কলকাতা: পারস্পরিক স্বার্থের
কথা মাথায় রেখেই কি মোদী-মমতা কোনও গোপন চুক্তি হয়েছে? মোদীর বিল পাস করাতে
রাজ্যসভায় মমতা সমর্থন দেবেন, আর তার পাল্টা হিসাবে সারদা কেলেঙ্কারির
তদন্তে সিবিআই ধীরগতিতে এগোবে, এই মর্মেই কি চুক্তি হয়েছে দু’জনের মধ্যে?
রাজনৈতিক মহলে যখন এই জল্পনা জোরালো, ঠিক তখনই তা আরও উস্কে দিলেন সারদা
কেলেঙ্কারিতে জেলবন্দী তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ।
নরেন্দ্র
মোদীকে লেখা এক চিঠিতে কুণাল বলেছেন, সিবিআই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ও
নথি জোগাড় করেছে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল গত ৩-৪ মাসে তদন্ত
রহস্যজনক মোড় নিয়েছে। সারদার মানি মার্কেটিং ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা জড়িত
ছিলেন, যাঁরা সারদা থেকে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদেরকে
স্পর্শ করছে না সিবিআই। দেখে মেনে হচ্ছে তদন্তকে প্রভাবিত করা হচ্ছে।
এরপরই নিজের লেখা চার পাতার চিঠিতে চাঞ্চল্যকর
দাবি করেছেন একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী কুণাল। মোদীকে লেখা
চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, আমি তৃণমূলের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছি,
তদন্তকে এখন রাজনৈতিক বোঝাপড়ার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমার কাছে যা খবর আছে তা অনুযায়ী,
১. রাজ্যসভায় আপনার (নরেন্দ্র মোদী) অগ্রাধিকারের কিছু বিলকে তৃণমূল সমর্থন করবে। অন্যান্য বিল (জমি বিল) নিয়ে নকল যুদ্ধ চলবে
২. কংগ্রেস ও বামেদের পথে বাধা তৈরি করবে তৃণমূল
৩. অবিজেপি ও অকংগ্রেসি দলগুলিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে তৃণমূল
আর এসবের পরিবর্তে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী এবং শীর্ষস্থানীয় তৃণমূল নেতা ও সাংসদের ছোঁবে না সিবিআই।
এরপরই
কুণাল ফের একবার দাবি করেছেন, সারদা মিডিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা
পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলের একাধিক নেতা। এখানেই থামেননি কুণাল ঘোষ।
চলতি মাসের ১৫ তারিখ লেখা চিঠিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর আর্জি, মানি
মার্কেট কেলেঙ্কারিতে লক্ষাধিক মানুষ তাদের কষ্টের উপার্জন হারিয়েছেন।
মানুষের চোখের জলকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক সমঝোতা হতে দেবেন না।
মোদীকে
লেখা এই চিঠিতে সারদা কেলেঙ্কারির অবাধ ও নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানানোর
পাশাপাশি কার্যত হুমকির সুরে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, সিবিআই যদি সব
ষড়যন্ত্রকারীকে জেরা কিংবা গ্রেফতার না করে, তাহলে তিনি কড়া অবস্থান নিতে
বাধ্য হবেন। যদিও, সেই কড়া অবস্থান কী হবে, তা খোলসা করেননি কুণাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন