কালবুর্গিকে হত্যায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ, ভগবানকে হুমকি দেয়ায় ধৃত ১
(রেডিও তেহরান): ভারতের
প্রখ্যাত কন্নড় গবেষক এম এম কালবুর্গিকে হত্যার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের
সুপারিশ করল কর্ণাটক সরকার। আগেই অবশ্য চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী
সিদ্দারামাইয়া সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। (সোমবার) সিবিআই
তদন্তের সুপারিশ করলেন তিনি।
কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর এম এম কালবুর্গি রোববার তার ধারওয়াড়ের বাড়িতে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে নিহত হন।
এদিকে, অন্য এক ঘটনায় ম্যাঙ্গালোর পুলিশ
স্থানীয় এক বজরং নেতাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, কালবুর্গি
নিহত হওয়ার পরে তিনি টুইট করে অন্য কন্নড় লেখক কে এস ভগবানকে হত্যার হুমকি
দিয়েছিলেন।
পুলিশ এই টুইটকে আমলে নিয়ে বজরং নেতা ভুভিত শেঠির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
ভুভিত শেঠি টুইট করে লেখেন, ‘প্রথমে ইউ আর
অনন্তমূর্তির পর এবার এম এম কালবুর্গি। হিন্দু ধর্মকে ছোট করলে কুকুরের
মতোই মরতে হবে। কে এস ভগবান এবার আপনার নম্বর আসছে।’
এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও
আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে যে টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা হয়েছিল তা দ্রুত
বন্ধ করে দেয়া হয়। অনেকেই কালবুর্গি হত্যার পেছনে বজরং দলের সক্রিয় ভূমিকা
রয়েছে বলে প্রশ্ন তোলেন।
টুইটকে কেন্দ্র করে ম্যাঙ্গালোর গ্রামীন
পুলিশ সুপার শরণপ্পা এনডি জানান, বিষয়টি আমলে নিয়ে ভারতীয় দন্ড বিধির ১৫৩ এ
এবং ৫০৬ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুভিত শেঠি পলাতক ছিল কিন্তু
তাকে এখন গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা ওই টুইটটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা
চালাচ্ছি।’
আততায়ীর গুলিতে নিহত কন্নড় গবেষক এম এম
কালবুর্গি ধর্মীয় কট্টরপন্থা এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অনেকবার আওয়াজ তোলায়
তিনি বিভিন্ন হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনের টার্গেট হয়েছিলেন। তিনি মূর্তিপুজোর
বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করায় মৌলবাদীরা তার তীব্র বিরোধিতা করে।
উগ্র হিন্দুত্বের সমালোচনা করায় গেরুয়া
শিবিরের টার্গেটে পরিণত হন মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক কে এস
ভগবান। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিশ্বেশ্বর তীর্থ স্বামীকে হিন্দু শাস্ত্র
নিয়ে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ জানানোয় হুমকির মুখে পড়েছেন তিনি।
এর আগে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায়
২০১৩ সালে নরেন্দ্র দাভোলকরকে হত্যা করা হয়। এক্ষেত্রেও সন্দেহ করা হয়
ডানপন্থী হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন এই হত্যার পেছনে রয়েছে। যদিও পুলিশ আজও
হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে না পারায় কালবুর্গি হত্যার ঘটনায় জড়িত খুনিরা
ধরা পড়বে কি না তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের কোনো কোনো মিডিয়ায়
মুক্তমনা সমাজের মন্তব্য হিসেবে কালবুর্গি হত্যার ঘটনাকে বাংলাদেশের ব্লগার
হত্যার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।#
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন