মিঠাপুকুরের আদিবাসী পল্লীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই : নারী ও শিশুরা অপুষ্টির শিকার হারুন-অর-রশিদ - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০১৫

মিঠাপুকুরের আদিবাসী পল্লীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই : নারী ও শিশুরা অপুষ্টির শিকার হারুন-অর-রশিদ

মিঠাপুকুরের আদিবাসী পল্লীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই : নারী ও শিশুরা অপুষ্টির শিকার


হারুন-অর-রশিদ 

 

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আদিবাসী পল্লীর বাসিন্দারা মারাতœক স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে অবহেলা এবং জনসচেতনতার অভাবে শতাধিক আদিবাসী নারী ও শিশু পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের রুগ্ন শরীরে ক’খানা হাড় ছাড়া কিছু নেই
। য²া, হাপানী, প্যারালাইসি ও পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হলেও কখনও চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন না। করিবারজদের দেয়া ঝার-ফুঁক, পানিপড়া, তেলপড়া আর স্থানীয় হাতুরে চিকিৎসকই তাদের একমাত্র অবলম্বন। অশিক্ষা ও কুসংস্কার আচ্ছন্ন করে রেখেছে তাদের। ইউএনডিএফ এবং নিউজ নেটওয়ার্ক’র গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যু বিষয়ক সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কোর্সের ফিল্ড ওয়ার্কের অংশ হিসেবে ওই পল্লী পরিদর্শন করে এ-চিত্র পাওয়া যায়

মিঠাপুকুরের রানী পুকুর ইউনিয়নের মোলং, মমিনপুর, বদলীপুকুর ও তাজনগর মৌজায় কমপক্ষে দুই হাজার আদিবাসী পরিবারের বাস। এদের পূর্ব পরুষেরা ওরাও স¤প্রদায়ের এবং সনাতন ধর্মালম্বী ছিলেন। স্থানীয়রা জানায়, কতিপয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করছে। বর্তমানে আদিবাসীদের অধিকাংশই খ্রীষ্টান (রোমান ক্যাথলিক, ব্যাথলিক চার্চ, ব্যাপদিষ্ট) ও বৌদ্ধ ধর্ম পালন করেন। এদের জীবনমান উন্নয়নে কারিতাস, ওয়াল্ড ভিশনসহ কয়েকটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কাজ করলেও আদিবাসীদের মাঝে এখনও স্বাস্থ্য সচেতনতাবোধ গড়ে ওঠেনি।
তাজনগর মৌজার পাচ্চাপাড়া গ্রামের আদিবাসী গৃহবধূ শান্তি তিরকি (৩৫) জানান, তার বাড়িতে স্বাস্থ্য সম্মত কোন পায়খানা নেই। টিউবয়েলের পানি পান করলেও তাতে আর্সেনিক আছে কিনা জানেন না। খাবার আগে সাবান অথবা ছাই দিয়ে হাত খোয়ার অভ্যেস তাদের নেই। স্বাস্থ্য কর্মীকে কখনও দেখেননি। জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি কি। তার জানা নেই। তিনি বলেন, স্বামী বিশনাথ টপ্পো দিনমজুরী করে সংসার চালান। এক শতাংশ জমির উপর বসতবাড়ি। আগে অনেক জমি-জমা ছিল। অভাবের জন্য বিক্রি করে দিয়েছেন। কিছু দিন আগে আর্থিক সচ্ছলতার প্রলোভনে স্বপরিবারে ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্টান ধর্ম গ্রহন করেন। এজন্য সামান্য সহায্য সহযোগীতা পেলেও এখন কেউই তাদের খোঁজ রাখেন না। তিন সন্তান শিলা টপ্পো (১৪), নিকাশ টপ্পো (৮) ও বিকাশ টপ্পো (১১)’র কেউই স্কুলে যায় না। তাদের সকলেই অপুষ্ঠির শিকার এবং তিনি শ্বাসকষ্টের রোগী। প্রতিবেশি এক কবিরাজ তাকে তাবিজ ও গাছান্ত ঔষধ দিয়েছেন। তাই সেবন করে সুস্থ্য হবার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সরকারী হাসপাতালে যাননি কেন? জিজ্ঞেস করলে বলেন, বাড়ি থেকে অনেক দুরে। আর সেখানে গিয়ে কোন ঔষধ পাওয়া যায় না। শান্তি তিরকি ছাড়াও একই পাড়ার সূর্যমনি কেরকেটা (৪৫), দূগী কেরকেটা (১২), বিনু তের্কী (৮), মিরি কুজুর (১৩), জয়ন্তি কেরকেটা (৪২), কারমি দানোয়ার (৫২), ফুলু তিরকি (৫০) ও সীতা রানী কেরকেটা (৫৫) সহ ২ শতাধিক শাতাধিক নারী ও শিশু অপুষ্টির শিকার। তাদের অনেকেই জটিল রোগে ভূগছেন। তারা বলেন, স্বাস্থ্য কর্মীকে এলাকায় কখনও দেখেননি। মাঝে মধ্যে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার দু’এক জন কর্মী গ্রামে এলও তারা স্বাস্থ্য সচেতনতায় কোন পরামর্শ দেন না।
আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা নুহাস কেরকেটা বলেন, পাচ্চা পাড়ায় ৮৫টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। শিশু রয়েছে প্রায় ৩শ ৫০ জন। অধিকাংশই পুষ্টিহীনতাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এরা স্কুলে যায় না। তিনি বলেন, ওই পাড়ায় কোন সরাকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। শিশুরা লেখাপড়ার সুযোগ না পাওয়ায় সাংসারিক কাজে সহযোগীতাসহ বিভিন্ন ঝুকিপূর্ন শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়ছে।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়, পাচ্চাপাড়ার ওই পরিবারগুলোর অধিকাংশের বাড়িতে জলাবদ্ধ পায়খানা নেই। কিছু বাড়িতে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার নির্মাণ করে দেয়া জলাবদ্ধ পায়খানা থাকলেও সচেতনতার অভাবে তা ব্যবহার করা হয় না। জলাবদ্ধ পায়খানা ব্যবহার না করে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে কেন? জিজ্ঞেস করলে আদিবাসী সূর্য ওরফে মঙ্গা (৪৫) বলেন, বাপ দাদারা পায়খানা ব্যবহার করেনি। আমরাও করি না। জলাবদ্ধ পায়খানা ব্যবহারের সুফর সমন্ধে জানাতে চাইলে বলেন, জানিনা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা .... জানান, আদিবাসীদের নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতনায় তিনি ও তার দপ্তরের লোকজন তৎপর রয়েছেন। নারী ও শিশুদের পুষ্টিহীনতার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীরা নিয়মিত আদিবাসীদের খোঁজখবর রাখেন। তবে দু’একজন পুষ্টিহীনতার শিকার হতে পারে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান আদিবাসী নারী ও শিশুদের পুষ্টিহীনতার কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা নিরক্ষর আদিবাসী নারী ও শিশুদের খোজখবর রাখেন না। তারা চাকুরী বাঁচানোর জন্য মাঝেমধ্যে আদিবাসী পল্লীতে গিয়ে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here