কলকাতা: সারদা কেলেঙ্কারির
তদন্তে সিবিআইয়ের নজরে তৃণমূলের তহবিল। এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের হরিশ মুখার্জি
রোড শাখায় ২১টি অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে পাঠানো হল চিঠি। লেনদেন থেকে
অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কাদের সই? জানতে চায় সিবিআই। সারদা তদন্তে এবার
সরাসরি তৃণমূলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করল
সিবিআই
।
সিবিআই সূত্রে খবর, তৃণমূলের তরফে যে ৮৭
পাতার নথি জমা দেওয়া হয়েছে, তার বেশ কয়েকটি জায়গা ঘিরে রীতিমতো ধোঁয়াশা
তৈরি হয়েছে। চেক মারফত ডোনেশন এলেও অনেক জায়গায় উল্লেখ নেই, চেক কে
দিয়েছেন। নগদে ২০ হাজারের বেশি টাকা যেখানে নেওয়াই যায় না, তৃণমূলের নথিতে
কোথাও লক্ষাধিক, কোথাও কোটি টাকা অনুদানের উল্লেখ। এই অস্পষ্টতা কাটাতেই
এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের হরিশ মুখার্জি রোড শাখায় চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, তৃণমূলের দেওয়া নথির ৭৫ নম্বর
পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, দলীয় তহবিলে যে টাকা এসেছে, তার বেশির ভাগ অংশই, এই
শাখায় ২১টি অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে।
গোয়েন্দারা
জানতে চান, তৃণমূলের তরফে এই অ্যাকাউন্টগুলি কে চালু করেছিলেন? বর্তমানে
এইসব অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথিতে সই করার অধিকার কার?
পাশাপাশি, এই অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেনের বিস্তারিত তথ্যও চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে দাবি, ব্যাঙ্কের তরফে উপযুক্ত নথি পেশ করা হলে তৃণমূলের নথি ঘিরে যে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে, তা কেটে যেতে পারে।
সিবিআই
সূত্রে দাবি, তদন্তকারীরা আশা করছেন, আর দু-একদিনের মধ্যে ব্যাঙ্ক থেকে
তাঁরা প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাবেন। তাই তথ্য হাতে আসার পর যাতে আর সময় নষ্ট
না হয়, সেজন্য ইতিমধ্যেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করে ফেলেছে সিবিআই।
কী সেই পদক্ষেপ?
কেন্দ্রীয়
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, ব্যাঙ্কের তরফে নথি এলে, প্রথমেই তা তৃণমূলের
দেওয়া নথির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। কারণ, সিবিআই সূত্রে দাবি, তদন্তকারীরা
নিশ্চিত হতে চান যে, তৃণমূল নথিতে অনুদান হিসেবে যত টাকার হিসেব দেখিয়েছে,
অ্যাকাউন্টে কি তত টাকাই জমা পড়েছে? নাকি তার থেকে বেশি বা কম টাকা জমা
পড়েছে? তৃণমূল যে সময়ে অনুদান আসার কথা উল্লেখ করেছে, অ্যাকাউন্টেও কি সেই
সময়েই টাকা জমা পড়েছে? তৃণমূলের দেওয়া নথিতে দেখা গিয়েছে একদিনে দু’কোটি
টাকা পর্যন্ত অনুদান জমা পড়েছে। গোয়েন্দারা দেখতে চান, সেই টাকা কি
একবারেই ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়েছে, নাকি একাধিক ভাগে?
তারপরও
অ্যাকাউন্ট ঘিরে ধোঁয়াশা না কাটলে, তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বা অন্য কোনও
নেতাকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
কিন্তু, এ তো গেল নথি মেলার সম্ভাবনার ভিত্তিতে সিবিআইয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ।
কিন্তু, যদি ব্যাঙ্কের তরফে নথি যদি না আসে?
সিবিআই
সূত্রে খবর, সেক্ষেত্রে প্রথমে ব্যাঙ্ককে একবার রিমাইন্ডার পাঠানো হবে।
তারপরও যদি নথি না আসে, সেক্ষেত্রে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন