আমেরিকায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে কিছু ধনী ব্যবসায়ী। অবস্থা বদলাতে হলে পুরোদস্তুর বিপ্লবের প্রয়োজন। আমেরিকার তরুণ প্রজন্ম সে পথে হাঁটলে তবেই বারাক ‘হুসেন’ ওবামা সফল হবেন। রিপাবলিকান-বিরোধী কোনও মার্কিন রাজনীতিক নন, এ কথা লিখেছিলেন ওসামা বিন লাদেন। অন্তত তেমনটাই দাবি এক মার্কিন সংবাদপত্রের।
২০১১ সালের ২ মে মার্কিন কম্যান্ডোদের হাতে পাকিস্তানে অ্যাবটাবাদের ডেরায় নিহত হয়েছিলেন আল কায়দা নেতা। সম্প্রতি সেই ডেরা থেকে পাওয়া ১০০টি নথি প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন।

তার মধ্যেই একটি চিঠিতে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের কথা রয়েছে বলে দাবি মার্কিন সং‌বাদপত্রটির। তাদের দাবি, চিঠিটি ২০০৯ সালের কোনও সময়ে লেখা বলে মনে হয়। কারণ, ‘‘বারাক হুসেন’’ সদ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বলে চিঠিতে লিখেছেন ওসামা। আল কায়দা নেতা দাবি করেছেন, মার্কিন ব্যবসায়ীদের কথা মেনেই প্রেসিডেন্টকে চলতে হয়। তাদের চাপেই মন্দার সময়ে করদাতাদের অর্থে অর্থনীতিকে উদ্ধার করা হয়। আবার তেলের লোভে হামলা হয় ইরাকে। ইহুদিদের চাপে ইজরায়েলের প্যালেস্তাইন দখল সমর্থন করে আমেরিকা।
সংবাদপত্রটির মতে, এর পরের অংশ আরও আকর্ষণীয়। কারণ, ওসামা তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাদের প্রশংসা করেছেন। মার্কিন যুবকদের পড়তে বলেছেন আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রাণপুরুষ টমাস পেইনের কথা। আল কায়দা নেতার মতে, পেইনের মতো রাজনীতিকদের পথে হাঁটতে হবে মার্কিন তরুণ-তরুণীদের। তবেই ‘বারাক হুসেন’ সফল হবেন। ‘জলবায়ুর পরিবর্তনের ভয়ঙ্কর ফল’ থেকে মানবজাতিকে বাঁচানোও যাবে।
চিঠিগুলি খতিয়ে দেখে মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, জঙ্গি সংগঠন আইএসের কায়দায় কাজ করা পছন্দ করতেন না ওসামা। খুব দ্রুত ‘খিলাফতি শাসন’ ফেরার কথা ঘোষণা করতেও অনুগামীদের নিষেধ করেছিলেন তিনি। যতখানি দখলে রাখা সম্ভব তার চেয়ে বেশি এলাকা দখলেও আল কায়দা নেতার আপত্তি ছিল। কারণ, সেই এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ‘সরকারকে’ যে আমেরিকা সহজেই হটিয়ে দিতে পারবে তা জানতেন তিনি। আবার বন্দিদের মাথা কেটে হত্যার ভিডিও প্রকাশেও তাঁর
আপত্তি ছিল।
গোয়েন্দাদের মতে, ইসলামি
জঙ্গি আন্দোলনের পরবর্তী প্রজন্ম ওসামার কথা মানেনি। তাই শেষ পর্যন্ত আল কায়দা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আইএস তৈরি করে ইরাকের নেতা আবু বকর আল বাগদাদি ও তার অনুগামীরা। ওসামার ভবিষ্যদ্বাণী মেনে আইএসের ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ ভেঙে পড়ে কি না, তাই এখন দেখতে চান গোয়েন্দারা।