অসমে জোট নিয়ে এআইইউডিএফ-কংগ্রেসের মধ্যে টানাপড়েন
(রেডিও তেহরান): ভারতের
অসম রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এআইইউডিএফ এবং কংগ্রেসের মধ্যে
সাম্ভাব্য জোট নিয়ে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এআইইউডিএফ প্রধান এরইমধ্যে
বিজেপিকে পরাস্ত করতে জোটের পক্ষে প্রশ্ন তুলে ৫৩ টি আসনের দাবি জানিয়েছে।
দলটির
হাতে বর্তমানে ১৮ টি আসন রয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে জেতা এই ১৮ টি আসনের
পাশাপাশি তারা নতুন করে আরো ৩৫ টি আসনসহ মোট ৫৩ টি আসনের দাবি জানিয়েছে।
শনিবার মারিগাও জেলার লাহরিঘাটে এক জনসভায় এআইইউডিএফ প্রধান মাওলানা
বদরউদ্দিন আজমল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘কংগ্রেসের কাছ থেকে ৫৩ টি আসন চাচ্ছি।
দুই দলের জোট না হলে বিজেপিকে আটকানো যাবে না।’
রাজ্যের
দুই মন্ত্রী রাকিবুল হোসেন এবং নজরুল ইসলামের নির্বাচনী কেন্দ্রও তাদের
ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছে এআইইউডিএফ। জোট প্রসঙ্গে এআইইউডিএফ আগেভাগে
কার্যত কড়া শর্ত চাপানোয় কংগ্রেসের পক্ষে তা বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্য প্রদেশ কগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগের প্রেসিডেন্ট ওয়াজেদ আলী চৌধুরী
জানান, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এআইইউডিএফ-এর দাবি মানা সম্ভব নয়।
এআইইউডিএফ-প্রধান বদরউদ্দিন আজমল অবশ্য বলেছেন, ‘কংগ্রেসের যেসব নেতা জোটের
বিরোধীতা করছেন তারা আসলে বিজেপি’র এজেন্ট। তারা বিজেপিকে সরকারে আনার
চেষ্টা করছেন।’
রাজ্যের
কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেছেন, ‘আজমল বাইরে থেকে জোটের প্রস্তাব
দিচ্ছেন। তার সঙ্গে আলোচনা চলছে। কংগ্রেসের পক্ষে তার সঙ্গে কথা বলছেন
সিদ্দেক আহমেদ।’
অন্যদিকে,
রাজ্য বিজেপি প্রেসিডেন্ট এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল শনিবার
গুয়াহাটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের ভূমিপুত্রদের জন্য ২০১৬ সালের
নির্বাচনকে ‘শেষ যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করে রাজ্যে অনুপ্রবেশজনিত সমস্যার কথা
তুলে ধরেন।
সর্বানন্দ
সনোয়াল গুরুতর অভিযোগ তুলে বদরউদ্দিন আজমল পরিচালিত এআইইউডিএফকে ১৪ টি
মৌলবাদী মুসলমান সংগঠনের সমন্বিত সংগঠন বলে অভিহিত করেছেন। শুধু তাই নয়,
দলটির মূল লক্ষ্য বাংলাদেশিদের রক্ষণাবেক্ষণ করা বলেও দাবি করেন তিনি। তার
দাবি, ‘এক সময় বদরউদ্দিন আজমলকে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ‘হু ইজ বদরউদ্দিন?’
বলে কটাক্ষ করলেও তার সঙ্গেই আজ জোট বেঁধে অবৈধ বাংলাদেশিদের রাজ্যে
প্রতিষ্ঠা দিতে চাচ্ছেন।
মাওলানা
বদরউদ্দিন আজমল নেতৃত্বাধীন এআইইউডিএফকে মৌলবাদী মুসলমানদের সমন্বিত সংগঠন
বলে বিজেপি নেতা সনোয়ালের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি অবশ্য
ভিন্ন কথা বলছে। কারণ, ২০০৬ সালে দলটির পক্ষ থেকে যে ৭৩ টি আসনে প্রার্থী
দেয়া হয় তাদের মধ্যে ৩৮ জনই ছিলেন অমুসলিম। গত লোকসভা নির্বাচনে তাদের যে
তিন এমপি জয়ী হয়েছেন এরমধ্যে একজন হল হিন্দু। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে
দলটির পক্ষ থেকে দেয়া ১১ আসনের প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনই ছিলেন অমুসলিম।#
রেডিও তেহরান/এমএএইচ/জিএআর/২৭
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন