!
সেই আল্লাখাল্লা পরিহিত আদি সান্তা হঠাৎই পাল্টে গেল একটা কবিতার ঠেলায়৷ ১৮২২-এ বিশপ ক্লেমেন্ট মুর তাঁর তিন মেয়ের জন্য কবিতা লেখেন– ‘আ ভিজিট ফ্রম সেইন্ট নিকোলাস’৷ এখানেই বলা হল, ক্রিসমাস সন্ধ্যায় উত্তর মেরু থেকে এক খোসামুদে বেঁটে বুড়ো উপহার নিয়ে আসে বাচ্চাদের জন্য৷ ঘরের চিমনি দিয়ে ঢুকে বাচ্চাদের জন্য বুড়ো উপহার রেখে যায়৷ অনেক দূর থেকে আসে বলে বুড়োর খিদেও পেয়ে যায় কিনা, তাই খাবার হিসেবে কুকি আর দুধ রেখে দিতে হয়৷ এরকম করে সামাজিক ভাবে সান্তাক্লজের একটা অবয়ব জন্ম নিল৷ সেই অবয়ব পূর্ণতা পেল কার্টুনিস্ট টমাস নাস্তের হাতে৷ ১৮৮১ সালের ১ জানুয়ারি ‘হার্পার্স উইকলি’তে প্রথম বেরোল সান্তার কার্টুন৷ ব্যস, সান্তাকে আর পায় কে! তার জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকল৷ অবশেষে কোকাকোলার হাত ধরে লাল স্যুট, সাদা কলারওয়ালা কোটযুক্ত সান্তা ঢুকল আমাদের ড্রয়িংরুমে৷ ১৯৩১ নাগাদ কোকাকোলার হাত ধরে সেই সান্তার নতুন দৌড় শুরু হল৷ ১৯৬৪-তে সান্ডব্লমের হাতে সান্তার শেষ ছবি আঁকা৷ সান্তার এখন নানা ইমেজ– কখনও বাচ্চাদের খেলনা বিলোয় তো কখনও সেলস্ম্যানের কাজ করে৷ সান্তার সঙ্গে এসেছে মিসেস ক্লজও৷ প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়মে রয়েছে সান্তার এসব বিবর্তনের ছবি৷ সান্তাকে আপনি গণমাধ্যমের সঙ্গে তুলনা করতেই পারেন৷ রেডিও-টিভির মতো হাওয়ায় ভর করে সান্তাও উত্তর মেরু থেকে পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় কোকাকোলা বা কেক-প্যাস্ট্রি হাতে অনায়াসে চলে যেতে পারে! বড়দিনের রাতে আপনি ছাদে গিয়ে তারার মাঝে খুঁজতে পারেন সান্তাকে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন