সদ্যোজাত শিশুকে সুস্থ, সবল রাখার উপায়
জন্মের পরের একটি বছর সব শিশুর জন্যই খুব বেশি
গুরুত্বপূর্ণ৷ এ সময়ে শিশুকে ভালো রাখতে মা-বাবা এমন অনেক কিছুই করে বসেন,
যাতে ক্ষতিই হয় বেশি৷ জেনে নিন সদ্যোজাত শিশুকে ভালো রাখার সহজ কিছু
উপায়৷
মাসাজ
সব মা-ই বাচ্চার শরীর হালকাভাবে মালিশ বা মাসাজ করার গুরুত্ব কম-বেশি
বোঝেন৷ তাই গায়ে তেল মাখিয়ে মালিশ করতে দেখা যায় ঘরে ঘরে৷ তবে খাওয়ার ঠিক
আগে বা পরে মাসাজ না করাই ভালো৷ বাদাম তেল ঘরে থাকলে তা-ই শিশুর গায়ে
আলতো করে বুলিয়ে দিন, তার একটু পরে গোসল করান৷
সাবধানে গোসল করান
শিশুর ত্বক খুব স্পর্শকাতর৷ তাই গোসল করানোর সময় কুসুম গরম, অর্থাৎ
হালকা গরম পানি ব্যবহার করবেন৷ বেশি গরম পানি শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর৷
শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভালো বেবি শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন৷ শ্যাম্পু করার
সময় শিশুর চোখ ঢেকে রাখতে ভুলবেন না৷ তবে সদ্য জন্ম নেয়া শিশুকে অবশ্য
প্রথম তিন সপ্তাহ গোসল না করালেও চলে৷ ওই সময়ে হালকা গরম পানিতে নরম কাপড়
ভিজিয়ে তা দিয়ে গা মুছে দিলেই গোসলের কাজ হয়ে যায়৷
যেভাবে শোয়াবেন
অনেক মা তাঁর বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর সময় অনেকগুলো কাপড় একসাথে পরিয়ে
নেন৷ ব্রিটেনের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডন কেলি বলেছেন, ঘুমানোর সময় শিশুকে
আবহাওয়া অনুযায়ী হালকা কোনো কাপড় পরানোই সবচেয়ে ভালো৷ তার মানে এই নয়
যে, শীতের সময় অনেকগুলো শীতের কাপড় পরিয়ে তারপর আবার কম্বল বা লেপটাও
দেবেন৷ ডন কেলি জানিয়েছেন, খুব বেশি গরম বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর৷
কাঁদলেই ভয় পাবেন না
শিশু কাঁদলেই ভয় পাবেন না৷ শিশুর কান্না মানেই যে সে খুব কষ্টে আছে, তা
কিন্তু নয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক গ্রন্থের লেখিকা জেনিফার
ওয়াকার তো বলেছেন, ‘‘শিশুরা কাঁদার জন্যই প্রোগ্রাম করা৷ ও কাঁদছে বলেই
ধরে নেবেন না আপনি ভুল কিছু করেছেন৷ শিশু অনেক সময় কেঁদে কেঁদে আপনার সঙ্গে
কথাও বলে৷’’
দাঁতের যত্ন
শিশুর দাঁতের যত্ন নেয়া খুব জরুরি৷ নিউইয়র্কের দন্ত্য চিকিৎসক প্রেসনর
সওল বলেছেন, দুধ দাঁতেরও যত্ন নিতে হয়৷ দাঁত ওঠার আগ পর্যন্ত ভেজা কাপড়
দিয়ে শিশুর মাড়ি পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ আরো বলেছেন, যাঁরা
ঘুমানোর ঠিক আগে শিশুকে খাওয়ান, মাড়ি ফুড়ে দাঁত বেরোতে শুরু করলে ওই সময়ে
খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে৷
প্রকৃতির কাছে নিয়ে যান
শিশুকে যত প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাবেন ততই ভালো৷ মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট,
টেলিভিশনের এই যুগে এটা আরো বেশি দরকার৷ অ্যামেরিকান পেডিয়াট্রিকস
অ্যাকাডেমি এক গবেষণা করে দেখেছে, শিশুদের অন্তত দু বছর পর্যন্ত টিভি বা
কম্পিউটারের পর্দার সামনে একেবারে না নেয়াই ভালো৷
শিশুরা রং ভালোবাসে
শিশুদের চারপাশের জগতটাকে রঙিন করার চেষ্টা করুন৷ শিশু রং ভালোবাসে৷
ভালোবাসাটা শুরু হয় আট-নয়মাস বয়স থেকে৷ ওই সময় থেকেই শিশু নানা ধরণের রং,
গন্ধ, শব্দ এবং স্পর্শের অনুভূতি বুঝতে শুরু করে৷
চোখে চোখ রেখে হাসুন
জন্মের পর খুব কম সময়ের মধ্যেই শিশু নিজের মতো করে খেলতে শুরু করে৷
এমনকি অন্যের অভিব্যক্তি, খুশি, আনন্দ বুঝতে শুরু করার আগেই ও আনন্দ করতে
শুরু করে৷ শিশুর সঙ্গে হাসুন৷ চোখে চোখ রেখে হাসুন৷ মনে রাখবেন, শিশু কথা
বলতে পারেনা, তাই চোখ দিয়েই ও অন্যের সঙ্গে কথা বলে৷
বাবার সঙ্গে
শিশুকে যা শেখাতে চান তা নিজে করে দেখাবেন৷ মা-কে তো শিশু সবসময়ই কাছে পায়৷ বাবারও উচিত শিশু সন্তানের সাথে যতটা সম্ভব সময় কাটানো৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন