গোমাংস-অসহিষ্ণুতা বিতর্ক হোক কিংবা সাম্প্রতিক কানহাইয়া-কাণ্ড। একের পর এক বিতর্কে মুখ পুড়েছে তাঁর সরকারের। প্রতিবাদও এসেছে সমাজ থেকে। দেশের প্রথম সারির লেখক-লেখিকা থেকে শুরু করে বলিউডের অভিনেতা। কেউ পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। কেউ আবার সরাসরি দাবি করেছেন, এ দেশে মুসলিমদের থাকার মতো পরিস্থিতিই নেই। মুসলিম-বিরোধী মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছেন তাঁরই দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। অথচ তিনি কিন্তু বিশ্বাস করেন, ইসলামের আসল অর্থ হল শান্তি।আজ নয়াদিল্লিতে বিশ্ব সুফি সম্মেলনের উদ্বোধনে গিয়ে সে কথাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজ্ঞানভবনের ওই অনুষ্ঠানে মোদী বললেন, ‘‘আল্লার ৯৯টি নামের মধ্যে একটারও অর্থ হিংসা নয়।’’ সেই সঙ্গেই মোদী জানিয়েছেন, ইসলামের বৈচিত্র হল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

বিজেপির একাধিক মন্ত্রী বহু বার বলেছেন, ইসলাম মানেই সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। কেউ গোমাংস খেলে তিনি যেন পাকিস্তানে চলে যান, এমন হুমকিও এসেছে কারও কারও থেকে। মোদী কিন্তু সে সব নেতার থেকে সম্পূর্ণ উল্টো রাস্তায় হেঁটে আজ বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের নানা উদ্দেশ্য থাকে। যার পিছনে কোনও যুক্তিই খাটে না। আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কোনও বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয় কিন্তু। তা কখনওই হতেই পারে না।’’
শুধু ইসলামই নয়, সুফি সম্মেলনে এসে আজ সর্বধর্ম সমন্বয় নিয়ে কথা বলেছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি, আস্তিক, নাস্তিক—সকলেই ভারতের অংশ।’’ এর পরেই কোরানের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘কোরানেই বলা আছে কেই যদি এক জন
মানুষকে আঘাত করে, তা হলে তা গোটা মানবতাকে আঘাত করার সামিল।’’ অবশ্য মোদীর মতে, বর্তমান বিশ্বে মানবতাই সঙ্কটের মুখে। আর ঠিক এই সময় সুফি সম্মেলনের গুরুত্ব কতটা, তা-ও আজ বুঝিয়েছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘বিশ্বে যে দর্শনের অবদান সবচেয়ে মহান তা হল সুফিবাদ।’’