কেমন কাটবে আপনার সারাদিন? আজ কী তুমুল ঝড়-বৃষ্টি না কি কুয়াশায় ঢাকবে শহর? কড়া রোদ্দুর মাথায় ছুটতে হবে কি অফিসে? আবহাওয়ার এমন সব খবর দিতে চিনের একটি খবরের চ্যানেলে এসেছে এক নতুন অতিথি। সকাল সকাল দিনের পূর্বাভাস জানিয়ে দেবে এক নারীকণ্ঠ। মানুষ নয়, তবে মানুষের ভাষা এবং কথাবার্তার আদবকায়দা রপ্ত করে এসেছে মাইক্রোসফ্‌টের তৈরি এই রোবট-সাংবাদিক!
চিনের একটি খবরের চ্যানেলে সকালে আবহাওয়ার খবর পড়তে নিযুক্ত হয়েছে শিয়াওলেস নামে এই রোবট। শুধু খবর পাঠ নয়, দর্শকদের সঙ্গে কথাও বলবে সে, আবহাওয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরও দেবে। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে কাজ শুরুও করে ফেলেছে সে।

নতুন এই অতিথির আগমনে আশনি সঙ্কেত দেখতে শুরু করেছে চিনের সাংবাদিক মহল। যে দেশের জনসংখ্যা এবং বেকার সমস্যা এত প্রবল সেখানে মানুষকে সরিয়ে তার জায়গায় রোবট-সঞ্চালককে বসানোয় কপালে ভাঁজ পড়ছে সাংবাদিকদের। আশঙ্কা, এই চ্যানেলের দেখাদেখি অন্য সংবাদ মাধ্যমও সঞ্চালকের জায়গায় রোবট নিয়োগ করতে শুরু করলে কী হবে সাংবাদিকদের? কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে প্রথাগত সাংবাদিকতা, খবর পাঠের রীতি?
বেজিং জুড়ে শিয়াওলেস অবশ্য ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে। তার মিষ্টি গলায় কথা বলার ঢং, প্রশ্নের চটজলদি উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা দেখে তাজ্জব শহরবাসী। কেমন লাগছে টেলিভিশনে এসে? শিয়াওলেসর জবাব, ‘‘খুব ভাল।’’ শিয়াওলেস যে আস্তে আস্তে মানুষ-সাংবাদিকদেরই অপ্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিনের সংবাদপত্রগুলিতে বিস্তর লেখালেখি শুরু হয়েছে।
 গত সেপ্টেম্বরেই চিনের একটি সোশ্যাল-গেমিং সাইটে একটি রোবটের লেখা ৯১৬ শব্দের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তার পর থেকেই সাংবাদিকতায় প্রযুক্তিনির্ভরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। আর সম্প্রতি শিয়াওলেসের নিয়োগে সেই প্রশ্নে ফের বিতর্ক দানা বেধেছে।
যদিও সংশ্লিষ্ট সংবাদ চ্যানেলের ডিরেক্টর সং জিয়ংমিংয়ের দাবি, রোবট কখনওই সাংবাদিকদের জায়গা পুরোপুরি নিতে পারবে না। আবহাওয়ার খবরের ক্ষেত্রে প্রচুর তথ্য বিশ্লেষণের কাজ থাকে।
আর সেটা যন্ত্রের জন্য অনেক বেশি সহজ। যদিও সাংবাদিকদের একাংশের মতে, প্রথমে লিখিত প্রতিবেদন এবং তার পরেই টিভিতে সঞ্চালনা— এ ভাবে এগোলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সাংবাদিকতা?