আমেরিকায় গাফফার চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পণ্ড, গোপনে ক্রেস্ট প্রদান - rangpur news

Breaking

Breaking News

rangpur news

This is news blog site.Here have important online newspaper.if you Concert:MD.Gulam azam sarkar. E-mail:gulamazam@gmail.com Mobil:01735632338

Windows

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০১৫

আমেরিকায় গাফফার চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পণ্ড, গোপনে ক্রেস্ট প্রদান

আমেরিকায় গাফফার চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পণ্ড, গোপনে ক্রেস্ট প্রদান

 (রেডিও তেহরান): ইসলাম নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেয়ায় বিভিন্ন মহলের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে আমেরিকার জ্যাকসন হাইটসে কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় তার এই সংবর্ধনার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ১২ টার পর সভা বাতিলের ঘোষণা দেয় জুইস সেন্টার কর্তৃপক্ষ।


গত ৩ জুলাই জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় ‘আল্লাহর ৯৯ নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিল’ বলে ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য করেন প্রবীণ সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী। এছাড়া, তিনি হিজাব, দাড়ি-টুপি নিয়েও কটূক্তি করেছেন। তার এসব বক্তব্য ঘিরে পুরো নিউইয়র্কসহ দেশে-বিদেশে তোলপাড় শুরু হয়। তীব্র প্রতিবাদের মুখে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবারের ব্যানারে ৫ জুলাইয়ের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। ওই দিন জ্যামাইকা থেকে ব্রুকলিনে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি আবদুল গাফফার চৌধুরীকে। সেখানেও প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় আয়োজকদের। তার ওই বক্তব্যকে ঘিরে শুক্রবারও সিটির বিভিন্ন মসজিদে মসজিদের খুতবায় নিন্দা জানানো হয়। এছাড়া ৮ জুলাই সোমবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে আলেম-ওলামারা গাফফার চৌধুরীকে প্রকাশ্যে তওবা পূর্ব ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে মসজিদে বিশেষ খুতবা পাঠের হুঁশিয়ারিও দেন আলেম সমাজ।

৫ জুলাই ব্রুকলিনের সভা পণ্ড হয়ে যাবার পর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ফের সভার করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সম্মিলিত নাগরিক শক্তি’ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটি পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে গাফফার চৌধুরীকে সংবর্ধনার অনুষ্ঠান ঘোষণা করে। ১০ জুলাই (শুক্রবার) নিউইয়র্কের টাইম টেলিভিশনের রাত ১০টার সংবাদে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে আবদুল গাফফার চৌধুরী তার ৩ জুলাইয়ের বক্তব্যের সাফাই গাইতে গিয়ে আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর যে ৯৯ নাম, এগুলো কাবা শরীফের দেবদেবীর নাম ছিল। একটি বড় প্রমাণ হলো যে, আমাদের রসুল্লাহর (স.) বাবার নাম ছিল আবদুল্লাহ। আল্লাহ শব্দটি এসেছে কাবা শরীফের প্রধান যে মূর্তিটি ছিল তার নাম ইলাত, কেউ বলে ইলাহ, কেউ বলে ইলাত থেকে এসেছে।' একেরপর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও ১২ জুলাইয়ের সংবর্ধনা সভার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকেই বাঙালি কমিউনিটিতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটস্থ বাংলাদেশী মসজিদগুলো থেকে তারাবিহ নামাজ শেষে বেরিয়ে বেশীর ভাগ মুসল্লিরাই গাফফার চৌধুরীকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তা প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। 

সংবর্ধনার খবর সংগ্রহ নিয়ে নিউইয়র্কভিত্তিক গণমাধ্যমগুলো ছিল সোচ্চার। কিন্তু রোববার বেলা ১২ টার পর খবর আসে জুইস সেন্টারে কলামিস্ট গাফফার চৌধুরীর নাগরিক সংবর্ধনা হচ্ছে না। এ নিয়ে নিউইয়র্কের চ্যানেলগুলোর টিকারে ব্রেকিং নিউজ দেয়া হয়- ‘গাফফার চৌধুরীর জুইস সেন্টারের সভা বাতিল করা হয়েছে।’

এরপর ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সম্মিলিত নাগরিক শক্তি’র পক্ষে সীতাংশু গুহ তার এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলের ফেসবুকে বার্তা পাঠান যে, গাফফার চৌধুরীকে নিয়ে তারা নিউ ইয়র্কের ‘জন এফ কেনেডি’ বিমান বন্দরের কাছে ক্রাউন প্লাজা হোটেলে অনুষ্ঠান আয়োজন করছেন। এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাও ছুটে যান সেখানে। গিয়ে দেখা যায়- বেলা ৩টার পর থেকে ওই হোটেলের বলরুমে মিলনায়তনে গুটি কয়েকজন মিলে গাফফার চৌধুরীকে ফুলের তোড়া ও ক্রেস্ট দিচ্ছেন। এসময়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ছবি তুলতে গেলে তাদের বাধা দেয় হয়। দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে লিফটে নীচে নামিয়ে আনা হয় সাংবাদিক ও কলামিস্ট গাফফার চৌধুরীকে।

এসময়ে আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম সীতাংশু গুহের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান; কেন গাফফার চৌধুরীকে গোপনে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। অতি গোপনে ও গুটিকয়েক লোককে নিয়ে এই অনুষ্ঠান তথা বৈঠকের যৌক্তিকতা কি? জবাবে সাংবাদিকদের সীতাংশু গুহ বলেন, ‘আপনারা জানেন; গাফফার চৌধুরী হচ্ছেন একজন লিজেন্ডার। ৩ জুলাই তার বক্তব্যকে ঘিরে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দেশের ভাষা আন্দোলনের কালজয়ী গানের রুপকারকে এভাবে অপমান করবে তা আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিবেকবানরা মানতে পারছি না। ওনাকে গেল দুটি সভাও করতেও দেয়া হয় নি। তাই আমরা একটি নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করি।’

কিন্তু আপনারা তাও তো করতে পারলেন না- সাংবাদিকদের এমন বক্তব্যের জবাবে সীতাংশু গুহ বলেন, ‘দেখুন আমরা আজকে জুইস সেন্টারের অনুষ্ঠানটি করতে পারলাম না এটা ঠিক। শুনেছি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না ঘটে তাই আমরা ওনাকে এখানে নিয়ে আসি। অবশেষে উই ডিড ইট (আমরা পেরেছি)। আমাদের জয় হয়েছে।’

পুলিশের অনুমতি নেয়া এবং বুকিং দিয়েও জুইস সেন্টার কর্তৃপক্ষ সভা করতে অপারগতা প্রকাশের কারণ সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, ‘শুক্রবার থেকেই জুইস সেন্টার কর্তৃপক্ষের বরাবরে ফোন ও লিখিত আবদেন করে আসছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। এছাড়াও ৩ জুলাই গাফফার চৌধুরীর ইসরাইল বিরোধী বক্তব্যও তুলে ধরা হয় তাদের কাছে। আর তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে তারা সভাটি বাতিল করে দেয় হয় বলে জানান অনেকে।’

জানা গেছে, বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে অনেক দুরে সিটির জেএফকে এয়ারপোর্টের কাছে ক্রাউন প্লাজা হোটেল’র বল রুমে ওই গোপন সংবর্ধনায় সভায় আব্দুল গাফফার চৌধুরীর হাতে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয় যা পরে ফেসবুকেও আপলোড করা হয়। গাফফার চৌধুরীর হাতে ওই ক্রেস্ট তুলে দেন, প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ।

এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির দাবিদারদের জুইস সেন্টারে সংবর্ধনা সভার করার ওই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠে পুরো নিউইয়র্কবাসী। আলোচনা আর সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে কমিউনিটিতে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে বিষয়টিকে ঘিরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষে গাফফার চৌধুরীকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও এর সহযোগি সংগঠনের পক্ষেও জুইস সেন্টারে গাফফার চৌধুরীর সভাস্থলে সকল ধর্মপ্রাণ প্রবাসী ও মুসলমানদের ছুটে আসার আহ্বান জানান। এরই ধারাবাহিকতায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর থেকেই গাফফার চৌধুরীর জুইস সেন্টারের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি ও এর সহযোগি সংগঠনের নেতারা। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর নেতৃত্বে এতে অংশ নেন; প্রবাসী বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। এসময়ে তারা গাফফার চৌধুরী বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন।#

রেডিও তেহরান/এআর/১৪

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Responsive Ads Here