আজ ১লা এপ্রিল এ েিদন স্পেনে মসজিদে ঢুকিয়ে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং পুড়িয়ে মারা হয় হাজার হাজার মুসলিম কে
প্রচলিত আছে
:
ত্রিশ এপ্রিল ৭১১ খ্রিস্টাব্দ মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদ জাবাল-আত-তারিক (জিব্রাল্টার) বন্দরে অবতরণ করেন এবং ক্রমান্বয়ে স্পেন দখল করেন। এরপর ৭১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ৭৮০ বছর পর্যন্ত মুসলিমরা স্পেন শাসন করে। কিন্তু শেষদিকে অর্থাৎ ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে মুসলিম শাসকদের নৈতিক অধঃপতন শুরু হলে স্পেনের ভাগ্যাকাশেও দেখা দেয় দুর্যোগের ঘনঘটা। আশপাশের খ্রিস্টান রাজারা ক্রমাগত আক্রমণ করতে থাকে স্পেনের মুসলিম রাজ্যসমূহে। ফলশ্রুতিতে ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দের ২ জানুয়ারি গ্রানাডার তৎকালীন মুসলিম শাসক আবু আব্দুল্লাহ (পাশ্চাত্যে তাকে ববডিল নামে ডাকা হয়) রাজা ফার্ডিন্যান্ড এবং রানি ইসাবেলার সঙ্গে এক চুক্তির মাধ্যমে পরাজয় স্বীকার করে নেন।
গ্রানাডার সর্বশেষ মুরিস শাসক (গড়ড়ৎংরয শরহম) ছিলেন নাসরিদ বংশীয় আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ (অনঁ অনফঁষষধয গঁযধসসধফ ঢওও)। বিলাস-ব্যসনে মত্ত ও উচ্ছন্নে যাওয়া আবু আব্দুল্লাহ ছিলেন গ্রানাডার তাইফার সুলতান আবুল হাসানের ছেলে। ছেলের ষড়যন্ত্র ও কুচক্রের কারণে বাবা আবুল হাসান পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। আবু আব্দুল্লাহকে বানানো হয় নামকাওয়াস্তে সুলতান। এই পুতুল সুলতানের কাছেও ১৪৮৯ সালে ফার্ডিন্যান্ড ও ইসাবেলার কাছ থেকে চূড়ান্তরূপে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণের নির্দেশনা আসে এবং স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় অস্বীকারের ভয়াবহ পরিণতির কথাও।
“ডিসেম্বর শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। দুর্ভি চরম আকার ধারণ করেছে। আর ববডিল (আবু আব্দুল্লাহ) গ্রানাডা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিলেন ২ জানুয়ারি।” এখানে উল্লেখ্য যে, খ্রিস্টান বাহিনী কয়েক মাস ধরে গ্রানাডার চারপাশে অবস্থান নিয়ে এ নগরীকে অবরোধ করে রেখেছিলো। ফলে সেখানে ভয়াবহ দুর্ভি দেখা দেয়।
স্পেন থেকে মুসলমানদেরকে ১৪৯২ সালেই বের করে দেয়া হয়নি। শাসক আবু আব্দুল্লাহর সাথে ইসাবেলা আর ফার্ডিন্যান্ডের যে চুক্তি হয়েছিল তাতে গ্রানাডার মুসলমানদের পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীকালে মুসলমানদের হয় ক্যাথলিক নয়তো স্পেন ছাড়ার পছন্দ দেয়া হয়েছিলো। যারা স্পেন ছাড়েনি তারা ক্যাথলিক ছদ্মবেশে মুসলিমই থেকে যান। খ্রিস্টানরাও জানতো তারা মুসলমান। আর এদেরকেই তারা মরিস্কো উপাধি দেয়। মরিস্কোদের পুরোপুরি স্পেন থেকে বহিষ্কার করা হয় ১৬০৯ থেকে ১৬১৪ সালের মধ্যে। এটাও করা হয়েছিলো; রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা হারানো মরিস্কোদের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিদ্রোহ করার পর।
১৪৯২ সালের ২ জানুয়ারি তারিখটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রচলিত আছে যে, মুসলমানদের সঙ্গে চুক্তি করার নামে খ্রিস্টান বাহিনী ষড়যন্ত্র করে রাতের আঁধারে গ্রানাডায় ঢুকে পড়ে এবং শহরবাসীকে নিরাপত্তার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মসজিদে ঢুকিয়ে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পুড়িয়ে মারা হয় হাজার হাজার মুসলিম শহরবাসীকে। আর এই তারিখটি ছিল এপ্রিলের ১ তারিখ। যেহেতু মুসলমানদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বোকা বানিয়ে অগ্নিদগ্ধ করে মারা হয় তাই খ্রিস্টানরা বলতে থাকে ওরা এপ্রিলের বোকা- ‘এপ্রিল ফুলস’ (অঢ়ৎরষ ঋড়ড়ষং)। সেখান থেকেই এপ্রিল ফুল বিষয়টি এসেছে এবং মুসলমানদের মাঝে তা আবেগতাড়িত বেদনায় পালিত হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন