বাংলাদেশে মাথাপিছু ঋণ ১৩১৬০ টাকা: অর্থনীতিবিদের মূল্যায়ন
(রেডিও তেহরান):
বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ১৬০ টাকা যা গত বছরের
তুলনায় ৪৬০ টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের ৩০ জুন বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের
স্থিতির পরিমাণ ২৫ হাজার ৯০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ২
লাখ ৭ হাজার ২৬৫ কোটি। এতে জনগণের মাথাপিছু এ ঋণের পরিমাণ ১৬৯ মার্কিন
ডলার বা প্রায় ১৩ হাজার ১৬০ টাকা।
দশম সংসদের সপ্তম অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর
পর্বে বৃহস্পতিবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগমের
প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান সংসদকে
এসব তথ্য জানান। গত বছরের জুনে অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানিয়েছিলেন, দেশের
জনগণের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১২ হাজার ৭০০ টাকা।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৫ সালের ৩০ জুন
পর্যন্ত ২ লাখ ৭ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ নেয়া হয়েছে ১১টি উন্নয়ন
সহযোগী সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ২ হাজার ৩৪৩
কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংক থেকে।
বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যয়ের
স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির
অধ্যাপক ড. আনু মোহাম্মদ। রেডিও তেহরানকে তিনি বলেন, সরকারের বৈদেশিক ঋণ
গ্রহণ অপ্রয়োজনীয়। কেননা সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকেই বেশি ঋণ নিয়ে থাকে।
তাছাড়া প্রতিবছর যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে, তাতে বৈদেশিক ঋণের কোন প্রয়োজন
নেই। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ ও অর্থ ব্যবহারের অস্বচ্ছতার কারণেই
মাথাপিছু ঋণ বাড়ছে।
তিনি বলেন, সরকারের নেয়া প্রকল্প এবং
প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে আইনের
শাসন নেই, মাথাপিছু আয় নিয়েও খুশি হওয়ার কিছু নেই। আর ব্যবসায়িক পরিবেশ
নিয়েও প্রশ্ন আছে। যদিও কতিপয় গোষ্ঠীর জন্য সুবিধাজনক অবস্থা বিরাজ করছে।
দুর্নীতি ও অনিয়ম যেভাবে চলছে এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে
পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এ অর্থনীতিবিদ।
উল্লেখ্য, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের ৩০ জুন
দেশের বৈদেশিক ঋণের স্থিতির পরিমাণ ২৪ হাজার ৯০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা
প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। এ অর্থবছরে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণের সুদ
বাবদ ২৭৪ দশমিক ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ২ হাজার ১৪৭ দশমিক ৬০
কোটি টাকা পরিশোধ করেছে; যা রপ্তানি আয়ের শতকরা ৮ দশমিক ৬ ভাগ এবং জিডিপির
শতকরা ২ দশমিক ৯ ভাগ।#
রেডিও তেহরান/এসএম/এআর/৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন