জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সভায় হিন্দুত্ববাদীদের সমালোচনা করলেন সেলিম
(রেডিও তেহরান): ভারতের
দিল্লিতে জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং
আরএসএসের সমালোচনা করা হয়েছে। (শনিবার) জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের
রাষ্ট্রীয় একতা সম্মেলনে ভারতের বিশিষ্ট ওলামায়ে দ্বীনের পাশাপাশি বিভিন্ন
রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন
সম্মেলনে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধীর
উর্দুতে সই করা বার্তা পড়ে শোনান সিনিয়র কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ।
সোনিয়া তার বার্তায় বলেছেন, কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে
সমালোচনা করে বলেন, ‘দেশে বিভেদকামী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা দেশকে
ভাঙতে চাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশ বর্তমানে নাজুক
পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলছে। বিশেষ করে সেক্যুলারিজমকে টার্গেট করা হচ্ছে।’
আজাদ
সোনিয়ার বার্তা পড়তে গিয়ে বলেন, ‘আপনারা যেরকম বাইরে সেক্যুলারিজমের জন্য
লড়ছেন তেমনই সোনিয়া গান্ধীও সংসদের মধ্যে এই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।’
দিল্লির
ইন্দিরা গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত জমিয়তের সভায় উপস্থিত হয়ে
সিপিআই(এম) নেতা মুহাম্মদ সেলিম কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন,
‘জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের
অভিযোগ করা হয়েছে। লোকেদের কলার ধরে দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট দাবি করা
হচ্ছে।’
মুহাম্মদ
সেলিম বলেন, ‘নাথুরামের খানদান এসে আমাদের কাছে দেশপ্রেমের প্রমাণপত্র
চাচ্ছে! আসলে ওদের ‘মুখে রাম নাম, যদিও বগলে নাথুরাম’।
ভারতে জাতির জনক গান্ধীজিকে হত্যা করেছিল নাথুরাম গডসে।
আরএসএসের
সমালোচনা করে সেলিম বলেন, ‘ওদের মধ্যে মুসলিম, খ্রিস্টান এবং কমিউনিস্ট
বিদ্বেষ রয়েছে। আমরা এই বিদ্বেষের আগুনে ভারতকে জ্বালাতে দেব না।’
সেক্যুলারিজমের সঙ্গে গণতন্ত্রেরও গলা টিপে ধরা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন
সেলিম।
এই সভায়
দেশদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া জেএনইউয়ের ছাত্র ওমর খালিদের বাবাও
উপস্থিত ছিলেন। তিনি ওমর খালিদের মুক্তির দাবি জানান। খ্রিস্টান নেতা জন
দয়ালও ওমর খালিদের মুক্তি দেয়ার দাবি করেন।
সম্মেলনে
অংশ নেয়া আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণণ প্রধানমন্ত্রী মোদির সমালোচনা করে বলেন,
উনি সারা পৃথিবীকে নিজের বলে মনে করেন কিন্তু নিজের পরিবারকেই নিজের ভাবেন
না। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে উনি পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেয়ার কথা
বলেছিলেন, কিন্তু তিনিই আবার কাউকে না বলে কয়েই বিনা আমন্ত্রণে পাকিস্তানে
চলে গেলেন!
জমিয়তে
ওলামার সম্মেলনে আজ কয়েক হাজার মানুষ শামিল হয়েছিলেন। জমিয়তে ওলামা হিন্দের
প্রেসিডেন্ট মাওলানা আরশাদ মাদানী, মাওলনা মাহমুদ মাদানী, মীম আফজাল,
উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য শাহীদ মঞ্জুরসহ বহু বিশিষ্ট নেতা
উপস্থিত ছিলেন। #
রেডিও তেহরান/আবদুল হাকিম/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/১২
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন