রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চিকে অবশ্যই কথা বলতে হবে: দালাই লামা
(রেডিও তেহরান): তিব্বতের
বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা দালাই লামা মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানের
পাশে দাঁড়াতে শান্তিতে নোবেলজয়ী, দেশটির বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চি’র
প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে দেশটির সংবাদপত্র ‘দি অস্ট্রেলিয়ান’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দালাই লামা এ আহ্বান জানান।
দারিদ্র্য ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্য থেকে বাঁচতে
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে বিভিন্ন দেশে যাত্রা করেছে হাজার হাজার
রোহিঙ্গা। এমন পরিস্থিতিতেও সুচি’র তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। নভেম্বরে
অনুষ্ঠেয় নির্বাচন সামনে রেখে ভোটারদের হাতে রাখতেই তিনি এমন নীরবতা বজায়
রেখেছেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। কিন্তু এ নীরবতাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে
পারেননি তিব্বতের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা
।
সাক্ষাৎকারে দালাই লামা বলেন, সু চিকে
অবশ্যই কথা বলতে হবে। ২০১২ সাল থেকে সু চির সঙ্গে তার দুই বার দেখা হয়েছে।
সেখানে তিনি মিয়ানমারে রাখাইন প্রদেশ থেকে স্থানীয় বৌদ্ধরা যেভাবে মুসলিম
রোহিঙ্গাদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা চালাচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলেছেন বলে তিনি
জানান।
তিব্বতের বৌদ্ধধর্মীয় এই নেতা বলেন, ‘এটা
খুবই দুঃখজনক। বার্মার (মিয়ানমার) ঘটনায়, আমি মনে করি নোবেলজয়ী হিসেবে সু
চি কিছু করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমি দুবার তাঁর (সু চি) সঙ্গে
দেখা করেছি। প্রথমবার লন্ডনে, দ্বিতীয়বার চেক প্রজাতন্ত্রে। আমি এ সমস্যার
(রোহিঙ্গা) কথা উল্লেখ করেছি। তিনি আমাকে কিছু সমস্যা পেয়েছেন বলে
জানিয়েছেন, যেগুলো সরল নয়, জটিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি মনে করি, তিনি
কিছু করতে পারেন।’
মিয়ানমারের পশ্চিমের রাখাইন প্রদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বহু রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করে আসছে।
দালাই লামা মনে করেন, শুধুমাত্র এই শরণার্থী শিবির তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। সেখানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
তিনি বলেন, ‘মানবতার কথা বলে আমরা আসলে ভুল পথে রয়েছি। অন্যের বেঁচে থাকা, ভালো জীবন নিয়ে আমরা খুবই কম সচেতন।’
চলতি মাসে সাগরে নৌকায় করে মালয়েশিয়া,
ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাড়ি দেয় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি
অভিবাসী। বর্তমানে শুধু মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতেই আছেন সাড়ে তিন হাজারের
বেশি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি। এ ঘটনায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবেতর
জীবনযাপনের বিষয়টি বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন
মহল নৌকায় থাকা লোকজনকে সাহায্যে মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও
থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানায়।
বিভিন্ন মহলের চাপে ইতোমধ্যে ৩৫০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো কয়েক হাজার সাগরে ভাসমান রয়েছে।#
রেডিও তেহরান/এআর/২৮
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন