বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্ডার-সি মিসাইলের চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন করতে চলেছে ভারত। কে-৪ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র ৭ বা ৮ মার্চ ছোড়া হবে বঙ্গোপসাগরের গভীর থেকে। নির্মাতা সংস্থা ডিফেন্স রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) তরফে প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য এই মিসাইল ২০০০ কিলোগ্রাম ওজনের পরমাণু অস্ত্র বহন করে ৩৫০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারবে।

কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্র খুব গোপনে তৈরি করেছে ডিআরডিও। এই ক্ষেপণাস্ত্রের একটি সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। তবে সে বার ৩০০০ কিলোমিটার দূরে ছোড়া হয়েছিল ক্ষেপণাস্ত্রটি। আর দিনকয়েকের মধ্যে যে উৎক্ষেপন হতে চলেছে, সেই উৎক্ষেপনে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্র তার পাল্লার সম্পূর্ণ দূরত্ব অতিক্রম করেই আঘাত হানবে।
সমুদ্রগর্ভ থেকে নিক্ষেপযোগ্য যে সব মিসাইল ভারতের হাতে রয়েছে, তার মধ্যে কে-৪ সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার। উৎক্ষেপন স্থল থেকে ৩৫০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানার ক্ষমতা থাকায় এটি ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল বা আইআরবিএম গোত্রে পড়ছে। সমুদ্রগর্ভ থেকে নিক্ষেপযোগ্য যত রকমের আইআরবিএম এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে তৈরি হয়েছে, ভারতের তৈরি কে-৪ সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে বিধ্বংসী। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন

শত্রু সাবমেরিনের ‘যম’ আইএনএস কডমট হাতে পেল নৌবাহিনী

কে-৪ মিসাইলটির দৈর্ঘ্য ১২ মিটার। ওজন ১৭ টন। ২০০০ কিলোগ্রাম ওজনের পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে ক্ষেপণাস্ত্রটি। ভারতের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত-এর জন্যই বিশেষ করে এই মিসাইল তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্রের গভীর থেকে আচমকা বাইরে এসে লক্ষ্যের দিকে ছুটে যায় এই ক্ষেপণাস্ত্র। কে-৪ হাইপারসনিক অর্থাৎ শব্দের বেগের চেয়ে এর বেগ বেশ কয়েক গুণ বেশি। ফলে রেডারের পক্ষে এই কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের ছুটে আসার খবর খুব আগে থেকে আঁচ করা কঠিন। শেষ মুহূর্তে রেডারে ধরা পড়লেও এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব শক্ত। কারণ শব্দের চেয়েও অনেক বেশি বেগে ধেয়ে আসায় অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেম ব্যবহার করে একে রুখে দেওয়ার সময় অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। এই সব কারণেই ভারতের কে-৪ মিসাইলকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আন্ডার-সি আইআরবিএম হিসেবে মনে করছেন সমর বিশারদরা।
বঙ্গোপসাগরের যে অঞ্চল থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন হবে, সেখানে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে নৌসেনার দু’টি জাহাজ। আরও একটি জাহাজকে পাঠানো হচ্ছে সমুদ্রের সেই অঞ্চলে, যেখানে আঘাত হানবে কে-৪। আইএনএস অরিহন্তের একটি প্রতিকৃতি সমুদ্রের ৩০ ফুট নীচে থাকছে। সেখান থেকেই ছোড়া হবে কে-৪ মিসাইল।